বিহারে এসআইআর-এর ফলে ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে ৫৬ লক্ষ ভোটারের নাম। তার পরেই বাংলায় এসআইআর হওয়া নিয়ে তৈরি হয় জল্পনা। আর তারই পাল্টা আক্রমণে বিজেপিকে নিশানা করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন। তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, নির্বাচন কমিশনকে হাতিয়ার করে নিজেদের ভোট-ব্যাংক বাড়াতে চাইছে মোদী সরকার। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলেন তিনি। বঙ্গ রাজনীতির এই টানাপোড়েনের ফলে দ্বিধায় পড়ে যান সাধারণ মানুষ। রাজ্যে এসআইআর হবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েন তারা। অবশেষে সেই জল্পনাতেই শীলমোহর দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিহারের পর বাংলাতেও হবে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এই মর্মে গত ৮ আগস্ট! রাজ্যকে চিঠি পাঠায় জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে বিহারের এসআইআর নিয়ে শুনানি চলছে। সেখানে বুধবারের শুনানিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষের আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই কমিশন কীভাবে একক সিদ্ধান্তে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে? মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে তো এখনও এসআইআর শুরু হয়নি।” এরপর রাজ্যের আইনজীবী গোপাল শংকর নারায়ণ বলেন, “গত ৮ আগস্ট কমিশনের তরফে নোটিস পাঠানো হয়। রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই এসআইআর শুরু হতে পারে?” রাজ্যের আইনজীবীর আরও দাবি, “কমিশনে গণহারে বিহারে নাম বাদ দিয়েছে। ভোট দেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। কমিশন কীভাবে ছেলেখেলা করতে পারে?” এর পালটা বিচারপতি বাগচী বলেন, “এসআইআর প্রথমবার করা হচ্ছে। সে হিসাবে সমস্ত ভোটারকে বাদ দিতে পারে কমিশন। তবে কমিশন তা করেনি।” এরপর রাজ্যের আইনজীবী বাংলায় এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আর্জি জানান।
পশ্চিমবঙ্গেও যে এসআইআর হতে পারে তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা বাড়ছিল। এমনকী সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও ২০০২ সালের পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা আপলোড করা হয়েছে। বাংলায় বিএলও(BLO)-দেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেই ইস্যুতে খোদ সিইও বলেছিলেন, তাঁরা নিজেদের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে বাংলায় এসআইআর হচ্ছেই, এমনটা তিনি বলেননি। এমনকী এই বিষয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরও মুখ খুলতে চায়নি। তবে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ-এর কথা সেই জল্পনাই যেন উস্কে দিল।







