‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেই চলছে বেআইনি কাজ’—দেবাশীষ ভট্টাচার্য

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযের বাড়ি সামনেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে ট্রাম লাইনে পিচ ফেলার কাজ। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার সামনে এই মর্মে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, হাই কোর্টের পরিষ্কার নির্দেশ ছিল যে শহরে কোথাও কোনও জায়গায় ট্রাম লাইনে পিচ ফেলা যাবে না। তার পরেও আদালত অবমাননা করা হচ্ছে খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে থাকা ট্রাম লাইনের উপরে। আবার এই পিচ ফেলার দায় না নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা, না কলকাতা পুলিশ। পুরসভার তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। অন্যদিকে পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তারাও বলতে পারছে না যে কোন সংস্থা এবং কার নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির সামনে ট্রাম লাইনে পিচ ফেলা হল। অথচ রাস্তার কাজ কলকাতা পুরসভার সড়ক বিভাগ ছাড়া কেউ করতে পারে না। যেকোনও রাস্তার কাজের বরাত তারাই দিয়ে থাকে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সামনেই আইনের তোয়াক্কা না করেই চলছে এই বেআইনি কাজ— বলে অভিযোগ করলেন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই যাতে কলকাতার রাস্তায় আর ট্রাম না চলে, তার জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু ট্রামের মতো কলকাতার ঐতিহ্যবাহী একটা গণ-পরিবহনকে ধ্বংব করে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে। এর ফলে কলকাতা শহরের বয়স্ক মানুষজন সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়বে। তারা বাধ্য হবে অটো-রিক্সাতে উঠতে। আর যাদের টাকা আছে তারা ট্যাক্সি বা ওলা-উবের ধরবে। সেই দিকেই নিয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “একই ঘটনা চিতপুরেও ঘটেছে। সেখানেও ট্রাম লাইনের উপরে পিচ ফেলা হয়েছে। তার জন্য চিৎপুর থানায় অভিযোগ জানালে প্রথম টালবাহানা করার পর এফআইআর না নিয়ে শুধু অভিযোগ জমা নেওয়া হয়েছে।” ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ আসলে ট্রাম ডিপো জমি মাফিয়াদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে। অথচ প্রবীণ নাগরিক থেকে শিশু-মহিলাদের জন্য ট্রামের চেয়ে সস্তা এবং আরামদায়ক যাত্রা আরও কোনও কিছুতে পাওয়া যায় না। তার পরেও ট্রাম তুলে দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন, যেমন– অটো, উবের এবং ওলাদের মত বড় সংস্থাগুলিকে ইনকামের জায়গায় করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ঐতিহ্যবাহী ট্রামকে তুলে দেওয়ার সমস্ত চক্রান্ত চলছে বলে জানান সংগঠনের সদস্যরা। এদিন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে এসে কলকাতা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করেন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন।