চলতি মাসের ৪ তারিখ পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান -১ ব্লকের বিডিও রজনীশ কুমার যাদবের তাঁর নিজের দফতরে আই বুড়ো ভাতের এলাহি আয়োজনের ভিডিও নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় সোস্যাল মিডিয়ায়। আর এবার সামনে এল আর এক বিডিও-র ছবি। তিনি নদিয়ার কল্যাণী মহকুমার হরিণঘাটার বিডিও মহাশ্বেতা বিশ্বাস। চলতি মাসের ১৪ তারিখ তার নিজের দপ্তরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে পালন করা হল জন্মদিন। সরকারি অফিস নিমেষে বদলে গেল অনেকটা ছোটখাট ব্যাংকোয়েট হলে। অন্ধকার ঘরে অপেক্ষমান বিডিও অফিসের কর্মীরা। গোটা ঘর সাজানো বেলুন দিয়ে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক দুপুর ১২ টা। নিজের চেম্বারে এলেন ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা বিডিও ম্যাডাম। সাথে সাথে জ্বলে উঠল ঘরের আলো। টেবিলে রাখা ইয়া বড় কেক।
বিডিও ম্যাডাম ঘরে আসার সাথে সাথে চালানো হল গান–”হ্যাপী ব্যর্থ ডে টু ইউ”।
প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে কাজকর্ম শিকেয় তুলে চলল বার্থ-ডে সেলিব্রেশন। হ্যাপী বার্থ-ডে লেখা ক্লাউন পরলেন। মাথায় পরলেন বার্থ-ডে ক্যাপ। পুরোদস্তুর অফিস টাইমে গোটা অফিস তখন ব্যস্ত বিডিও ম্যাডামের জন্মদিন পালনে।
আর বাইরে নানান সমস্যা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ। কিন্তু তাতে কী? বিডিও ম্যাডামের জন্মদিন। আর তাই নিয়ম চুলোয় যাক। উড়ল স্পারকেলও। আর সবটাই হল বিডিও অফিসের মধ্যেই। চলতি মাসের ৪ তারিখ নিজের অফিসেই পালিত হওয়া পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান-১ এর বিডিও রাজনীশ কুমার যাদবের আইবুড়ো ভাতের ছবি ভাইরাল হয়। প্রশ্ন ওঠে আদৌ কি কোনও সরকারি দফতরে এভাবে ব্যক্তিগত কোনও অনুষ্ঠান পালন করা যায়? আর তারপরই সেই একই ছবি নদিয়ার হরিণঘাটায়। তবে কোনও সরকারি অফিসে এই ধরনের কোনও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান পালন করা অনুচিত বলেন জানালেন কল্যাণীর মহকুমা শাসক ড: অভিজিৎ সামন্ত।
তিনি বলেন, “এগুলো করা যায় না। না করাই উচিত। কিন্তু অনেক সময় সাহেবদের না জানিয়ে এগুলো অফিসের অন্য কর্মীরা করে ফেলেন। এখন তো দেখছি বিভিন্ন জায়গায় এগুলো রেওয়াজ হয়ে গেছে। এখন যদি দেখা যায় বড় করে, জাঁকজমক করে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলে করা হচ্ছে। তাহলে সেটা অনুচিত।”
আর যে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের তাঁর নিজের চেম্বারে জাঁকজমক করে জন্মদিন পালন করা হল, সেই মহাশ্বেতা বিশ্বাসের মতে, “এটা কোনও অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমি কোনও ভুল দেখছি না। খুব সাধারণ একটা বিষয়। তবে হ্যাঁ, যেহেতু আমাকে সবাই সম্মান করে তাই হয়তো সেদিন একটু আমার ঘরে বেশী ডেকোরেশন হয়ে গিয়েছিল।”







