প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: বঙ্গ বিজেপি রাজ্য সভাপতি বদল হতেই বিজেপিতে নয়া সমীকরণের চোরাস্রোত এখন বাংলার রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচ্য বিযয় । বলার অপোক্ষা রাখে না শমীক ভট্টাচার্যের হাতে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের ব্যাটন যাওয়ার পর সুকান্ত-শুভেন্দু কাছে ব্রাত্য দিলীপ এখন প্রাসঙ্গিক । মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে একান্তে বৈঠক ,রাত পোহাতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ডাকে বুধবার সকালেই সস্ত্রীক দিল্লি উড়ে গেলেন দিলীপ ঘোষ । কেন দিল্লি যাত্রা ?স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে দিল্লি যাত্রার কারণ নিয়ে রেখে গেলেন ধোঁয়াশা ৷ তবে গত কয়েকদিন ধরে দিলীপের শরীরিভাষা , চনমনে মানসিকতা , সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর যেভাবে স্টেপআউট করছিলেন তাতে একটা বিষয় পরিস্কার ২০১৯ -এর বঙ্গ বিজেপির কান্ডারী আবার রাজ্য রাজনীতির ময়দানে স্বমহিমায় ফিরছেন ।
এতদিন কি তিনি অভিমানী ছিলেন? প্রশ্নের সোজাসাপটা উত্তর, ‘‘দলের সঙ্গে আমার দেওয়া নেওয়া সম্পর্ক নয়। রাজনীতি কারুর কাছে প্রফেশন। কারুর কাছে অকুপেশন। আমার কাছে মিশন। আমি কিছু দিতে এসেছি। পার্টি দায়িত্ব দিয়েছিল। আমি পালন করেছি মাত্র। ২৬-এর নির্বাচন আমাদের কাছে একটা মাইল স্টোন। আমাদের সেটা পার করতে হবে। পার্টি এখন সিনিয়র লোককে সভাপতি করেছে। তিনি নতুন পুরোনো মিলিয়ে কাজ করতে চাইছেন। এগোতে চাইছেন। আমি সঙ্গে আছি।’’
একুশের মঞ্চে তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এদিন দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘সেই বন্ধুরা খুব কষ্টে আছে যারা আমাকে তৃণমূল কংগ্রেসে পাঠিয়ে দিয়েছিল। যারা নতুন অন্য পার্টির নাম দিয়ে আমাকে তার নেতা বানিয়ে দিয়েছিল। তাদের কাল থেকে কিভাবে চলে দেখি। কাল রাত থেকে তারা মিটিং করেছে এইবার কি ফান্ডা বের করা যায়। গল্প তৈরি করে করে তারা মাথা খারাপ করে ফেলছেন৷ গল্প তৈরি করে করে তারা ক্লান্ত৷’’
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের। এরপর ২৮এর লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে অন্য দেওয়া টিকিট দেওয়া যে ভালোভাবে নেন নি তা দিলীপ নানাভাবে দলকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন । দলের অন্দরে অভিযোগ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দিলীপ বিরোধীরা দলের মধ্যে দিলীপকে ক্রমশ কোনঠাসা করে দেয় । বিশেষ করে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে গেলে দিলীপের উদ্দেশ্যে নানা কটূক্তি ছুঁড়ে দিতে ছাড়েনি তাঁর দলের তাবড় নেতারাও। তাঁকে ঘিরে কর্মীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর হোক বা অমিত শাহের কলকাতায় কর্মসূচি। কোনও কিছুতেই দেখা যায়নি বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। এমনকি শমীক ভট্টাচার্য যেদিন নতুন রাজ্য সভাপতি হলেন সেদিনও আমন্ত্রণ পাননি দিলীপ ঘোষ। বোঝাই যাচ্ছিল দলের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির দূরত্ব বাড়ছে। তবে দায়িত্ব নিয়ে শমীক -দিলীপ যোগসূত্র দলে ব্রাত্য হয়ে যাওয়া কর্মীরা নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । মঙ্গলবার সল্টলেকের দলীয় কার্যালয়ে রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ এরপরেই দিল্লি থেকে দিলীপ ঘোষকে তলব । তবে কি বঙ্গ বিজেপিতে দিলীপের ‘গ্রেট কামব্যাক’ সময়ের অপেক্ষা?







