এসআইআর (SIR) নিয়ে ক্রমশ আশঙ্কা বাড়ছে রাজ্যবাসীর মনে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপও। স্বাভাবিক ভাবেই বাংলায় এসআইআর চালু হওয়া নিয়ে যথেষ্ট আতঙ্কেই আছেন সাধারণ মানুষ। গত মাস থেকে ভোটার এবং আধার কার্ড সংশোধনের জন্য যে পরিমাণ আবেদন পত্র জমা পড়েছে তাতে করে ছবিটা পরিষ্কার। এই আবহে সামনে আসছে আরও একটি তথ্য। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন মাসে রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলি থেকে সবচেয়ে বেশি আবেদন পত্র জমা পড়েছে নতুন ভোটার নিবন্ধনীকরণের জন্য। যে সীমান্তবর্তী এলাকার ভুয়ো ভোটার বা বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়। এমনকী এই প্রশ্নে রাজ্যের শাসক দলের দিকেই ওঠে অভিযোগের আঙুল। শাসক দল তৃণমূল নাকি এই ভুয়ো ভোটারদের নিজেদের ভোট-ব্যাংক বাড়াতে কাজে লাগায়। এই আবহে সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে নতুন ভোটারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়া নিঃসন্দেহেই তাৎপর্যপূর্ণ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচন দফতরের এক আধিকারিকের মতে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলি যেমন— উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং কোচবিহার জেলায় নতুন ভোটার তালিকাভুক্তির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। গত তিন মাসে ফর্ম ৬-এর মাধ্যমে নতুন ভোটার রেজিস্ট্রেশন ৯ গুণ বেড়েছে। আগে যেখানে বিধানসভা কেন্দ্র পিছু গড়ে ১০০টি আবেদন জমা পড়ত, এখন সেখানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি মাসে প্রায় ৯০০।
পাশাপাশি ২০২৬-শের নির্বাচনকে মাথায় রেখে নির্বাচন কমিশন এক অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছে। গত দিল্লি বিধানসভার মডেলেই কলকাতা এবং পাশ্ববর্তী শহরাঞ্চলের বহুতল আবাসন ভবনের নিচের নীচে পোলিং বুথ তৈরি করার পরিকল্পনা নিচ্ছে। তবে সেখানে অবশ্য কমপক্ষে ৬০০ মানুষের জনবসতি থাকতে হবে। শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ভোট সচেতনতা বাড়াতেই কমিশনের এই উদ্যোগ বলে জানা যাচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল বলেন, “ভারতীয় নির্বাচন কমিশন আমাদের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। গত দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে এটি চেষ্টা করা হয়েছিল এবং তাতে সেখানে ভোটদানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এবার তা বাংলাতেও চালু করা হবে।” বাংলায় বিগত নির্বাচনগুলিতেও গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলের প্রাপ্ত ভোট শতাংশ অনেকটাই কম ছিল। তবে নির্বাচন কমিশনের এই নতুন প্রকল্পের ফলে শহরাঞ্চলে ভোটদানের হার আদৌ বাড়ে কিনা, সেটাই দেখার।







