বুধবার লোকসভায় ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। গ্রেফতার হওয়া জনপ্রতিনিধিদের অপসারণের লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন বিল। নতুন সংশোধনী এই বিলের আওতা থেকে বাদ যাবেন না প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীরাও। এবার এই বিল নিয়েই কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই বিল নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণের মাঝে তিনি তুলে আনেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গও।
অভিষেক লিখেছেন, “বিরোধী দল এবং সমগ্র জাতির সমর্থন থাকা সত্ত্বেও, কেন্দ্রীয় সরকারের এখনও পিওকে পুনরুদ্ধার করার সাহস নেই। তারা কেবল ফাঁকা বক্তৃতা দেয়, কিন্তু যখন ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আমাদের সীমান্ত রক্ষা এবং আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে কাজ করার কথা আসে, তখন তারা কোনও প্রকৃত উদ্যোগ দেখায় না। কেন্দ্র জাতির সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। রাজ্য সরকারকে ফেলতে সবরকম চেষ্টা করছে কেন্দ্র।” এমনকী এ প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, “এই সরকার নিজেকে জনবিরোধী, কৃষকবিরোধী, গরিববিরোধী, তফসিলি জাতিবিরোধী, উপজাতিবিরোধী, ওবিসি-বিরোধী, ফেডারেলবিরোধী এবং সর্বোপরি ভারতবিরোধী হিসেবে প্রমাণ করেছে। দেশের সংবিধান বিক্রি করছে। দেশটাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাবছে।”
কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন এই বিল নিয়েই বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার ছলেবলে কৌশলে সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী নেতা ও মুখ্যমন্ত্রীদের জেলে ভরছে। তাঁদের কারো বিরুদ্ধেই এখনও কোনও অভিযোগ প্রমাণ হয়নি, কিন্তু তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে জেলে ছিলেন। নতুন এই বিল আনার ফলে নির্বাচিত অ-বিজেপি সরকার ভেঙে দেওয়া সহজ হবে। এটা আদতে বিজেপির একটা হাতিয়ার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টে সেই বিষয়ের উল্লেখ করেছেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন বিল পাশ হওয়ার ফলে কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কোনও সরকারে মুখ্যমন্ত্রী হন কিংবা যে কোনও মন্ত্রী— তিনি যদি কোনও গুরুতর অপরাধে গ্রেফতার হন, এবং টানা ৩০ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকেন, তাহলে এই আইন তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে জানাবেন। আর অন্যদিকে, রাজ্যের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল এই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। পাঁচ বছরের বেশি সাজা পেলে মন্ত্রিত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া যাবে এই আইনের ফলে। আর সে কারণেই এই নতুন সংশোধনী আইন নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা।







