এ যেন হিন্দি সিনেমাকেও হার মানায়। প্রেম আসলে যুগ যুগ ধরে ঘাত-প্রতিঘাতের হাত ধরে পূর্ণতা পায়। কিন্তু সব প্রেম কি তাই? এই হাইটেক যুগেও প্রেম এখনও কারো কারো কাছে অপরাধ। ঠিক যেমন এন্টালির পটারি রোডের ভোলানাথ করের। আর তাই রিভলভার নিয়ে সোজাসুজি হাজির মেয়ের প্রেমিকের বাড়ি।
কেন? কোন সাহসে মেয়ের সঙ্গে প্রেম? আর তাই মেয়ের প্রেমিককে খুন করতে প্রেমিকের বাড়িতে রিভলবার নিয়ে হাজির ‘ভিলেন’ বাবা। কিন্তু বিধি বাম। নিজের ছেলেকে বাঁচাতে মায়ের তীব্র চিৎকারে প্রায় একশো মিটার তাড়া করে গৃহবধূর ছেলের প্রেমিকার বাবাকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বুলেট-সহ গ্রেপ্তার করলেন পূর্ব কলকাতার ট্যাংরা থানার আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ভোলানাথ করের মেয়ের সঙ্গে কয়েক মাস আগে পরিচয় হয় ট্যাংরার শীল লেনের বাসিন্দা এক তরুণের। দু’জনের মধ্যে প্রেম জমে ওঠে। কিন্তু তা চাপা থাকেনি। মেয়ে প্রেম করছে, জানতে পেরেই প্রথমে বাবা চোটপাট করে মেয়ের উপর। বাড়িতে একপ্রস্থ কান্নাকাটির পর মেয়ের প্রেমিকের উপর যত রাগ গিয়ে পড়ে ‘ভিলেন বাবা’র। এলাকায় গুন্ডামির জন্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরির বদনাম ছিল ভোলানাথের। তাই মঙ্গলবার বেশি রাতে রিভলভারে বুলেট ভরে বাবা প্রতিশোধ তুলতে রওনা দেয় শীল লেনে। গভীর রাতে মেয়ের প্রেমিকের বাড়ির দরজায় ধাক্কা বাবার। পরিবারের লোকেরা দরজা খুলতেই ভিতরে ঢুকে পড়ে ওই ব্যক্তি।
পকেট থেকে রিভলভার বের করে বাড়ির গৃহবধূকে বলে, কোন সাহসে তাঁর ছেলে তার মেয়ের সঙ্গে প্রেম করছে? তাঁর ছেলেকে গুলি করে খুনের হুমকিও দেয় সে। তার সঙ্গে চলে গালিগালাজ। গোটা ঘটনায় হতভাগ ছেলে প্রথমে প্রতিবাদ করে ওঠেন। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু না হওয়ায় চিৎকার করতে শুরু করেন প্রেমিকের মা। আর সেই চিৎকারে কিছুটা ভয় পেয়ে মেয়ের প্রেমিকের বাড়ি থেকে অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে যায় ওই ব্যক্তিটি। চিৎকার করতে করতেই ভোলানাথকে তাড়া করেন ওই গৃহবধূ। কাছেই গাড়ি নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন ট্যাংরা থানার আধিকারিকরা। মহিলাকে ওই ব্যক্তির পিছনে দৌড়তে দেখে পুলিশ তাকে তাড়া করে। অন্তত ১০০ মিটার তাড়া করে ভোলানাথকে পুলিশ ধরে ফেলে। তাকে জেরা করে কোথা থেকে সে অস্ত্র পেল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।







