আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু অভয়া কাণ্ডের ন্যায় বিচার নিয়ে দড়ি টানাটানি এখনও অব্যাহত। অভয়ার বাবা-মায়ের দাবি, তাঁদের মেয়ে ন্যায় বিচার পায়নি। প্রকৃত অপরাধী এখনও ধরা পড়েনি। এর জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পিত ভাবেই পুরো বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে চাইছেন। এক্ষেত্রে সরকারের উদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করছেন তাঁরা। সেকারণেই ৯ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দেন অভয়ার বাবা-মা। এবার অভয়ার মা-বাবার সুরেই সুর মেলালেন তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনিও মনে করেন, আরজি কর তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনে প্রকৃত অপরাধীরা ধরা পড়েনি। তাঁর বক্তব্য, “আমি আমার দিক থেকে বলতে পারি, এর কিন্তু সমাধান হতেই হবে। আমার মনে হয় না, দোষীরা এখনও সাজা পেয়েছে। আমার কেন, কারও মনে হয় না। সিবিআই চোখ বন্ধ করে আছে।”
পাশাপাশি নবান্ন অভিযানে গিয়ে অভয়ার মায়ের কপালে আঘাত লাগার প্রসঙ্গে দুঃখপ্রকাশ করে চিরঞ্জিৎ সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করে বলেছেন, “কে করেছে তা তো বোঝা যাচ্ছে না। যাঁরা নিয়ে গিয়েছিলেন ওঁদের, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া উচিত ছিল। বিজেপি ঘিরে ছিল ওঁদের, তারপরেও যদি উনি আহত হন তাহলে বুঝতে হবে সেই ঘেরাটা সঠিক হয়নি। তবে আমি খুব দুঃখিত, আমি মর্মাহত, যে ওঁর লেগেছে। একেবারেই উচিত ছিল না।”
যদিও চিরঞ্জিতের বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অভয়ার বাবা কিছুটা কটাক্ষের সুরেই বলেছেন যে, দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে চিরঞ্জিৎ এভাবে মন্তব্য করায় তাঁকে না আবার শাস্তির মুখে পড়তে হয়। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ, “গত ৯ তারিখ যেদিন আমার মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে, সেদিন কলকাতা পুলিশ, আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং তৃণমূল দল আমাদের ওপর যে অত্যাচার চালিয়েছিল, তার সমাধান যদি না হয়, আমরা এর বিচার পাব না। বিশ্বের সেরার সেরা তদন্ত কমিটিও যদি আসে, এর বিচার পাওয়া মুশকিল। কলকাতা পুলিশকে আগে সঠিকভাবে তথ্যপ্রমাণ দিতে হবে। আদালত চাইলেই সিবিআইকে দিয়ে সঠিক তদন্ত করাতে পারে। কিন্তু সেই আদালতেই রাজ্য সরকার আমাদের বিরোধিতা করছে, যাতে আমরা ন্যায় বিচার না পাই। এমনকী গত শনিবার নবান্ন অভিযানে আমাদের উপর অহেতুক পুলিশি আক্রমণ করে সরকার আরও একবার প্রমাণ করে দিল, এক বছর আগে আমরা যে তিমিরে ছিলাম সেখানেই আছি। সরকারকে তার অবস্থান থেকে টলাতে পারিনি।” যদিও তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে। তাঁর মতে এই কেসের দায়িত্ব তো সিবিআইয়ের হাতে আছে, তাহলে তারা কেন প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করতে পারছে না?







