সুমন গাঙ্গুলী: ৩৬৫ দিন। হ্যাঁ একবছর। অভয়া কান্ডের বছর ঘুরলেও মিললো না বিচার। রাত দখল থেকে শুরু করে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস ‘ এর স্লোগানে দখল হয়েছিল রাজপথ। বিচার আটকে ছিল রাজ্য পুলিশের হাতে সঞ্চয় রাই এর গ্রেফতারিতে। তবে কি রাজ্য পুলিশেই ভরসা? না সেদিন জাস্টিস এর স্লোগান দেওয়া আন্দোলনকারী থেকে শুরু করে অভয়ার পরিবার, কেউই ভরসা রাখতে পারেনি রাজ্য পুলিশের উপর। ভরসা ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আদালতের রায় ‘ ন্যায় বিচার ‘ এর দায়িত্ব বর্তায় সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিকেশনের হাতে। তারপর? তারপর কেটে গিয়েছে এক বছর, সঞ্জয় রাই ছাড়া আর কাউকে গ্রেফতার করে তদন্ত এগোতে পারেনি তারা। তবে রাজ্যের তরফে প্রথমদিন থেকে এই তদন্তে সিবিআই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, যেহেতু ঘটনার মাত্র ১২ দিনের মাথায় রাজ্য পুলিশই সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করে, তাই কার্যত রাজ্য পুলিশের সাফল্যকেই বারবার তুলে ধরা হচ্ছিল। আজ প্রায় ১ বছর। আমার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ন্যায় বিচারের আন্দোলন, ৯ আগষ্টকে সামনে রেখে আবার হয়তো রাত জাগবে রাজপথ, আবার হয়তো গিটার এর সুরে আর হাততালিতে স্লোগান উঠবে উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আর বিচার এর দাবীতে ঠিক এক বছরের মাথায় রাজ্যের বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে অভয়ার পরিবার। দাবী ন্যায় বিচারের। কিন্তু কে দেবে সেই বিচার? তদন্তের ভার এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। কিন্তু সত্যি কি বিচার হবে? না অন্তত তেমন আশা করছেন না অভয়ার পরিবার। শনিতে নবান্ন অভিযান, দিল্লী থেকে তাই বৃহস্পতি রাতেই ফিরে আসেন অভয়ার বাবা-মা। তবে যে ন্যায় বিচারের দাবিতে শনিবার রাজ্যের প্রধান সচিবালয় অভিযান করবেন ‘ উই ওয়ান্ট জাস্টিস ‘ স্লোগান দেওয়া সহ-নাগরিকেরা। সেই বিচার শুধু স্লোগানেই থেকে যাবে না তো? যে বুকভরা আশা নিয়ে দিল্লী গিয়েছিলেন অভয়া’র পরিবার, সিবিআই-এর ডিরেক্টর এর সঙ্গে দেখা করে রীতিমতো হতাশা নিয়ে ফিরলেন তাঁরা। ” ১৪০ কোটির দেশের মানুষ যাদের উপর ভরসা করেন, সেই সংস্থা যে কতোটা বোগাস, তা নিজের চোখে দেখলাম।” কার্যত সিবিআই এর ওপর ভরসা হারিয়ে আক্ষেপ, অভয়ার বাবার। ” ভাবতে পারছেন সিবিআই ডিরেক্টর নিজে মামলা ছেড়ে দেবেন, আমাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর ওদের কাছে নেই।
কে? কবে? কোথায়? ধর্ষণ করলো তার কোনো উত্তর নেই , এই অবস্থান মেনে নেওয়া যায় না।” হতাশ সন্তানহারা পিতার।
এই আন্দোলন চলাকালীন কলকাতা পুলিশ থেকে শুরু করে প্রশাসনকে বারেবারে শিরদাঁড়া উপহার দিতে দেখা গিয়েছিল। এবারও একইভাবে সেই শিরদাঁড়া দেওয়া হলো, খোদ সিবিআই ডিরেক্টকেই মেরুদন্ড তুলে যে দিলেন অভয়ার মা। তবে শিরদাঁড়া আছে বলে তা নিতে অস্বীকার করেন সিবিআই ডিরেক্টর। অভয়ার মায়ের বক্তব্য,” ওদের মেরুদন্ড নেই, থাকলে অজুহাত দিত না।”
শনিবার নবান্ন অভিযান হবে, আবার কিছু মানুষ বিচারের দাবী নিয়ে রাস্তায় নামবে, কিন্তু ন্যায় বিচার? একদিন হয়তো বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদতে কাঁদতে সময়ের সারণী বেয়ে হারিয়ে যাবে।







