শেষ মুহূর্তে পরীক্ষা স্থগিত, তবে কি চাপের মুখে নতিস্বীকার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের?

আজ ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্য গোটা রাজ্যজুড়ে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে শাসক দলের। এমনকী কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে প্রতি বছরের মতো এবার সভা রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। সেই সমাবেশে যোগ দেবেন বিভিন্ন জেলার ছাত্র-যুবরা। এই আবহে বৃহস্পতিবার ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই একাধিক পরীক্ষার সূচি ছিল কলকাতা ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করা হয়েছিল পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তার পরেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকী রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফ থেকেও নাকি চিঠি দিয়ে আবেদন করা হয়েছিল পরীক্ষা পিছোনোর জন্য। কিন্তু এতে পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের মানসিকতার ওপর প্রভাব পড়তে পারে ভেবে নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ও। কিন্তু হঠাৎই বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সকালে নোটিস দিয়ে জানানো হয়, অনিবার্য কারণের জন্য বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হল। কিন্তু এই স্থগিত হওয়া পরীক্ষা আবার কবে নেওয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা রাজনৈতিক মহলে। তবে কি চাপের মুখেই নতিস্বীকার করতে বাধ্য হল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি এ প্রশ্নও উঠছে, যেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পারল নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকতে, সেখানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কেন নিজেদের অবস্থান থেকে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়াল। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিষয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলোও। এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে পদক্ষেপ করেছে, সেটাই স্বাভাবিক ও সাধারণ পদক্ষেপ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস, এরকম তো সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই ছাত্র সংগঠনেরই প্রতিষ্ঠা দিবস আছে। তাতে যদি সব এরকম প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে ভয়ঙ্কর কথা।” পাশাপাশি রাজ্য শিক্ষা সেলের চাপের তত্ত্বকে সামনে এনে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “তৃণমূলের শিক্ষা সেলের কাছে যে সমস্ত উপাচার্যের মেরুদণ্ড বন্ধক রাখা রয়েছে, তাঁরা এমন সিদ্ধান্তই নেবেন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।” অবশ্য বিরোধীদের এসব অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের দাবি, ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অহেতুক জেদের কারণে যাতে ছাত্রদের ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই কথা ভেবে নিজের ভুল বুঝতে পেরেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের পুরনো অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
ভাষা-আন্দোলনে বোলপুরের পর এবার মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফর

বিজেপি শাসিত ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর নিপীড়ন এবং বাংলা ভাষায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ বলে তাদের আটক করার প্রতিবাদ চলতি মাসের মাঝামাঝি রাস্তায় নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই বিজেপিকে বাংলা বিরোধী তকমা দিয়ে প্রবল আক্রমণ শানিয়েছিলেন। এমনকী ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বাংলা ভাষার অপমানে ভাষা আন্দোলনেরও ডাক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা রাজ্যজুড়ে সমস্ত শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করারও আহ্বান করেন তিনি। এমনকী এই ভাষা আন্দোলন যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মভূমি শান্তিনিকেতন থেকেই সূচনা হবে সেকথাও জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সেইমতো ২৮ জুলাই বোলপুরের ভাষা আন্দোলনের মিছিলেও পা মেলান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের পর এবার জঙ্গলমহল। আগামী ৬ আগস্ট ঝাড়গ্রাম শহরের রাজবাড়ির মোড় থেকে সার্কাস ময়দান পর্যন্ত বিশিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে ভাষা আন্দোলনের মিছিলে পা মেলাবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি বিরোধী এই মিছিলে আদিবাসীরা ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেবেন। জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাষা আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতেই বুধবার বিধানসভা ভবনে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিধায়ক দুলাল মুর্মু, বিনপুরের বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদা, গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো-সহ জঙ্গলমহলের তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি সকলকে ওই দিনের কর্মসূচির খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে বুঝিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলমহল সফরের একদিন আগেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ওখানে পৌঁছে যাবেন বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে এদিনের বৈঠকে ভাষা আন্দোলন ছাড়াও বিশ্ব আদিবাসী দিবস সহ একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাঙালি অস্মিতায় শান দিয়ে ২০২৬ বিধানসভার আগে মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফর যে বিজেপির বিরুদ্ধে বড় অস্ত্র হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।
নেতাজিকে মনে করিয়ে ভাষা-সন্ত্রাস ইস্যুতে পরোক্ষে মোদিকে তোপ মমতার

শুধু মুখে নয়, এবার সরাসরি রবি ঠাকুরের মাটি থেকেই ভাষা রক্ষার ‘লড়াই’ শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিজেপিকে। ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাই ঘোষণা করেছিলেন যে বোলপুর থেকেই এই লড়াইয়ের অস্ত্রে শান দেবেন তিনি। সেই মতো সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ বোলপুর টুরিস্ট লজ থেকে শুরু হল মিছিল। সামনের সারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী রায়, অসিত মাল, ফিরহাদ হাকিমরা। পিছনে হাজার হাজার বাংলাভাষা রক্ষার সৈনিকরা। কারও হাতে রবি ঠাকুরের ছবি, বাংলা বর্ণমালা আর সামনে বাজছে “আমি বাংলায় গান গাই।” এগিয়ে চলেছে মিছিল। প্রায় দীর্ঘ ৪ কিলোমিটার মিছিল শেষে জামবনী বাসস্ট্যান্ডে সভা করে মোদীর নাম করে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নেতাজি-শহিদ স্বরাজদীপকে ভুলে গেলেন? ইতিহাস ভুলবেন না। বাংলার গুরুত্ব ভুলবেন না। রেশন, আধার, প্যান কার্ড থাকা সত্ত্বেও অত্যাচার করা হচ্ছে। পুশব্যাক করা হচ্ছে। মনে রাখবেন, এটা বাংলা। এরা দেশ স্বাধীন করতে পারে, বাল্যবিবাহ রোধ করতে পারে। সতীদাহ প্রথা করতে পারে।” মমতা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, “আমি কোনও ভাষার বিরোধী নই। আমরা একতা চাই। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়ার মূল অস্ত্র একতা।” হুঙ্কার ছেড়ে মমতা বললেন, “জীবন দিয়ে দেব, কিন্তু ভাষা কাড়তে দেব না।” চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মমতা বলেন, “বাংলার কারো নাম বাদ দিয়ে দেখুন, ছৌ নাচ দেখবেন।” এরপরই ভিনরাজ্যে কর্মরত বাঙালিদের ঘরে ফেরার পরামর্শ দেন মমতা।
‘আমাকে না জানিয়েই করা হয়েছে’— বিএলওদের প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর

স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন বা এসআইআর(SIR) নিয়ে যখন গোটা বাংলায় কার্যত রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে। তোলপাড় গোটা রাজ্য। ঠিক সেই সময় তাঁকে কিছু না জানিয়ে বিএলও(BLO)-দের প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই যে বিএলওদের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে সেকথা নাকি জানতেনই না বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি এই সংক্রান্ত কোনো অনুমতি নাকি মুখ্য সচিবের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি বলে দাবি করলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। অর্থাৎ রাজ্যকে কার্যত ধোঁয়াশায় রেখেই এই বিএলও(BLO)-দের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। আর