রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সম্পর্কের কারণে ভারতীয় আমদানির ওপর আগেই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং জরিমানা আরোপের কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এইভাবে পরোক্ষে রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করছিল হোয়াইট হাউস। এবার সরাসরি রাশিয়ার দিয়ে পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন তাক করে রাখার নির্দেশ দিলেন শান্তির দূত ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতিতে নিজের কৃতিত্বের কথা ফলাও করে জাহির করেছিলেন। যদিও ভারতের তরফ থেকে সেই দাবি কার্যত খারিজ করে দেওয়া হয়। এর পরেই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়। এমনকী ট্রাম্প নিজেও যে শান্তি নোবেল পেতে আগ্রহী তা তার আচরণে প্রকাশ পেতে থাকে। যেকোনও দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে ট্রাম্প নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে দাবি করতে থাকেন, সে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধই হোক, কিংবা ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষ। স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার তেল চুক্তিকে ভালোভাবে নেয়নি হোয়াইট হাউস। কয়েকদিন আগে ভারতের উপর বাণিজ্য শুল্ক ২৫ শতাংশ করার পর তিনি সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে লিখেছিলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে ভারত কী করল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। তারা একসঙ্গে তাদের মৃত অর্থনীতি ধ্বংস করতে পারে। আমরা ভারতের সঙ্গে খুব কম ব্যবসা করি, তাদের শুল্ক অনেক বেশি, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। একইভাবে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রও একসঙ্গে প্রায় কোনও ব্যবসা করে না। আমরা বিষয়টিকে সেভাবেই রাখব। রাশিয়ার ব্যর্থ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মেদভেদেভকে বলি, তিনি কী বলছেন, সেদিকে যেন তিনি নজর দেন। ও খুব বিপজ্জনক এলাকায় ঢুকে পড়ছে! তিনি মনে করেন যে তিনি এখনও রুশ রাষ্ট্রপতি।”
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ তাঁর এক্স-হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার সঙ্গে “আল্টিমেটাম গেম’ খেলছেন এবং এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধে আকার নিতে পারে।” এর পরেই ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ৫০ দিন থেকে কমিয়ে ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। এর মধ্যে শান্তিচুক্তি না করলে রাশিয়ার পরিণতিও যে ভয়ঙ্কর হবে, সেকথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প তাঁর অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট করে লিখেছেন, “রাশিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি দিমিত্রি মেদভেদেভের অত্যন্ত উস্কানিমূলক বক্তব্যের ভিত্তিতে আমি ঠিক জায়গা মতো দুটো পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছি, যাতে এই বোকা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য আর না বাড়ে। শব্দ খুব গুরুত্বপূর্ণ, এবং প্রায়শই এর থেকে অনিচ্ছাকৃত পরিণতি হতে পারে। আশা করি এখানে এমনটা হবে না। এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!” ট্রাম্পের এই প্রচ্ছন্ন হুমকিকে রাশিয়া এখন কীভাবে নেয়, সেটাই দেখার।







