আজ ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্য গোটা রাজ্যজুড়ে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে শাসক দলের। এমনকী কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে প্রতি বছরের মতো এবার সভা রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। সেই সমাবেশে যোগ দেবেন বিভিন্ন জেলার ছাত্র-যুবরা। এই আবহে বৃহস্পতিবার ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই একাধিক পরীক্ষার সূচি ছিল কলকাতা ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করা হয়েছিল পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তার পরেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকী রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফ থেকেও নাকি চিঠি দিয়ে আবেদন করা হয়েছিল পরীক্ষা পিছোনোর জন্য। কিন্তু এতে পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের মানসিকতার ওপর প্রভাব পড়তে পারে ভেবে নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ও।
কিন্তু হঠাৎই বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সকালে নোটিস দিয়ে জানানো হয়, অনিবার্য কারণের জন্য বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হল। কিন্তু এই স্থগিত হওয়া পরীক্ষা আবার কবে নেওয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা রাজনৈতিক মহলে। তবে কি চাপের মুখেই নতিস্বীকার করতে বাধ্য হল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি এ প্রশ্নও উঠছে, যেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পারল নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকতে, সেখানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কেন নিজেদের অবস্থান থেকে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়াল।
স্বাভাবিক ভাবেই এই বিষয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলোও। এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে পদক্ষেপ করেছে, সেটাই স্বাভাবিক ও সাধারণ পদক্ষেপ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস, এরকম তো সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই ছাত্র সংগঠনেরই প্রতিষ্ঠা দিবস আছে। তাতে যদি সব এরকম প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে ভয়ঙ্কর কথা।” পাশাপাশি রাজ্য শিক্ষা সেলের চাপের তত্ত্বকে সামনে এনে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “তৃণমূলের শিক্ষা সেলের কাছে যে সমস্ত উপাচার্যের মেরুদণ্ড বন্ধক রাখা রয়েছে, তাঁরা এমন সিদ্ধান্তই নেবেন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।” অবশ্য বিরোধীদের এসব অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের দাবি, ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অহেতুক জেদের কারণে যাতে ছাত্রদের ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই কথা ভেবে নিজের ভুল বুঝতে পেরেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের পুরনো অবস্থান থেকে সরে এসেছে।







