কোচবিহারে শুভেন্দু অধিকারীর বিক্ষোভ সমাবেশের দিনই, পাল্টা সভা করবে তৃণমূল

২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ সমাবেশের পাল্টা উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপির যুব মোর্চা। সেখানে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মঞ্চ থেকেই আগামী ৪ঠা আগস্ট ৬৫ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে কোচবিহার অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু। কোচবিহারে দলীয় নেতা নিখিল দে, বরেন বর্মণ ও সুখেন বর্মণ খুনের ঘটনায় ওইদিন কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার শুভেন্দুর ওই সভার দিনই তৃণমূলের তরফে পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিলেন কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। তিনি জানিয়েছেন এখন থেকে জেলায় বিজেপির যতগুলো সভা হবে তৃণমূলও তার পাল্টা হিসাবে ওই একই দিনে সভা করবে। এছাড়াও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো আগামী ২৬শে জুলাই ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর নিপীড়নের প্রতিবাদে গোটা কোচবিহার জেলা জুড়ে বাংলা ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এই সমস্ত কর্মসূচিতে কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব সহ দলের কর্মী-সমর্থকরাও উপস্থিত থাকবে। এছাড়াও বক্সীরহাট আসাম-বাংলা রাজ্য সীমান্তে, আসাম সরকারের বিরোধিতা করে একটি বিক্ষোভ সভারও ডাক দিয়েছেন অভিজিৎ বাবু। সেই অনুষ্ঠানে দিনহাটার চৌধুরীহাট এলাকার উত্তম কুমার ব্রজবাসীকে সাথে রাখার কথাও স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। যে উত্তম ব্রজবাসীকে আসাম সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। তাই নিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এমনকী তাকে নিয়ে নিজের সোস্যাল সাইটে আসাম সরকারকে রীতিমত তুলোধনা করেন তিনি। এবার সেই উত্তম ব্রজবাসীকে নিয়ে যে আসরে নামতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস, তা এদিন কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের কথাতেই স্পষ্ট।
তৃণমূলের সভাকে ডিস্টার্ব করতে শুভেন্দুর উত্তরকন্যার ডাক : শতাব্দী রায়

তৃণমূলের শহীদ দিবসকে ডিস্টার্ব করতে শুভেন্দুর পাল্টা সভা বলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। তৃণমূলের শহীদ দিবসের দিন উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপির যুব মোর্চা। যে সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে রীতিমতো রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে। তবে তৃণমূলের শহীদ দিবসের দিনই শুভেন্দু অধিকারীর ডাকা এই উত্তরকন্যা অভিযানকে তীব্র আক্রমণ করলেন বোলপুরের সাংসদ শতাব্দী রায়। সোমবার ধর্মতলায় শহীদ মঞ্চে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ করে বোলপুরের সাংসদ বলেন, “একুশে জুলাই বহু বছর ধরে হয়ে আসছে, এটা একটা আবেগ। উনি নিজে যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন নিজে এই সভায় বক্তব্য রেখেছেন। তাই আজ হঠাৎ করে দল-বদলে একই দিনে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়ে কার্যত একুশে জুলাই-এর কর্মসূচিকে ডিস্টার্ব করতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী।” পাশাপাশি এদিন তিনি আরও বলেন, “এভাবে কোনও কিছুর পাল্টা ডাক দিয়ে সফলতা আসে না, মানুষ সব দেখছে সব বুঝছে। এটা ওনার মনে রাখা উচিত পালটা ডাক দিয়ে আসলে উনি তৃণমূলের আবেগকেই আঘাত করলেন।”
আবারও বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ। নাম না করে শুভেন্দুকে খোঁচা

আবারও বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ। ২১শে জুলাই নিজের খাস তালুক খড়গপুর শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রীতিমত বোমা ফাটালেন বিজেপির প্রাক্তন এই রাজ্য সভাপতি। বেশ কিছু বছর ধরে দলে কোণঠাসা তিনি। বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে তাঁর জন্যও চেয়ারও বরাদ্দ থাকে না বলে কয়েকদিন আগে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছিলেন তিনি। এমনকী বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের শুভেচ্ছাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানেও তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ডাক পাননি দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাতেও। এরপরই দিলীপ ঘোষের তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে যোগদান নিয়ে রহস্য ক্রমশ দানা বাঁধে বিজেপির অন্দর এবং বাইরে। দিলীপ ঘোষ নিজেও কিছুটা সাসপেন্স রেখে বলেছিলেন তিনি ২১শে জুলাই কোনও না কোনও সভায় থাকবেন। এরপরেই জল্পনা আরও বাড়ে। আজ খড়গপুরে বিজেপির শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় যোগ দিয়ে, নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে একহাত নিলেন দিলীপ ঘোষ। গেরুয়া শিবিরের এই প্রাক্তন সাংসদ কড়া ভাষায় জানিয়ে দিলেন, “আমি কি ঘেয়ো কুকুর নাকি যে সকাল-সন্ধ্যা এ বাড়ি, ওই বাড়ি ঘুরে বেড়াব? যারা নিজেরা এই দল, ওই দল ঘুরে বেড়ায়, তারা এই ধরনের প্রচার করে। বিজেপি কর্মীরা বিক্রি হন না। মারলে রাজ্য ছাড়া হতে পারে, কিন্তু ঝান্ডা ছাড়া নয়।” ধর্মতলায় তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের শহীদ দিবসের পাল্টা হিসাবে ‘শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলি’র ডাক দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছরে তৃণমূলের রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছে বিজেপির কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। প্রয়াত সেইসব বিজেপি কর্মীদের স্মরণে আজ জেলায় জেলায় কর্মসূচি পালন করছে গেরুয়া শিবির। আজ খড়গপুরের সভা থেকে তৃণমূলকে পাল্টা কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি দিলীপ ঘোষ। তাঁর স্পষ্ট দাবি, “বিজেপি ২১শে জুলাই ‘শহীদ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ সভা করছে এটা কি কোনও চমক নয়? তৃণমূল তো এতদিন এই দিনটাকে নিজেদের একটা বাৎসরিক অনুষ্ঠানে পরিণত করে ফেলেছে। পিকনিকের আবহে ডিম-ভাতের প্রোগ্রাম চলে। কিন্তু আমরা মনে করি, শহীদ তো আমাদের কর্মী-সমর্থকরা হয়েছে। যে শহীদদের নিয়ে তৃণমূলের এত নাটক, তারা তো কংগ্রেসের। তৃণমূলের সঙ্গে ওদের কী সম্পর্ক? বিজেপির বহু কর্মী এই বাংলায় রাজনৈতিক লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন। তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতেই আজকের সভা। তবে আমার মনে হয় তৃণমূল এবার নিজেরাই শহীদ হয়ে যাবে।”
২১ শে পাল্টা কর্মসূচির ডাক শুভেন্দুর, ” গুরুত্বহীন ” মন্তব্য মমতার

