ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ যেন ভুলতে পারছেন না ট্রাম্প!

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি যে তাঁর মধ্যস্থতাতেই হয়েছে তা নিয়ে এর আগেও একাধিক বার সরব হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ভারত সরকারের তরফ থেকে রীতিমত বিবৃতি দিয়ে সেই দাবিকে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছিল পাকিস্তানের তরফ থেকে যুদ্ধ বিরতি চেয়ে ভারতের কাছে আবেদন জানানো হয়, তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সংঘর্ষ বিরতিতে যায়। ভারত অন্য কারও চাপে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদিও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতির পরেই শান্তি পুরস্কারের জন্য পাকিস্তানের তরফ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম সুপারিশ করা হয়। এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকেও উঠে আসলো ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রসঙ্গ। গত সপ্তাহেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় একান্ত বৈঠক সারেন ট্রাম্প। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে উভয় তরফ থেকেই দাবি করা হয়েছিল। সেই আবহে এবার জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এই বৈঠক শেষেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প জানান, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামবে। এটা কখন থামবে তা আমি বলতে পারব না। তবে জেলেনস্কি এবং ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধ থামাতে চান। আমি ভেবেছিলাম, এই যুদ্ধ থামানো সবচেয়ে সহজ হবে। তবে এটাই সবচেয়ে কঠিন। এর অনেকগুলি কারণ আছে। এটা নিয়ে দীর্ঘদিন কথা হবে। যেমন ভারত-পাক নিয়ে কথা হবে। আমরা এখানে বড় বড় জায়গা নিয়ে কথা বলছি।” এমনকী তিনি যে শান্তির দূত হিসাবে এখনও পর্যন্ত ৬টি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ থামিয়েছেন তার পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন। ট্রাম্প বলেন, “আফ্রিকাতেও আমরা যুদ্ধ থামিয়েছি। রাওয়ান্ডা এবং কঙ্গোর যুদ্ধ দেখুন। ৩১ বছর ধরে সেই যুদ্ধ চলে আসছিল। আমরা এখনও পর্যন্ত ৬টি যুদ্ধ থামিয়েছি। আমরা ইরানের পরমাণু বোমা বানানোর ক্ষমতা নষ্ট করে দিয়েছি। আর আমার মনে হয় এই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও আমরা থামিয়ে দেব। আমি এই যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।” এভাবেই এদিন বৈঠক শেষে নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও ভারতের উপর সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্য শুল্ক ৫০ শতাংশ করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু তার পরেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদে দাঁড়িয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, কোনও চাপের কাছেই ভারত মাথা নত করবে না। এখন পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হবে।
রেলের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে থাকছেন না মুখ্যমন্ত্রী

আগামী ২২ আগস্ট দমদম মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে। কিন্তু সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্ভবত উপস্থিত থাকবেন না মুখ্যমন্ত্রী। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। তবে মনে করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময় বিজেপি শাসিত ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে তা বাংলা ও বাঙালির অসম্মান। এমনকী এই ইস্যুতে রাস্তায় নেমে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সহ বাংলা ভাষার উপর আক্রমণের প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে ভাষা আন্দোলনেরও ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। প্রতিটি জেলায় বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা সরব হয়ে এই কর্মসূচি পালন করছেন। বিধানসভা ভোটের আগে একেবারে তৃণমূল স্তরে বিজেপির বাংলা বিরোধী ইমেজকে তুলে ধরতে তৎপর রাজ্যের শাসক দল। