এবার বিজেপিকে দিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শহীদ দিবসের মঞ্চে এসে প্রথমে ১৯৯৩ সালের ২১শে জুলাইয়ের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তৃণমূল কংগ্রেসের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড।’ শহীদদের নামের তালিকায় মাল্যদানের পর রীতিমতো হাঁটু মুড়ে প্রণাম জানান অভিষেক। এদিন শুরু থেকেই বিজেপিকে নিয়ে ‘অ্যাটাকিং মুডে’ ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালিদের নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে সরাসরি বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, “আগে জয় শ্রী রাম বলত। ঠেলায় পড়ে এখন রাম ছেড়ে জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা বলছে। ২৬-এর পর ওদের দিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলিয়ে ছাড়ব।” উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুর্গাপুরে জনসভা থেকে ‘জয় শ্রীরাম’-এর বদলে একাধিকবার ‘জয় মা দুর্গা- জয় মা কালী’ বলতে শোনা গিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে। এদিন নাম না করে এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকেও আক্রমণ করলেন অভিষেক। বাম-কংগ্রেস নয়, নিজের বক্তব্যর প্রথম থেকে শেষ এদিন বিজেপিকে আক্রমণ শানান ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ।
একুশের জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই কার্যত ছাব্বিশের সুর বেঁধে দিলেন অভিষেক। বুঝিয়ে দিলেন বাম-কংগ্রেস নয়, এই রাজ্যে যে বিজেপি তৃণমূলের এক ও একমাত্র শত্রু। আর তাই এদিনের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে গণতান্ত্রিকভাবে ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ পাঠানোর ডাক দিলেন অভিষেক। তিনি বলেন, “বাংলার মানুষকে এরা ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চায়। বিজেপিকে প্রথম থেকেই আমরা বাংলাবিরোধী বলেছি। আজ থেকে ১৬-১৭ মাস আগে আমরা ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিলাম। তাতে স্লোগান ছিল, ‘জনতার গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন।’ সেই দিন আমরা যে ডাক দিয়েছিলাম, সেটা শুধু স্লোগান না। ওটা বিজেপির চরিত্র উন্মোচন। শুধু রাজনৈতিক স্লোগান নয়। বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে তাচ্ছিল্য করে, ময়দানে জিততে না পেরে নির্লজ্জের মতো গরিব মানুষকে মারার পরিকল্পনা করে। টাকা আটকে রাখে। ওদের একটাই পরিচয়, বাংলাবিরোধী।”
ইতিমধ্যেই বিজেপি শাসিত রাজ্যে গুলোতে বাঙালিদের নির্যাতনের অভিযোগ আসছে জানিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে তৃণমূল নেত্রীকে। এদিনের একুশের সভা থেকেও তা নিয়ে আওয়াজ তুললেন অভিষেক।
ভিন রাজ্যে বাংলা বললে হেনস্তা নিয়ে সরব হলেন তিনি। বললেন, “বাংলায় কথা বললে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন বাংলাদেশি। ১৫ দিন হয়ে গেল কী ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রের সরকার? গর্ব করে বাংলায় কথা বলব। লোকসভায় আমরা এই সেশনে দরকারে বাংলায় কথা বলব। আগে ১০বার বলতাম, এবার ৫০০ বার বলব। তোমাদের কথায় বাংলা উঠবে বসবে?” তাঁর কথায়, বিজেপি বাংলায় মাটি শক্ত করতে পারেনি বলেই এখানকার বাসিন্দাদের উপর হেনস্তার ছক। তিনি বলেন, “বাংলায় ভোটে জিততে না পেরে এই ধরনের চক্রান্ত শুরু করেছে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে, ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে, এজেন্সিকে কাজে লাগিয়েও বাংলায় জিততে পারেনি বিজেপি। তাই এগুলো করছে।” এরপরই ২৬ সালে বাংলা থেকে বিজেপিকে উৎখাত করার ডাক দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন,”আমি ভবিষ্যতবাণী করি না। কিন্তু করলে ভেবেচিন্তে বলি। যে কটা আবর্জনা রয়েছে তাদের ঝেঁটিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলতে হবে। আমি ২১শে খেলা হবে বলেছিলাম, এবার পদ্মফুল উপড়ে ফেলার ডাক দিলাম।” এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, “একদিকে ইডি লাগিয়ে বিরোধী নেতাদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে।’ চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক বললেন, “মেরুদণ্ড বিক্রি করব না।”







