১৩ জুলাই, ২০২৫: রাজ্যে গত তিনদিনে পর পর তিন তৃণমূল নেতা খুন। গত বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে নৃশংস ভাবে খুন হন শওকত মোল্লা ঘনিষ্ঠ দাপুটে তৃণমূল নেতা রেজ্জাক খাঁ। স্বাভাবিক ভাবেই এই খুনের পিছনে ISF-এর হাত আছে বলে অভিযোগ করেছিলেন শওকত মোল্লা। কিন্তু ঘটনার তিন কাটতে না পুলিশি তদন্ত যত এগিয়েছে ততই এই খুনে তৃণমূলের যোগই সামনে এসেছে। রেজ্জাক খুনের মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে মোফাজ্জেল মোল্লাকে। যিনি এলাকায় দাপুটে তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত।
বৃহস্পতিবার রাতে মালদার ইংরেজবাজার থানার লক্ষ্মীপুর এলাকায় বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে সেখানেই খুন হন তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার করা হয় মাইনুল শেখ নামে এক তৃণমূল নেতা। জানা যায় তারা দুজনেই একসাথে জমির ব্যবসা করতেন। জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই খুন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। তবে এই দুজনের নামেই বেনামি নানা ব্যবসা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। যদিও জেলা তৃণমূলের তরফে পুরো বিষয়টিকে অস্বীকার করে মহিলা ঘটিত কারণে খুনের তত্ত্বকেই সামনে হাজির করা হয়।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বীরভূমের সাঁইথিয়ায় শনিবার মাঝরাতে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করা হয় লাভপুর বিধানসভা এলাকার শ্রীনিধিপুর তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে। যদিও তার পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়, রাজনৈতিক কারণেই তাকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু এর পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, না বিরোধী রাজনৈতিক দলের চক্রান্ত— সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি তার পরিবার।
তবে পর পর এই তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার বিষয়ে রবিবার মুর্শিদাবাদের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি স্পষ্টতই জানান— “তৃণমূল মানেই গুণ্ডা-মাফিয়াদের রাজত্ব। এরাই দলের সম্পদ। এরাই এখন নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগির অংশীদারি নিয়ে একে অন্যকে খুন করছে। এটা আসলে ভাগ-বাটোয়ারার লড়াই। এভাবেই তৃণমূলের হাতে তৃণমূল খুন হতে হতে একদিন দলটাই শেষ হয়ে যাবে। বিরোধীদের এ রাজ্যে ক্ষমতা আছে যে, তারা তৃণমূল নেতাদের খুন করবে। এটা পরিষ্কার ওদের নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এরাই তো ভোটে ভয় দেখিয়ে, বুথ দখল করে জিতিয়েছে তৃণমূলকে। এখন ঝেড়ে ফেলতে চাইলেও পারবে না।