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে পাশাপাশি বসলে সেই আন্দোলন অনেকটাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। তাছাড়া দমদম মেট্রো প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন। সে সময় কেন্দ্রীয় সরকার অহেতুক এই প্রকল্প রূপায়নে অনেক দেরি করেছে। এখন ভোটের আগেই এই প্রকল্পের উদ্বোধন করে বিজেপি যে নির্বাচনে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে তা একপ্রকার স্পষ্ট। আর সেকারণেই রাজ্যে বিজেপির সেই সুযোগ করে দিতে চান না তৃণমূল নেত্রী। তাই খুব সচেতন ভাবেই এই অনুষ্ঠানকে এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি আরও একটি যুক্তিও সামনে আসছে, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের রাজনৈতিক শ্লোগানের মুখে পড়েছিলেন। যা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে চূড়ান্ত অসম্মানজনক। সেই ঘটনাকে স্মরণে রেখে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে হয়তো নাও থাকতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। তবে সবমিলিয়ে ২০২৬ শের আগে যে রাজ্যে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেবেন না তৃণমূল নেত্রী তা একপ্রকার স্পষ্ট। সব মিলিয়ে ভোটের বাজারে সময় যত গড়াবে তত রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়বে।
ভারত-পাকিস্তানের উপর নজরদারি চালাচ্ছে আমেরিকা, দাবি মার্কিন বিদেশ সচিবের

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বেশ তৎপর হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এমনকী এই আবহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় একান্ত বৈঠকও সারেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকের পর এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আপাতত গোটা বিশ্ব সেদিকেই তাকিয়ে আছে। এরই মধ্যে ভারত-পাকিস্তান নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন সদ্য নিযুক্ত হওয়া মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। ভারত-পাকিস্তানের উপর ট্রাম্প সরকার নজরদারি চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন সচিব বক্তব্য রাখতে গিয়ে যুদ্ধবিরতির পরের জটিলতাগুলি তুলে ধরেন। আর সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই তিনি টেনে আনেন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা। মার্কো রুবিও বলেছেন, “আমি মনে করি আমরা খুবই ভাগ্যবান এবং ধন্য। আমাদের এমন একজন রাষ্ট্রপতি পেয়ে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, যিনি শান্তি এবং শান্তি অর্জনকে তার প্রশাসনের অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরেছেন। আমরা কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ডের ক্ষেত্রে এটি দেখেছি। আমরা ভারত-পাকিস্তানে এটি দেখেছি।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন, “শুধু সংঘর্ষ বিরতিতে গেলেই হল না। সেটাকে ঠিকঠাক ভাবে ধরে রাখাটাও কঠিন ব্যাপার। আমরা তাই প্রতিদিন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কী ঘটছে, কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে কী ঘটছে তার উপর নজর রাখি।” সব মিলিয়ে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি স্থাপন নিয়ে ট্রাম্প স্তূতির সুরই ধরা পড়ল মার্কিন বিদেশ সচিবের গলায়। যদিও ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতি বিষয়ে ভারত সরকারের তরফ থেকে আগেই স্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল যে, কারও মধ্যস্থতাতে নয়, বরং পাকিস্তান ভারতের কাছে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বলেই ভারত তা গ্রহণ করেছে। এমনকী সংসদে দাঁড়িয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাফ জানিয়েছেন,”বিশ্বের কোনও নেতাই ‘অপারেশন সিঁদুর’ বন্ধ করতে বলেননি।” তার পরেও মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিওর এই ধরনের মন্তব্যে ভারত কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটাই দেখার।
বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপালের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রয়াত হলেন বাংলার এক সময়ের রাজ্যপাল লা গনেশন। সূত্রের খবর, গত ৮ অগাস্ট নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান গনেশন। একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। এমনকী সার্জারিও করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শুক্রবার সন্ধ্যায় চেন্নাইতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের এক্স-হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “একজন আদ্যোপান্ত জাতীয়বাদী হিসেবে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তামিলনাড়ু জুড়ে বিজেপির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। তামিল সংস্কৃতির প্রতিও ছিল তাঁর গভীর ভালবাসা।” তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুরে জন্ম লা গনেশনের। আরএসএস(RSS)-এর একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন, পরে যোগ দেন বিজেপিতে। পরবর্তীতে রাজ্যসভার সাংসদও হয়েছিলেন তিনি। ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মণিপুরের রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। ওই সময় কালের মধ্যেই ২০২২ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল হন তিনি। দক্ষিণ ভারতে বিজেপির বিস্তারের পিছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর।
লালকেল্লা থেকে নাম না করে আবারও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী

গত কয়েক সপ্তাহ জুড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেমন ভারতের উপর বাণিজ্য শুল্ক বাড়িয়ে চলেছে। তেমনি আমেরিকার মদতে পাকিস্তান সেনাপ্রধান আসিম মুনির থেকে শুরু করে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতকে কার্যত একের পর এক হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। এই আবহে দেশবাসী অপেক্ষা করেছিলেন দেশের ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে কী বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে কারও নাম না করেই পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতকে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। তিনি বলেছিলেন, “আমরা পরমাণু শক্তিধর দেশ। আমরা যদি ডুবি, অর্ধেক বিশ্বকে নিয়ে ডুবব।” পাশাপাশি মুনিরের মুখে গুজরাটের জামনগরে আম্বানিদের তেল শোধনাগারে হামলার হুঁশিয়ারিও শোনা গিয়েছিল। স্বাধীনতা দিবসের সকালে লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে মুনিরের নাম মুখে উচ্চারণ না করেও এর স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “পরমাণু হামলার হুমকি আমরা বরদাস্ত করব না। দীর্ঘদিন ধরে নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল সহ্য করছি। কিন্তু আর নয়। এই ধরনের চেষ্টা হলে আমাদের সেনা তার উপযুক্ত জবাব দেবে।” পাশাপাশি এদিন সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল নিয়েও সরব হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করে ভরত। সেই নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গত কয়েকদিন আগে ভারতকে নিশানা করে। শাহবাজ জানান, সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করার ফল ভারতকে ভুগতে হবে। শুক্রবার লালকেল্লা থেকে তারও জবাব দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। মোদী বলেন, “নিজেদের তৃষ্ণার্ত রেখে শত্রুদের জল দেওয়া হচ্ছিল। তা আর হবে না। সিন্ধুর জলে ভারত এবং ভারতের কৃষকদেরই অধিকার থাকবে। জল আর রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না।” ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ যে পাকিস্তান রীতিমত ভয় পেয়েছে, সেকথাও জানান তিনি। স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর গলায় আবারও শোনা গেল আত্মনির্ভরতার কথা। জ্বালানি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হওয়ার প্রক্রিয়া যে ভারত ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে শুক্রবার সে কথাও ঘোষণা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন বলেন, “সেমিকন্ডাক্টর খাতে মিশন মোডে কাজ চলছে। চলতি বছরের শেষেই মেড ইন ইন্ডিয়া চিপ বাজারে আসবে।” সব মিলিয়ে ভারত যেকোনও প্রশ্নেই যে কারও কাছে মাথা নত করবে না, তা প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট।
সীমান্তে পাক সেনার অনুপ্রবেশ, পাক সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি— এরপরও চুপ থাকবে দিল্লি?