কেন সব জানা সত্ত্বেও রাজ্যকে কোনও তথ্য দেওয়া হল না? তা নিয়ে জেলাশাসকদের তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। বিএলও(BLO)-দের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “আপনারা বিএলও(BLO)-র যেসব লিস্ট করেছেন। আমার অনুরোধ থাকবে যাতে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেন না যায় সেটা দেখবেন।” পাশাপাশি এই বিষয়ে তিনি বিএলও(BLO)-দের বলেন, “নির্বাচন কমিশন যে তালিকা তৈরি করার করবে। যখন ভোটের দিনক্ষণ প্রকাশ হবে, তারপর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। তার আগে বা পরে নয়। মনে রাখবেন আপনারা রাজ্য সরকারি কর্মী। কোনও মানুষকে অযথা হেনস্তা করবেন না। দেখবেন যেন সাধারণ মানুষের হেনস্তা না হয়। যারা দীর্ঘদিন এই রাজ্যের ভোটার। চারদিন গেলেন, সে নেই। হয়তো বেড়াতে গিয়েছে। তা বলে তাঁর নাম বাদ দিয়ে দেবেন? আপনাকে দেখতে হবে তাঁর অস্তিত্ব আছে কিনা। চারদিকে যাঁরা বাংলা ভাষায় বলছে তাঁরা হেনস্তার শিকার হচ্ছে। এই মানুষগুলির পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে।” ইতিমধ্যেই, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করে নির্বাচন কমিশন। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশন’। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০০৩ সালে বিহারে শেষবার এসআইআর হয়েছিল। যাতে শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটদানের অধিকার পান সেটা নিশ্চিত করতে এই সংশোধনী। বিহারের পরে এক এক করে অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হবে। নজরুল মঞ্চে নদিয়া, দুই ২৪ পরগণা এবং মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে শতাধিক ব্লকের বিএলও(BLO)দের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী দিনে পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এটাকে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনীর প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসাবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
বিভিন্ন রাজ্যে থাকা বাংলার ২২ লক্ষ পরিযায়ীকে ঘরে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ মমতার

এবার ভিনরাজ্যে বাঙালি ‘হেনস্তা’ রুখতে বড় পদক্ষেপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ইতিমধ্যে বাংলার বাইরে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে একের পর এক বাঙালি শ্রমিকদের ওপর, আরো ভালো করে বললে বাঙালিদের উপর লাগাতার নির্যাতন নিয়ে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন তিনি। রাজপথে নেমে মিছিল করে এই বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী ২১শে জুলাইয়ের সভা থেকেও বারে বারে বাঙালি অস্মিতাকে তুলে ধরেছেন তিনি। এমনকী প্রয়োজনে ফের আরও একবার ভাষা আন্দোলনের ডাকও দেন তিনি। সোমবারই রবীন্দ্রনাথের বোলপুর থেকে বাংলাভাষা রক্ষা ও বাঙালিদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মিছিলে হেঁটেছেন তিনি। তবে তার আগে ঘরের ছেলেদের ‘ঘরে ফেরানোর’ ব্যবস্থা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, ”বাইরে আমাদের ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করে। তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে আনুন এবার।” মঞ্চে থাকা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক আর বীরভূমের ছেলে রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “দরকার নেই দালালদের সাহায্য নিয়ে বাইরে গিয়ে কাজ করার। ওদের উপর অত্যাচার হলে দালালরা থাকে না, পালিয়ে যায়। ওঁরা ফিরে এলে এখানে যদি থাকার জায়গা থাকে, তাহলে তো ভালো। আর তা না থাকলে, আমরা ক্যাম্প বানিয়ে দেব। রেশন কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, কর্মশ্রী প্রকল্পে ওঁদের কাজের ব্যবস্থা করে দেব। ওঁদের জব কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে।” তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তাঁর উদ্দেশেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ”সামিরুল, ওঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করো।” কোভিডের সময় থেকেই বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বহু পরিযায়ী শ্রমিককে নিজেদের খরচে রাজ্যে ফিরিয়ে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যদিও পরে অবশ্য তাঁদের অনেকেই ফিরে যান নিজেদের কর্মস্থলে। তবে এই মুহূর্তে সামনে এসেছে অন্য সংকট। এখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে শ্রমিকরা বাইরের রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই তাঁদের বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে, নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। চলছে অত্যাচারও। