ভূতেরাও দিচ্ছে ভোট! ভোটার তালিকা হাতে পেতেই বুধবার মালদার গাজল বিধানসভা কেন্দ্রের সালাইডাঙ্গা অঞ্চলের ৯৮ নম্বর বুথের সিংহ পাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সেখানে ভোটার তালিকায় জ্বলজ্বল করছে মৃত ব্যক্তিদের নাম। শুধুমাত্র একটি বুথেই ২৫ জন মৃত ভোটারের হদিস মিলল মালদায়। তাদের কেউ চার বছর, কবছবার৫-৬ বছর কিংবা তারও বেশি আগে মারা গিয়েছে। তাও ভোটার তালিকা থেকে কাটা হয়নি তাদের নাম। শুধু কী তাই, সেইসব ভূতুড়ে ভোটারদের হয়ে ভোট পড়ছে বলেও অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এই ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় মালদায়। ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তিদের জীবিত রাখা হয়েছে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে যান মৃতদের পরিবারও। এই মৃত ভোটারদেরকেই ভোটবাক্সে কাজে লাগানো হয় বলে শুধু মৃতের পরিবারই নয়, অভিযোগ তুলছেন অন্যান্য গ্রামবাসীরাও। ওই এলাকারই বাসিন্দা শ্যামল মুর্মু জানান, তাঁর কাকা সুশান্ত মুর্মু মারা গিয়েছেন ৮ বছর আগে। তাও ভোটার তালিকা থেকে এখনও কাটা হয়নি তাঁর নাম। কী কারণে এতদিন ভোটার তালিকায় তাঁর কাকার নামকে জীবিত রাখা হয়েছে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন শ্যামল বাবু। অন্যদিকে আর এক গ্রামবাসী আনন্দ মাহাতোর বাবা মারা যান চার বছর আগে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এখনও ভোটার তালিকায় রয়ে গেছে তাঁর নাম। গ্রামবাসীরা অবলম্বে এই সমস্ত মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতরও। উত্তর মালদার বিজেপি নেতা মনোতোষ মণ্ডলের দাবি, “এই ভাবেই মৃত ভোটারদের জীবিত রেখে ভোট চুরি করে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় টিঁকে আছে। মৃত ভোটারদেরকে ভোটার লিস্টে জীবিত রেখেই তারা ভোট করাচ্ছে। এই কারণেই তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে না পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর(SIR) হোক। কেননা এসআইআর হলে তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাবে। এ তো শুধুমাত্র একটা বুথের ঘটনা। এ রকম সব বুথেই মৃত ভোটারদের জীবিত করে রেখে ভোটবাক্স ভরায় তৃণমূল।”
বিজেপির এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। তৃণমূল পরিচালিত গাজল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন জানান, “এই এলাকায় পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা, লোকসভা সবই তো বিজেপির। তাহলে তারা কেন এই ভোটার তালিকা সংশোধন করলেন না। যদি সত্যিই মৃত ভোটার লিস্টে থেকে থাকে, তাহলে কেন তাদের নাম কাটা গেল না। নির্বাচন কমিশন তো কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না কেন।” পাশাপাশি তিনি এও জানান, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে। মৃত ভোটার থাকলে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে তদন্ত করে দেখা হবে।