‘অপারেশন সিঁদুর’-এও শিক্ষা হয়নি পাকিস্তানের। আবারও কাশ্মীর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালালো পাক সেনা। গত ১৩ আগস্ট সকালে জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুলায় উরি সেক্টর দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করে তারা। যদিও এর পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েনি ভারতীয় জওয়ানরা। জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের সেনার ব্যাট টিমকে ব্যবহার করে জঙ্গিরা ভারতের ফরোয়ার্ড পোস্টে হানা দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপরই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে ভারতীয় জওয়ানরা। শুরু হয় গুলির লড়াই। সংঘর্ষ শুরু হতেই অনুপ্রবেশকারীরা গা-ঢাকা দেয়। পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমের সঙ্গে জঙ্গিদেরও থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। উরি থানার আওতাধীন ১৬ শিখ এলআই-এর এরিয়া অফ রেসপন্সিবিলিটি(AOR)-এ এই হামলা হয়। সে সময় শহিদ হন এক সেনা জওয়ান। গত মঙ্গলবারই ইসলামাবাদে পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লড়াইয়ের ভূয়শী প্রশংসা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এর আগে আমেরিকায় দাঁড়িয়ে ভারতকে যোগ্য জবাব দেওয়ার কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান আসিফ মুনির। এবার ভারতের সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলের বিরোধিতা করে কার্যত যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সিন্ধুর জল আটকালে সরাসরি যুদ্ধের বার্তা দিলেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মদতে ইসলামাবাদের এই আচরণ যে খুব ভালো ভাবে নিচ্ছে না ভারত সরকার তা স্পষ্ট। এই আবহে জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে ‘অপারেশন অখাল’ চলছে। তবে ইসলামাবাদের তরফে এই ধরনের বিবৃতি সামনে আসার পর ভারত সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এখন সেটাই দেখার। সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যেই উত্তেজনার পারদ যে ক্রমশ চড়ছে তা স্পষ্ট।
আমেরিকার কাছে মাথা নত করবে না ভারত, স্পষ্ট বার্তা মোদীর

রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার শাস্তি স্বরূপ ভারতের ওপর শুল্ক আরও বাড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতকে কাজে লাগিয়ে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে আমেরিকা। বর্তমানে ভারতীয় পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সেটা কার্যকর হবে ৩ সপ্তাহ পর থেকে। যদিও ইতিমধ্যেই ভারত ট্রাম্পের শুল্ক বাড়ানো নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ভারতের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়ার তেল তো চিন সহ আরও অনেক দেশই কেনে, তাহলে শুধু ভারতের উপর কেন এই শুল্ক চাপানো হচ্ছে? এমনকী ভারত তার বিবৃতিতে এও উল্লেখ করেছে যে, আমেরিকা নিজেরাই রাশিয়ার থেকে ইউরেনিয়াম সহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ কেনে। তাই অহেতুক ভারতকে নিশানা করা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে স্পষ্ট জানানো হয়। আর এর জবাবে ট্রাম্প আরও সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা ভারতের উপর চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য চুক্তি থমকে আছে। আমেরিকা ভারতে তাদের কৃষিপণ্য এবং দুগ্ধজাত পণ্য বিক্রি করতে চাইছে। তবে সেই পণ্য ভারতে বিক্রি করতে দিতে নারাজ মোদী সরকার। ভারতের প্রতি আমেরিকার এই চাপ সৃষ্টি নিয়ে এমএস স্বামীনাথন শতবার্ষিকী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “আমাদের কাছে দেশের কৃষকদের স্বার্থই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। ভারত কখনও কৃষক, জেলে এবং দুগ্ধ চাষীদের স্বার্থের সাথে আপস করবে না। আমি জানি এর জন্য আমাদের অনেক মূল্য দিতে হবে এবং আমি এর জন্য প্রস্তুত। ভারত এর জন্য প্রস্তুত…।” ভারতীয় পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির জেরে আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের দাম বাড়বে। এর জেরে আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা দ্রুত কমতে পারে। এরই মাঝে অবশ্য ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা জারি রয়েছে। অন্যদিকে যে ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তা কার্যকর হবে ২৭ অগস্ট থেকে। তার আগে ২৫ অগস্ট দুই দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনার টেবিলে বসবেন। এখনও পর্যন্ত দুই দেশের পাঁচ দফা বৈঠক হয়েছে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে। সর্বশেষ দফা আলোচনা ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হলেও তা অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আগামী ২৫ অগস্ট থেকে ভারতে ষষ্ঠ দফার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে দু দেশেই বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে এই বৈঠক নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
