তাহলে কী লাগাম পরানো হচ্ছে দিলীপের পায়ে? একদিকে যখন রাজ্যের প্রায় সমস্ত নেতাই হাজির দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায়। ঠিক তখনই দিল্লি উড়ে গেলেও দেখা পেলেন না জয় প্রকাশ নাড্ডার। যদিও পরে বিকেলে ফের সর্ব ভারতীয় সভাপতির বাংলোয় যান তিনি। সূত্রের খবর, সেখানেই কার্যত দিলীপের মুখে প্রায় একপ্রকার লাগাম পরানোর বন্দোবস্ত করে ফেলল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের সঙ্গে বহুদিন ধরেই কিছুটা হলেও দূরত্ব বাড়ছিল প্রাক্তন সভাপতির। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে সস্ত্রীক যাওয়ার পর থেকেই সেই দূরত্ব আরো বৃদ্ধি পায়। বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায় রাজ্য বিজেপিতে কার্যত শুভেন্দু-সুকান্ত বিরোধী বলেই পরিচিত দিলীপ। নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য বিজেপির সভাপতি হবার পর সেই দূরত্ব কিছুটা হলেও ঘুঁচবে বলে মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। তবে দুর্গাপুরের সভায় তার অনুপস্থিতি যেন অনেক বার্তাই দিয়ে গেল। দলের তরফে তাকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে দাবি করলেও তৎক্ষণাৎ তা খারিজ করে দেন দিলীপ। তবে এটাও জানিয়ে দেন মঞ্চে জায়গা না হলে নিচে দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে বসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনবেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। দিলীপ ঘোষ সূত্রের খবর, শীর্ষ নেতৃত্ব নাকি তাকে ডেকে পাঠিয়েছে। শুক্রবার সকাল ১২টা ৩০ মিনিটে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার বাংলোই গিয়ে দেখা পাননি। পরে বিকেলে ফের আরো একবার সঙ্গে দেখা করতে গেলে প্রায় এক ঘণ্টা তাদের মধ্যে বৈঠক হয় বলেই সূত্রের খবর। সেই বৈঠকেই দিলীপের মুখে লাগাম টানার কথা বলেন জেপি নাড্ডা। সূত্রের খবর ঘণ্টা খানেকের সেই বৈঠকে দিলীপ ঘোষকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তিনি যেভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে দলের একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বেফাঁস মন্তব্য করছেন তা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিশেষ করে একুশে জুলাইয়ে তৃণমূলের মঞ্চে তিনি যে যাচ্ছেন না তাও এখনো স্পষ্ট করে সংবাদ মাধ্যমকে জানাননি তিনি, যার ফলে বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটি যথেষ্টই ক্ষুব্ধ তার উপর। বৈঠকের পর দিলীপ ঘোষের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, “ঘন্টাখানেক কথা হল অনেক গল্প হয়েছে।” তবে এই ঘটনার কষ্ট রয়ে গেল— তিনি একদা বিজেপির দাবাং নেতা থাকলেও, শুভেন্দু-সুকান্তর সময়ে
গুরুত্বহীন হয়ে থাকা দিলিপ শমীক ভট্টাচার্যের আমলেও যে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ থাকবেন তেমনটাও তো মনে হয় না। অন্তত আজকের ছবিটা তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।







