রাত পোহালেই ধর্মতলায় তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশ। এই সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন জেলার অগণিত কর্মী-সমর্থকরা। যাকে ঘিরে সকাল থেকেই সাজো সাজো রব। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেছে তৃণমূলের জেলা স্তরের কর্মী-সমর্থকরা। অন্যদিকে, রবিবার সন্ধ্যেবেলা ধর্মতলায় ২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চ পরিদর্শনে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তারও আগে সভাস্থল ঘুরে দেখেন বোলপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে এদিন লালবাজারের একাধিক পুলিশ আধিকারিক সকাল থেকে দফায় দফায় ভিজিট করেন ধর্মতলায়। সব মিলিয়ে গোটা বাংলার চোখ যে আগামীকালের সমাবেশের দিকে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা ২০২৬শে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ রাজনীতিতে শাসক দলের এই সভা তৃণমূলের কাছে সাধারণ মানুষের জনসমর্থন আদায়ের অন্যতম হাতিয়ার বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের এই সভা ঘিরে নানা রহস্যও দানা বাঁধছিল বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। তার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কেননা নিজের দলে দিলীপ ঘোষ কোণঠাসা হওয়ার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দীঘাতে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। এমনকী বঙ্গ বিজেপি যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় ব্যস্ত তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে প্রশংসার সুরও শোনা গেছে দিলীপ ঘোষের গলায়। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, তাহলে কি দিলীপ ঘোষ তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে তাঁর উপস্থিতি নিয়েও ক্রমশ রহস্য বাড়ছিল। আর সেই রহস্যকে নিজেই আরও দীর্ঘায়িত করতে চাইছিলেন দিলীপ ঘোষ নিজে সাংবাদিকদের সামনে বারবারই, “২১শে জুলাই কোনও না কোনও মঞ্চে তাকে দেখা” বলায়। অন্যদিকে ২১শে জুলাই তৃণমূলের পাল্টা বিজেপিরও কর্মসূচি রয়েছে। শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি যুব মোর্চা, সেখানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে থাকবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেখানে যে দিলীপ ঘোষ থাকবেন না তা একপ্রকার পরিষ্কার।
তবে ২১শে জুলাই দিলীপ ঘোষ কোথায় থাকবেন? রবিবারও সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “২১শে জুলাইয়ের দিনই বোঝা যাবে আমি কোথায় কোন মঞ্চে থাকব”। অন্যদিকে, ২১শে জুলাই খড়্গপুরেও রয়েছে ‘শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলী সভা’। তৃণমূলের হাতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রায় আড়াইশোর বেশি কর্মী-সমর্থক খুন হয়েছেন। সেই প্রয়াত শহিদদের স্মরণেই সোমবার খড়গপুরের ওই সভার আয়োজন। সম্ভবত আগামীকাল সেখানেই হাজির থাকবেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।







