দিনদুয়েক আগেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটা ভিডিও পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত মালদার গাজলের বাসিন্দা দিল্লিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যাওয়া এক মা ও তার সন্তানকে নির্যাতনের প্রতিবাদ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পরবর্তীতে রীতিমতো তথ্য-প্রমাণ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোষ্ট করা এই ভিডিওটি ফেক বলে দাবি করে দিল্লি পুলিশ। বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর করা অভিযোগ খারিজ করে দেয় দিল্লি পুলিশ।
যা নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে টানাপোড়েন শুরু হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া এই ভিডিওর বিরুদ্ধে দিল্লি সাইবার ক্রাইম থানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। তবে এই বিতর্কের মধ্যেই বুধবার তৃণমূল ভবনে কুণাল ঘোষ এবং ফিরাদ হাকিমকে পাশে বসিয়ে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে তার উপরে নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরেন সাজনু পারভিন। আদতে মালদার চাঁচলের বাসিন্দা সাজনু পারভিন, তাঁর স্বামী মোক্তার খান ও সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সপরিবারে থাকতেন দিল্লিতে। মহিলার দাবি, নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে চারজন তাঁর বাড়িতে আসেন এবং তাঁদের আধার কার্ড দেখতে চান। অভিযোগ, আধার কার্ড দেখানো সত্ত্বেও তাদের বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হয়। এবং এলাকা না ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, দ্বিতীয়বার ফের ২ জন মহিলাকে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন। সেই মহিলারাই সাজনু ও তাঁর সন্তানকে এক জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে তার উপর অত্যাচার চালানো হয় বলে দাবি করে সাজনু বলেন, “আমাকে বাংলাদেশি বলা হয়। আমি বারবার বলি, আমি মালদহের বাসিন্দা। এরপর ওরা স্বামীকে ডাকতে বলে। শুরু হয় বেধড়ক মার। প্রথমে জয় শ্রীরাম বললে ছেড়ে দেওয়ার কথা ওরা বলে। তবে আমি তা বলতে রাজী না হওয়ায় চড়-থাপ্পড় মারা হয়। পেটে লাথি মেরে আমার কাছ থেকে ছেলেকেও কেড়ে নেওয়া হয়।” এখানেই শেষ নয়, নির্যাতিতার দাবি, মারধর করা হয় তার সন্তানকেও। তার কান থেকে রক্ত বেরতে শুরু করে। এরপর ২৫ হাজার টাকাও নাকি দাবি করা হয়। তারপর ? সাজনুর দাবি, “কোনওক্রমে স্বামীকে খবর দিই। এরপর শাশুড়ি এসে ওদের টাকা দিতে গেলেও রেহাই মেলেনি।” অভিযোগ, এর পর সবাইকে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। এমনকী দিল্লি পুলিশ ‘পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা মানেই বাংলাদেশি।’ বলেও মন্তব্য করে। কেড়ে নেওয়া হয় ফোন। একাধিক জায়গায় সই করিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে শেষপর্যন্ত তৃণমূলের সহযোগিতায় ঘরে ফিরতে পেরে স্বস্তিতে সাজনুরা।







