সীতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক: জুলাই ৩৬ কোনও বিপ্লব ছিল না, এটি ছিল একটি ষড়যন্ত্র। ড. ইউনূস সরকারের কোনও আইনগত বৈধতা নেই, এটি অবৈধ সরকার। গোপালগঞ্জ ঘটনার পর ড. ইউনূসের পদত্যাগ করা উচিত, তার হাত রক্তে রঞ্জিত। ৮ আগস্টের পর সকল হত্যাকাণ্ডের জন্যে বাংলাদেশে ড. ইউনূসের বিচার হবে তা প্রায় নিশ্চিত। মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে ড. ইউনূস রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন। গত এক বছরে ড. ইউনূস সরকারের কোনও অর্জন নেই, তবে ‘তুমি কে, আমি কে, জঙ্গি, জঙ্গি’–ইউনূস জঙ্গিদের নেতা এবং তিনি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করেছেন, এটি তাঁর অর্জন। মব ভায়োলেন্স ইউনূস সরকারের একমাত্র পন্থা, ড. ইউনূস সেটিকে আর্মি ভায়োলেন্স-এ পরিণত করেছেন। দেশের সেনাবাহিনী-নৌবাহিনী এখন গোপালগঞ্জে নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। বুট চাপা দিয়ে মানুষ হত্যা, লাশকে টেনে-হিঁচড়ে ট্রাকে তোলা, ‘গুলি চালা-চালাইছি স্যার’– এসবই সেনাবাহিনী ও ড. ইউনূস সরকারের সাফল্য।
আওয়ামী লীগ সরকারের দোষের অন্ত নাই, তারা ১৭ বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার লুট করেছে। বর্তমান সরকার ১০ মাসে ২০ বিলিয়ন ডলার খেয়ে ফেলেছে, এটি তাদের সাফল্য। আওয়ামী লীগ সরকার স্বৈরাচার হলে ইউনূস সরকার স্বৈরাচারের বাপ। আওয়ামী লীগ ৭৭ বছরের একটি পুরোনো দল, এর ভিত্তি দেশের মাটির ভেতরে প্রোথিত, এঁরা মাটি ফুঁড়ে বের হয়। ১৯৭৫ ও ২০০১-২০০৫-এ আমরা তা দেখেছি। আওয়ামী লীগের গত ১৭ বছরের শাসনকালের নেতারা হয়তো হারিয়ে যাবেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ থাকবে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে ইউনূস সরকার যা করছে তা আমাদেরকে পাকিস্থানী আমলের কথা মনে করিয়ে দেয়? ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগকে ব্যান্ড করেছিল, আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন করে ফিরেছে। এবার নিষিদ্ধের পর হয়তো আর একবার দেশ স্বাধীন করে দেবে। একটা সময় আসবে যখন ‘আওয়ামী লীগ আইলো’ বললে ‘লাল-স্বাধীনতাওয়ালারা’ পালানোর জায়গা পাবে না।
সদ্য জামাত একটি বড় সমাবেশ করেছে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। বাংলাদেশে টাকা দিয়ে বড় সমাবেশ করা কোনও ব্যাপার না। প্রফেসর ইউনূস তো বিদেশী মাধ্যমে বলেই দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে টাকা দিয়ে ভোট বেচাকেনা হয়? নোবেল বিজয়ীর কথা সত্য হলে দেশে টাকা ও বিরিয়ানি দিয়ে লোকও আনা যায়? জামাতের মাদ্রাসার ছাত্ররা আছে, জঙ্গিরা আছে, টাকা আছে, বিরিয়ানি আছে, লোক তো হবেই। তবে সুষ্ঠু ভোট হলে ৩-৪%-ই থাকবে। এজন্যেই জামাত নির্বাচন চায় না, কারণ তারা এ অবৈধ সরকারের অংশ। তবে তারা ‘পিআর’ নামক নুতন এক ‘কৌশল’ আমদানি করতে চাইছে, যাতে ৩-৪% ভোট পেলেও ৯/১২জন এমপি পেতে পারেন? জনগণ অবশ্য এদের চালাকি বুঝে গেছে, তাই ওতে কাজ হবে না। নির্বাচনে জয় না পেলে নির্বাচন কেন, তাই জামাত-এনসিপি নির্বাচন বানচালের নুতন ষড়যন্ত্র করছে, গোপালগঞ্জ আক্রমণ যার অংশ।
বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘তিনি আমার কথা শুনলেন না, তিনি শুনলেন ভুট্টো সাহেবের কথা’– বিখ্যাত ডায়লগ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের বেতনভুক কর্মচারী, তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব ছিল শেখ হাসিনা সরকারকে রক্ষা করা, তাঁরা উল্টোটা করেছেন, তারা শেখ হাসিনার কথা শোনেননি, তারা শুনেছেন ভলকার টার্ক ও ডোনাল্ড লু-র কথা। কারণ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে চাকরি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে চাকরি রক্ষার জন্যে এঁরা সীমান্ত ছেড়েও চলে আসতে পারে। সেনাবাহিনীতে চাকরির মূল লক্ষ্য কি জাতিসংঘ বাহিনীতে চাকরি? সামনে নির্বাচিত সরকার এলে এটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার। সেনাবাহিনীর বেতন বাড়িয়ে এটি বন্ধ হওয়া উচিত। এবার গোপালগঞ্জ হত্যাযজ্ঞের পর সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি অনেকটা ক্ষুণ্ন হয়েছে, অসংখ্য অভিযোগ গেছে। বলা হচ্ছে, যারা নিজদেশে নিরস্ত্র জনগণকে হত্যা করতে পারে, তাঁরা কিভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনিতে যাবে।







