দিনে রাতে হুমকির মুখে মহিলা বিএলও (BLO)। চরম আতঙ্কে নিরাপত্তাহীনতায় স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না তিনি। অথচ তাঁর স্বামীর ওপর অকথ্য অত্যাচারের পরেও অভিযুক্ত তৃণমূল আশ্রিত জমি মাফিয়াকে গ্রেফতার না করে পুলিশের তরফ থেকে সালিশি করে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার প্রস্তাব বিএলও(BLO)-কে। সংবাদমাধ্যমের সামনে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ওই মহিলা বিএলও(BLO)। অভিযোগ জানালেন বিডিওর(BDO) কাছেও। যেহেতু তিনি পার্শ্বশিক্ষক, তাই স্কুল ইন্সপেক্টরকেও অভিযোগ জানালেন তিনি। পাশে দাঁড়িয়ে ডেপুটেশন দিলেন তাঁর সহকর্মী সহ এলাকার শিক্ষকরাও। যাঁদের অনেকেই আবার বিএলও(BLO)-র কাজে নিযুক্ত।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটিওন গ্রামের বিএলও নিবেদিতা মন্ডলের স্বামী কমল মন্ডলের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায় এলাকার তৃণমূল আশ্রিত জমি মাফিয়া কসিমুদ্দিন। অভিযোগ, তার কথামত কাজ না করায় এমন হামলা চালায় কসিমুদ্দিন। পুলিশের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালেও পুলিশ কসিমুদ্দিনকে গ্রেফতার করেনি। উলটে সালিশি করে মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাব দেওয়া হয় ওই বিএলও-কে। পাশাপাশি দিনরাত কসিমুদ্দিন বিএলওকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এরপরেই হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও এবং হরিশ্চন্দ্রপুর দক্ষিণ চক্রের বিদ্যালয়ের পরিদর্শকের কাছে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং অবিলম্বে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও ওই শিক্ষিকার নিরাপত্তা চেয়ে দাবিপত্র পেশ করলেন হরিশ্চন্দ্রপুর দক্ষিণ চক্রের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহ শিক্ষকরা। অবিলম্বে ওই অভিযুক্ত নেতাকে গ্রেফতার করা না হলে শিক্ষক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমনকি, এসআইআর-এর কাজ থেকে তারা বিরত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন বিএলও নিবেদিতা মন্ডল। তিনি জানান অভিযুক্ত ওই কসিমুদ্দিন ঘটনার পর থেকেই প্রতি রাতে বাড়ি বয়ে এসে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া এই ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন তরফ থেকে ঘটনাটি বসে মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। যদিও আজ সকালে খবরের জেরে এবং শিক্ষক সম্প্রদায়ের চাপের কাছে নতিস্বীকার করে পুলিশ অবশেষে এফআইআর করতে বাধ্য হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, “আমরা এখনও আতঙ্কে রয়েছি, দুষ্কৃতীরা বহাল তবিয়তে এলাকাতে ঘোরাঘুরি করছে। আমরা বাড়ি থেকে রাত্রিবেলা বেরোতে পারছি না। ও গ্রেপ্তার না হলে আমরা নির্ভয়ে থাকতে পারছি না।”
এদিকে গোটা ঘটনাকে সামনে রেখে ফের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি এলাকার বিভিন্ন যে সমস্ত অপরাধে শাসক দলসহ বড় বড় নেতা-মাথা জড়িয়ে থাকছে সেগুলো মিটিয়ে দিতে পুলিশি তৎপর হয়ে উঠছে। সালিশি করে মিটমাট করে দিতে বলছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের পুলিশের উপর থেকে আস্থা উঠে যাচ্ছে। যদিও এই ঘটনায় তৃণমূলের দাবি, অপরাধী যে দলের হোক না কেন পুলিশ প্রশাসনকে বলা হবে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।