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের উদ্ধারে সাহায্য করছে রাজ্য প্রশাসন। তারই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, সব পরিযায়ী শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হোক। রাজ্য সরকার জব কার্ড দিয়ে তাঁদের কাজের ব্যবস্থা করে দেবে। অর্থাৎ বাঙালি ‘হেনস্তা’ রুখে বাংলার শ্রমিকদের নিরাপত্তায় তিনিই যে একমাত্র ভরসা, তা ফের বোঝালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘কেন্দ্র বঞ্চনা করলেও উন্নয়ন থামবে না’, মুখ্যমন্ত্রী

বাংলা ‘দখল’ করতে না পেরে লাগাতার রাজ্যের সাথে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র— এই অভিযোগ এর আগেও একাধিকবার শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। এর মধ্যে আবার নতুন সংযোজন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালিদের নির্যাতনের ঘটনা। আর ঠিক এই আবহে ফের আরও একবার বাংলার প্রতি বঞ্চনা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে বঞ্চনা নিয়ে সরব হন তিনি। তবে এই বঞ্চনার মধ্যেও উন্নয়নমূলক কাজ কীভাবে করতে হবে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তা হাতেকলমে শিখিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বোলপুর থেকে তিনি বলেন, “কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে। এই অবস্থাতেও এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করতে হবে। রাজ্যের টাকাতেই সব কাজ হবে। এলাকার কাজের জন্য জেলা পরিষদ থেকে ৫ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ৫ শতাংশ, স্থানীয় এমএলএ(MLA)-রা ১০ লক্ষ টাকা দেবেন। এই সব টাকা নিয়ে জমা পড়বে ডিএমদের কাছে। বাকি টাকা দেবে রাজ্য সরকার।”
“এবারের খেলায় বোল্ড আউট করতে হবে,”—দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বার্তা দলনেত্রীর

রাজনীতিতে তিনি যে অলরাউন্ডার, ২১শের সভা থেকে বুঝিয়ে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রীতিমত ক্যাপ্টেনের মতো ২৬-এর ক্রিজে চতুর্থ বারের জন্য বাংলা দখলের ‘রান’ বেঁধে দিলেন দলীয় কর্মীদের। এদিন মমতা বলেন, “এবারে খেলায় বোল্ড আউট করতে হবে। একেবারে ছক্কা মারতে হবে।” একুশে জুলাই আসলে একটা আবেগ। তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা ইভেন্ট, শহীদ স্মরণ। তাই সকাল থেকেই সরগরম গোটা চত্বর। ‘দিদি’ তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন, তা শুনতে রাত থেকে একটু একটু করে সভামঞ্চে ভিড় করতে শুরু করেছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। ছাব্বিশের সুর কী হবে? ভোটের আগে বিজেপি সহ বিরোধীদের ক্লিন বোল্ড করতে ক্যাপ্টেন কী ভোকাল টনিক দেন, তা শুনতে ধর্মতলায় লাখো মানুষের ভিড়।তবে সেই চেনা রণংদেহী মেজাজে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। লড়াইয়ের মঞ্চে তিনি যে সামনে থেকে টিম সামলাবেন, তা বুঝিয়ে দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি, শহীদদের রক্তে তর্পণ করে বলছি, যতদিন দিল্লি থেকে উৎখাত না করতে পারি, ততদিন শান্ত হব না। আমি একাই ১o জনের সঙ্গে লড়ে নেব।” আসলে বাঙালি অস্মিতা, এনআরসি, ভোটার তালিকা সংশোধন, বাংলার বঞ্চনা সহ একাধিক হাতিয়ার যে তার হাতে। ২৬শে আরও বেশি আসন যে দরকার তাও নির্দিষ্ট করে দেন। এদিন সভামঞ্চে পহেলগাও হামলায় শহীদ ঝন্টু আলী শেখ এবং বিতান অধিকারীর পরিবারকে মঞ্চে তুলে তাদের হাতে ২ লক্ষ টাকা তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, “অপারেশন সিঁদুরে পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করা গেল না কেন? আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায় চলছেন।” ইতিমধ্যেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালিদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়েছে, অথচ ২০২৬-এ বিধানসভাকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আচমকাই জয় শ্রী রামের বদলে জয় মা দুর্গা, জয় মা কালীর নাম বারেবারে বলেন, যা নিয়েও একুশের মঞ্চ থেকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা। তিনি বলেন, “টেলি প্রম্পটারে দুলাইন বাংলা লিখে এনে বলে দিলেই বাঙালি হওয়া যায় না। ওদের না আছে জ্ঞান, না আছে কিছু।” পাশাপাশি কেন্দ্রের মোদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “সর্বনাশা আইন বাতিল না করলে, বাংলায় হাত দিলে কমিশন ঘেরাও করব আমরা। কিছুতেই বাংলা ও বাঙালির উপর অত্যাচার মানব না।” এরপরই মমতার হুঁশিয়ারি, “বাংলাভাষীদের ওপর অত্যাচার হলে ছেড়ে দেব না। আমাদের আটকে রাখা যায় না, রোখা যায় না।” ইতিমধ্যে অসমের ফরেন ট্রাইবুনালে বাঙালিদের ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যা নিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মাকে মমতার খোঁচা, “অসমের মুখ্যমন্ত্রী আপনি অসমটাই সামলাতে পারছেন না, আর বাংলায় নাক গলাচ্ছেন। সুস্মিতা দেবকে বলব দরকার হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। দরকার হলে আমরা সবাই যাব। দেখব কতজনকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখেন।” এদিন সিপিএমকেও মমতার তোপ, “মনে নেই হাজরা মোড়ে সেদিন আমায় মারতে মারতে প্রায় মেরেই ফেলেছিলেন, মাথা ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। শুধুমাত্র এক্সারসাইজ করি বলে আর হাঁটি বলে এখনও চলছি, লড়াই করে যাচ্ছি।”
এবার চোখ দিয়ে জল নয়, আগুন বেরোবে : মমতা

না এবার বৃষ্টিহীন ২১। ধর্মতলার শহীদ দিবস বৃষ্টিহীন! না এমন ছবি খুব একটা চোখে পড়েছে বলে মনে পড়ে না। তবে এবার ব্যতিক্রমী ২১ দেখল গোটা বাংলা। মঞ্চের সামনে ছাতা মাথায় সারি সারি মানুষের ভিড়। প্রতি বছর একুশের এটাই পরিচিত ছবি। তবে এবার? না। বৃষ্টি হল না একফোঁটাও। এই দিনে আকাশ জুড়ে ঝমঝম করে বৃষ্টি, তৃণমূল নেত্রীর কাছে যা ‘গুড লাক সাইন’। তবে এই ২১শে সেই পরিচিত বৃষ্টি না হওয়ার কারণ অবশ্য ব্যাখ্যা করলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, “এবার কেন বৃষ্টি হয়নি বলুন তো? এবার নতুন খেলা শুরু হয়েছে। চোখ দিয়ে জল নয়, এবার আগুন বেরোবে।” লক্ষ্য বিধানসভা নির্বাচন। আগামী বছরেই ফের ভোটাভুটি। একুশের মঞ্চ থেকে যেন ভোটের বাদ্যি বাজিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “এবার খেলায় বোল্ড আউট করতে হবে। একেবারে ছক্কা মারতে হবে।” সেকথা মেনে ভোট প্রস্তুতি যে সোমবার থেকেই শুরু করে দিতে বললেন তৃণমূল নেত্রী।
একুশের মঞ্চে বাঙালি অস্মিতায় শান মমতার

তবে কি বাংলা ভাষা বাঁচাতে নতুন করে ভাষা আন্দোলন? ২১শের মঞ্চ থেকে সেই ইঙ্গিত দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার বাইরে বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলায় কথা বললেই জুটছে ‘বাংলাদেশি’ তকমা। বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে এবার নতুন করে ঠিক সেই আন্দোলনেরই ডাক দিলেন বাংলার মু্খ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাংলা ভাষার উপর চলছে বিশাল সন্ত্রাস। কে কোন ভাষায় কথা বলবে, কে কী খাবে, তা নিয়েও বলে দেবে ওরা! জেনে রাখবেন, এখানে সবার অধিকার রক্ষিত হবে।” প্রয়োজনে নতুন করে ভাষা আন্দোলনের কথাও বললেন তৃণমূল সুপ্রিমো। শুধু বলেই ক্ষান্ত হলেন না। নিজের ভাষা রক্ষায় মঞ্চ থেকেই দলের জনপ্রতিনিধিদের নির্দিষ্ট কর্মসূচিও বেঁধে দিলেন। সব ভাষার মানুষকে নিয়ে শনি-রবিবার মিছিল-মিটিংয়ের কথা বললেন তিনি। মমতার কথায়, ”দলের সাংসদদের বলব, সমাজের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে ভাষা-শহিদ উদ্যানে ধরনায় বসুন।” ভাষা যখন রাজনীতির অঙ্গ, সেখানে বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি পিছু হটতে নারাজ রাজনীতিতে পোড় খাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকথা তিনি সোচ্চারেই উচ্চারণ করলেন। বললেন, ”একদম ছেড়ে দেবেন না। মনে রাখবেন, আমাদের রাজ্যে সকলে নিজের নিজের ভাষায় নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। আমরা সব ভাষাকে সমানভাবে সম্মান করি।” কিন্তু বাংলা ভাষা আর বাঙালির সম্মান পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করলেন তিনি।
“২৬শে ওদের দিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলাব”—২১শের মঞ্চ থেকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