ফের কি হারানো মর্যাদা ফিরে পেতে চলেছে জম্মু ও কাশ্মীর, বাড়ছে জল্পনা

৬ বছর আগে এই ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করেছিল মোদী সরকার। একই সঙ্গে এই দুই প্রদেশকে ভেঙে দুটি আলাদা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও সে সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা সরকার সময় মতো ঠিক ফিরিয়ে দেবে। এর মাঝেই চলতি বছরের শুরুতেই পাহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নানা মহল থেকে নানা প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। তবে কি জম্মু ও কাশ্মীরকে তাদের হারানো রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে? আর এই জল্পনাকেই আরও উসকে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় করা জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার একটি পোস্ট। গতবছর জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন জয়ী হয়ে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী হন ওমর আবদুল্লা। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরে কী হতে পারে, এই নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা আমি শুনতে পাচ্ছি। তবে এই ক্ষেত্রে আমি আগ বাড়িয়ে বলতে চাই, ৫ অগস্ট কিছুই হবে না— সৌভাগ্যক্রমে খারাপ কিছু ঘটবে না, তবে দুর্ভাগ্যবশত ইতিবাচক কিছুও ঘটবে না।” জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বর্ষপূর্তির আগের সন্ধ্যায় দিল্লিতে একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। এই বৈঠক যেমন হয়েছে সরকারি আমলা এবং সরকারের উচ্চপদে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে। তেমনই গত সোমবার দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক হয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো প্রধান তপন কুমার ডেকা এবং স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহনের। তবে সবগুলো বৈঠকই হয়েছে চূড়ান্ত গোপনীয়তার সঙ্গে। বৈঠক নিয়ে কোনও তথ্যই বাইরে প্রকাশ করা হয়নি। এমনকী আজ, অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালেও এনডিএ সাংসদদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন অমিত শাহ। যার ফলে জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে জল্পনা আরও বাড়ছে। এমনকী এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও দেখা করে এসেছিলেন। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বড় কোনও সিদ্ধান্ত আসে কিনা, আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে আছে গোটা দেশ।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কাছে কি নতিস্বীকার ভারতের?

গত কয়েক দিন আগেই ভারতের বাণিজ্য পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকী রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য চুক্তিকে যে তিনি ভালো চোখে দেখছেন না, তাও হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমনকী রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য নির্ভরতা বাড়ালে ভারতে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হবে বলেও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ভারতকে চাপে রাখতে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পরেই ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে এই বিষয়টি নিয়ে যে ভারত চিন্তাভাবনা শুরু করেছে তা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছিল। এবার আমেরিকার এই প্রচ্ছন্ন হুমকির সামনে ভারতকে কিছুটা পিছু হটতেই দেখা গেল। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ ভারত। ভারতের মোট তেল আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। এবার ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পর নীরবে নিজের অবস্থান বদলালো ভারত। বিশ্ব জ্বালানি বাজারে রাশিয়ার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল আমদানি অনেকটাই বৃদ্ধি করল ভারত। সরকারি রিপোর্ট বলছে, ২০২৫ সালের প্রথম ৬ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের খনিজ তেল আমদানি বেড়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ। তার ফলে খরচও বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কেবল অশোধিত তেল নয়, এলপিজি এবং এলএনজির মতো গ্যাসও আগের থেকে অনেক বেশি পরিমাণে কেনা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন, এই ক’মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত দৈনিক আমদানি করত ১.৮ লক্ষ ব্যারেল। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন ২০ জানুয়ারি। তারপর থেকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দিনে ২.৭১ লক্ষ ব্যারেলে। অর্থাৎ আমদানির গতি বেড়েছে নজরে পড়ার মতো। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, শুধুমাত্র এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসেই মার্কিন তেল আমদানি বেড়েছে ১১৪ শতাংশ। ফলে সামগ্রিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ভারতের মোট তেল আমদানির ৮ শতাংশ জোগাচ্ছে। আগে যা ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। আর এই পরিমাণ তেলের জন্য ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে যেখানে খরচ হয়েছিল ১৭৩ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা), ২০২৫ সালে সেটাই গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭০ কোটি ডলারে (৩২ হাজার কোটি টাকা)।আপাতত মার্কিন তেল আমদানি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই, বরং আগামীতে তা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল রাশিয়ার প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়ে দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নানান ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে ঠিকই। তবে প্রতিরক্ষার প্রশ্নে দু দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। এমনকী তেল আমদানির ক্ষেত্রে ভারত যে বাজারদর, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং ভারতের চাহিদা এই বিষয়গুলিকেই প্রাধান্য দেয় তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি তিনি তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট বলেছেন, “ভারত পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে চলেছে। তাই নিজের অর্থনৈতিক স্বার্থের বিষয়ে ভারত অবশ্যই সজাগ থাকবে।”
বন্ধু দেশ ভারতের উপর অতিরিক্ত বাণিজ্য শুল্ক চাপালো ডোনাল্ড ট্রাম্প

এতদিন আমেরিকার বন্ধু দেশ হিসেবেই পরিচিত ছিল ভারত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধুত্ব নিয়েও নানা মহলে নানা চর্চা হয়েছে। এবার সেই বন্ধু দেশের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ও অতিরিক্ত শাস্তিমূলক পেনাল্টি আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত রাশিয়াকে সমর্থন করায় আমেরিকার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা হলেও শিথিল হয় বলে রাজনৈতিক মহলের দাবি। এমনকী অতি সম্প্রতি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়ও পাকিস্তানকে প্রচ্ছন্ন মদত দিতে দেখা গেছে আমেরিকাকে। সেসময় হোয়াইট হাউসের অনেক দাবিকেই নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছিল ভারত সরকারের তরফ থেকে। তারই ফলশ্রুতি এই শুল্ক বৃদ্ধি বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা এখনও চলছে। এরই সঙ্গে তিনি ব্রিকস সম্পর্কে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর দাবি, ডলারের উপর আক্রমণ করছে ব্রিকস। হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্পকে ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, ট্রাম্প বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে এখনও কথা বলছি। তবে এর মধ্যে অবশ্যই রয়েছে ব্রিকস। ব্রিকস আসলে এমন দেশগুলির একটি গ্রুপ যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এবং ভারতও এর সদস্য। এটি ডলারের উপর আক্রমণ করছে এবং আমরা কাউকে ডলারের উপর আক্রমণ করতে দেব না।” ট্রাম্পের মতে ভারত তাঁর বন্ধু। তা সত্ত্বেও মার্কিন পণ্যের ওপর বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করে ভারতই। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করেন। ট্রাম্প বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী আমার বন্ধু, কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে খুব বেশি বাণিজ্য করেন না। তারা আমাদের দেশে অনেক পণ্য বিক্রি করে, কিন্তু আমরা বিক্রি করতে পারি না। কেন? কারণ তাদের ট্যারিফ অনেক বেশি। এখন তারা এটি অনেকাংশে হ্রাস করতে ইচ্ছুক, তবে দেখা যাক এর পরে কী হয়।” এমনকী ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, “এই সপ্তাহের শেষের দিকে, আপনারা জানতে পারবেন যে আমরা ভারতের সঙ্গে কোনও চুক্তি করেছি কি না বা তাদের কোনও ফি দিতে হবে কি না।” অন্যদিকে আমেরিকার এই ঘোষণার পর ভারত সরকারের তরফ থেকেও বিবৃতি দিয়ে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে তাতে বলা হয়েছে, “ভারত ও আমেরিকার মধ্যে একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ এবং পারস্পরিক উপকারী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি হওয়া উচিত। এর জন্য গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলছে। ভারত এই লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” অতীতেও আমেরিকা অনেক দেশের উপরই এ ধরনের বাণিজ্য শুল্ক চাপিয়েছে। তবে ভারতের উপর এ ধরনের বাণিজ্য শুল্ক চাপানোয় দু দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হতে পারে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।