মালদার গাজোল ব্লকের করকচ অঞ্চলের বিশ মাইল থেকে শহিল মোড় ও ভবানীপুর ভাঁটা মোড় পর্যন্ত রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বহুবার এলাকার বাসিন্দারা ব্লক প্রশাসন, গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি— এমনকি জনপ্রতিনিধিদেরকেও জানিয়েছেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হলে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। টোটো থেকে মোটরসাইকেল, এমনকি গাড়ি চলাচল করতে গিয়েও সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। গ্রামে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে অ্যাম্বুলেন্সও ঢুকতে পারে না রাস্তা খারাপের জন্য। গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি মত ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েত, প্রশাসনের উদ্যোগে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ঘটা করে এই রাস্তার তৈরির ক্ষেত্রে পথশ্রী প্রকল্পের বোর্ড লাগানো হয়। যেখানে ৪.১ কিলোমিটার রাস্তা হওয়ার কথা এবং তার জন্য বরাদ্দ হয় ২ কোটি ২ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩২১ টাকা।অথচ ২০২৫ সালের আগস্ট মাস শেষ হতে চলল এখনও রাস্তার কাজ শুরু হল না। রাস্তার কঙ্কালশার দশা রাজ্যের পথশ্রী প্রকল্প এখন হতশ্রীতে পরিণত হয়েছে বলেই দাবি গ্রামবাসীদের। তাদের আরও দাবি, অবিলম্বে এ রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে, না হলে আগামী দিনে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরও এই রাস্তা হল না, তাহলে এই টাকা কে আত্মসাৎ করল? কার পকেটে গেল? কেনই বা ঘটা করে রাস্তার উদ্বোধন করা হয়েছিল? রাস্তা অবিলম্বে যদি না হয় তাহলে আগামী দিনে গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। তৃণমূল পরিচালিত গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন জানান, “এই অভিযোগটি গ্রামবাসীরা বলেনি, কিছু বিজেপির লোক গ্রামবাসীদের উসকে এই কথা বলাচ্ছে। তবে এটা ঠিকই ওই রাস্তা এলাকার মানুষজনদের নিয়ে ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির লোকজন ঘটা করে উদ্বোধন করেছেন। ঠিকাদার সংস্থা পালিয়ে যায়নি এবং টাকাও কোথাও উধাও হয়ে যায়নি। এটা ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। বর্ষাকালের জন্য কাজটা আটকে আছে, পুজোর পরই এ কাজ শুরু হবে।”
তৃণমূলের মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছে বিজেপিও। গাজোল বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মণ জানান, “রাস্তার উদ্বোধনের নাম করে নারকেল ফাটিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে এই তৃণমূল সরকার। রাস্তার নামে টাকা বরাদ্দ হচ্ছে, অথচ সেই টাকা কোথায় গেল, কে চুরি করল? তৃণমূল সরকারকে আমরা এই টাকা চুরি করতে দেব না। জনগণের সাথে বিজেপিও এই আন্দোলনের পাশে রয়েছে।”
অন্যদিকে, এই বিষয়ে গাজোল ব্লকের বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস জানান, “আমার কাছে এই সমস্যার বিষয় নিয়ে গ্রামবাসীরা এসেছিল। তাদের কাছ থেকে অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তাদের অভিযোগ সঠিক। রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে খারাপ আছে। রাস্তাটি তৈরির জন্য পথশ্রী প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছিল। বিষয়টি প্রশাসন দেখছে।”