এবার বিজেপিকে দিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শহীদ দিবসের মঞ্চে এসে প্রথমে ১৯৯৩ সালের ২১শে জুলাইয়ের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তৃণমূল কংগ্রেসের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড।’ শহীদদের নামের তালিকায় মাল্যদানের পর রীতিমতো হাঁটু মুড়ে প্রণাম জানান অভিষেক। এদিন শুরু থেকেই বিজেপিকে নিয়ে ‘অ্যাটাকিং মুডে’ ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালিদের নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে সরাসরি বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, “আগে জয় শ্রী রাম বলত। ঠেলায় পড়ে এখন রাম ছেড়ে জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা বলছে। ২৬-এর পর ওদের দিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলিয়ে ছাড়ব।” উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুর্গাপুরে জনসভা থেকে ‘জয় শ্রীরাম’-এর বদলে একাধিকবার ‘জয় মা দুর্গা- জয় মা কালী’ বলতে শোনা গিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে। এদিন নাম না করে এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকেও আক্রমণ করলেন অভিষেক। বাম-কংগ্রেস নয়, নিজের বক্তব্যর প্রথম থেকে শেষ এদিন বিজেপিকে আক্রমণ শানান ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। একুশের জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই কার্যত ছাব্বিশের সুর বেঁধে দিলেন অভিষেক। বুঝিয়ে দিলেন বাম-কংগ্রেস নয়, এই রাজ্যে যে বিজেপি তৃণমূলের এক ও একমাত্র শত্রু। আর তাই এদিনের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে গণতান্ত্রিকভাবে ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’ পাঠানোর ডাক দিলেন অভিষেক। তিনি বলেন, “বাংলার মানুষকে এরা ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চায়। বিজেপিকে প্রথম থেকেই আমরা বাংলাবিরোধী বলেছি। আজ থেকে ১৬-১৭ মাস আগে আমরা ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিলাম। তাতে স্লোগান ছিল, ‘জনতার গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন।’ সেই দিন আমরা যে ডাক দিয়েছিলাম, সেটা শুধু স্লোগান না। ওটা বিজেপির চরিত্র উন্মোচন। শুধু রাজনৈতিক স্লোগান নয়। বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে তাচ্ছিল্য করে, ময়দানে জিততে না পেরে নির্লজ্জের মতো গরিব মানুষকে মারার পরিকল্পনা করে। টাকা আটকে রাখে। ওদের একটাই পরিচয়, বাংলাবিরোধী।” ইতিমধ্যেই বিজেপি শাসিত রাজ্যে গুলোতে বাঙালিদের নির্যাতনের অভিযোগ আসছে জানিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে তৃণমূল নেত্রীকে। এদিনের একুশের সভা থেকেও তা নিয়ে আওয়াজ তুললেন অভিষেক। ভিন রাজ্যে বাংলা বললে হেনস্তা নিয়ে সরব হলেন তিনি। বললেন, “বাংলায় কথা বললে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন বাংলাদেশি। ১৫ দিন হয়ে গেল কী ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রের সরকার? গর্ব করে বাংলায় কথা বলব। লোকসভায় আমরা এই সেশনে দরকারে বাংলায় কথা বলব। আগে ১০বার বলতাম, এবার ৫০০ বার বলব। তোমাদের কথায় বাংলা উঠবে বসবে?” তাঁর কথায়, বিজেপি বাংলায় মাটি শক্ত করতে পারেনি বলেই এখানকার বাসিন্দাদের উপর হেনস্তার ছক। তিনি বলেন, “বাংলায় ভোটে জিততে না পেরে এই ধরনের চক্রান্ত শুরু করেছে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে, ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে, এজেন্সিকে কাজে লাগিয়েও বাংলায় জিততে পারেনি বিজেপি। তাই এগুলো করছে।” এরপরই ২৬ সালে বাংলা থেকে বিজেপিকে উৎখাত করার ডাক দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন,”আমি ভবিষ্যতবাণী করি না। কিন্তু করলে ভেবেচিন্তে বলি। যে কটা আবর্জনা রয়েছে তাদের ঝেঁটিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলতে হবে। আমি ২১শে খেলা হবে বলেছিলাম, এবার পদ্মফুল উপড়ে ফেলার ডাক দিলাম।” এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, “একদিকে ইডি লাগিয়ে বিরোধী নেতাদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে।’ চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক বললেন, “মেরুদণ্ড বিক্রি করব না।”