চলতি বছরের ২২শে এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন ২৬ জন পর্যটক। এই ঘটনা নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মালদা মানিকচকের তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন—”টেররিস্টরা কখনও টুরিস্টদের মারে না, বরং স্বাগত জানায়। তাহলে মারল কারা?” বিজেপিকে নিশানা করে সাবিত্রী মিত্রের দাবি, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের এক গভীর ষড়যন্ত্র। ক্ষমতায় টিঁকে থাকার জন্য মোদী সরকার পুলওয়ামা থেকে পাহেলগাঁও, এভাবে একের পর এক ঘটনাকে সামনে রেখে দেশপ্রেমের জিগির তুলে ভোট-ব্যাংক ভরিয়েছে। এগুলো পুরোটাই কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরানোর কৌশল বলেই অভিযোগ করেন সাবিত্রী মিত্র। পাশাপাশি তৃণমূলের ভাষা-আন্দোলনের মঞ্চ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে বিজেপি সরকার যে কতটা নিষ্ঠুর তার উদাহরণ টানতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “করোনার সময়ও কেন্দ্রীয় সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে ছিল না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফেরানোর উদ্যোগ নিলে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে পুলিশ তাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে। আর এখন পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা বলে তাদের উপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করা। এর বিরুদ্ধে আমাদের নেত্রী সরব হয়েছেন। আমাদেরও এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
পাশাপাশি এদিনের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করেই তীব্র আক্রমণ করেন সাবিত্রী মিত্র। তাঁর দাবি, একসময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায় যারা নেতা হয়েছে, আজ তারাই ‘হিন্দু বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছে। এদের না আছে হিন্দুদের কোনও ধর্মশিক্ষা। এরা জানেও না কোথা থেকে সনাতন ধর্মের উদ্ভব। হিন্দুদের একাংশকে স্রেফ বোকা বানিয়ে রামের ছবি দেখিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সাবিত্রী মিত্র। তাঁর মতে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের মতো বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকাটাই বাংলার সংস্কৃতি। বিজেপি সেই সংস্কৃতিকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেই অভিযোগ সাবিত্রীর।
অন্যদিকে সাবিত্রী মিত্রের বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর বক্তব্য, “সন্ত্রাসী, বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের প্রশ্রয় দেওয়াই তৃণমূল কংগ্রেসের থিওরি। এরাই তো তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পদ। এদের ভোটেই তৃণমূল কংগ্রেস আজ ক্ষমতায়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার যখন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় তখন সবার আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের গায়ে লাগে।” এমনকী তাঁর স্পষ্ট দাবি, সাবিত্রী মিত্রের কাছ থেকে বাংলার মানুষ হিন্দু শিক্ষার ক্লাস নেবে না। যাদের নিজেদের দল একটি বিশেষ ধর্মীয় দলকে প্রশ্রয় দেয়, হিন্দুদের উপর অত্যাচারে নীরব থাকে, তারা কী হিন্দুত্ব শেখাবেন বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু।







