গত বুধবার ৫৬তম জিএসটি (GST) কাউন্সিলের বৈঠক ভাতের জিএসটি রেটে বড়সড় বদল আনা হয়েছে। জিএসটি কাঠামোকে আগের চেয়ে অনেক সরলীকরণ করে মাত্র দুটি স্ল্যাবে সাজানো হয়েছে। ৫, ১২, ১৮ ও ২৮ শতাংশের বদলে শুধুমাত্র ৫ ও ১৮ শতাংশ জিএসটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে নিঃসন্দেহেই উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষ। নতুন এই জিএসটি রেটের ফলে এক দিকে যেমন দাম কমবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের, পাশাপাশি জীবনদায়ী ওষুধ, চিকিৎসা ও কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত সরঞ্জামের দাম কমায় স্বস্তিতে মধ্যবিত্ত জনগণ। এমনকী হেলথ ও লাইফ ইন্সিওরেন্স, দুধ, পনির, রুটির মতো অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যকে জিএসটির আওতার বাইরে রেখেছে সরকার। আর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের এই জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্ত যে তৃণমূলের নিরন্তর কেন্দ্রকে চাপেরই ফসল, হাবে ভাবে সেটাই বোঝাতে চাইল রাজ্য সরকার।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের নতুন জিএসটি মডেলকে ‘সাধারণ মানুষের জয়’ বলে ঘোষণা করে তৃণমূলের তরফ থেকে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। পাশাপাশি ওই পোস্টে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সামনে আনা হয়েছে বেশ কিছু পুরনো টিঠি। যেখানে দেখা যাচ্ছে ২০২৪ সালের ২ আগস্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে চিঠিগুলি লিখেছিলেন। সেই চিঠিতে স্বাস্থ্যবিমা ও জীবন বিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটিকে ‘গণবিরোধী’ বলে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পোস্টে সেই চিঠির উল্লেখ করে যে তৃণমূল কংগ্রেস এই নতুন জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্তের কৃতিত্ব নিজেদের দিকে টানতে চাইছে তা একপ্রকার পরিষ্কার। কেননা বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই নির্বাচনের আগে এই নতুন জিএসটি রেটকে যাতে কোনও ভাবেই বিজেপি হাতিয়ার করতে না পারে তার আগেই সাধারণ মানুষের কাছে এই তথ্য তুলে ধরে তৃণমূল আবারও প্রমাণ করে দিল নির্বাচনের আগে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দিতে তারা রাজি হয়। তাই এই পোস্টে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতি নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস ভবিষ্যতেও যে বিরুদ্ধে এভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাবে তারও বার্তা দেওয়ায় হয়েছে। যাতে করে সাধারণ মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছায় যে, বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে তৃণমূলই একমাত্র ভরসা। সব মিলিয়ে ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনের আগে জিএসটি নিয়ে নিজেদের কৃতিত্ব দাবি করাকে নির্বাচনী কৌশল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।