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: ২১ জুলাই তৃণমূলের শহীদ দিবসের দিনই পাল্টা রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কলকাতার কসবা ল কলেজ সহ রাজ্যে একাধিক ধর্ষনের ঘটনা নিয়ে ” কন্যা সুরক্ষা যাত্রা ” নামে একটি কর্মসুচি নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তারই অঙ্গ হিসাবে তৃণমূলের সমাবেশের দিনই বিজেপি বিভিন্ন জেলা জুড়ে পদযাত্রা এবং উত্তরবঙ্গের উত্তরকন্যায় প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন। তবে, ২১ শে জুলাই একই দিনে বিরোধী দলনেতার এই কর্মসূচিকে যে তিনি খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না তা স্পস্ট করে দিয়েছেন খোদ তৃনমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা এই ধরনের কর্মসূচিকে তুচ্ছ বলে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন “এটি কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। এগুলিতে মনোযোগ দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই,” সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শহীদদের সম্মান জানানো এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও সফল অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা। ” তিনি পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে, মূখ্যমন্ত্রী ভারতের অন্যান্য রাজ্যে তাদের মাতৃভাষা বলার কারণে বাঙালিদের হয়রানির সম্মুখীন হওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। “কেউ কেবল বাংলা বলার জন্য আক্রমণের শিকার হলে তা অগ্রহণযোগ্য,” তিনি বলেন। মুখ্যমন্ত্রী তার মন্ত্রীদের স্থানীয় পর্যায়ে বিক্ষোভ আয়োজন করতে এবং ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক সম্মান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বলেন। “অন্যান্য রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ পশ্চিমবঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বাস করে, এবং আমরা সর্বদা তাদের মর্যাদার সাথে স্বাগত জানিয়েছি,” ব্যানার্জি বলেন। “কিন্তু ভারতের অন্যান্য অংশে কর্মরত ২২ লক্ষেরও বেশি বাঙালি বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছেন। এটি চলতে পারে না।” কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে সরকার হয়তো এই ঘটনাগুলির প্রতিবাদে আরও বৃহত্তর প্রচারণার প্রস্তুতি নিচ্ছে, কেবল প্রশাসনিক মাধ্যমে নয় বরং সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও, যার লক্ষ্য বাংলা ভাষা এবং পরিচয় রক্ষা করা।
“হিন্দুরা অস্ত্র তৈরী রাখুন।”: শুভেন্দু

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক:- এবার হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার নিদান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। সোমবার খেজুরির জনকা থেকে বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ র্যালির ডাক দেয় বিজেপি। সেই প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দেন শুভেন্দু। সেখানেই হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার কথা বলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এদিন তিনি বলেন, ” ভাইপো গ্যাং ও মমতা খালার বিশেষ সম্প্রদায়ের শান্তির ছেলেদের বাঁচাতে হিন্দু হত্যা করে এখন গল্প গল্প তৈরি করছে পুলিশ। এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে গঙ্গার উপরে আমাদের যেতে হবে। হিন্দুদের বলবো কাঁচা বাঁশের লাঠিতে তেল মাখিয়ে তৈরি থাকুন আরো বেশি এই ধরনের লাঠি বানান। হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করুন।” উল্লেখ্য গত শুক্রবার এই খেজুরিরই জনকাতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় সুজিত দাস ও সুধীরচন্দ্র পাইকের। যা নিয়ে দুই পরিবারেরই বক্তব্য ছিল বিষয়টি পরিকল্পিত খুন। একই দাবি নিয়ে সোমবার বনধ ডাক দেয় বিজেপি। এদিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন বিরোধী দলনেতা। বলেন, ” ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য সব ধরনের আইনি সহযোগিতা আমি দেব। কি করে বিচার পাওয়া যায় আপনাদের বিরোধী দলনেতা সেটা খুব ভালো করে জানে।” পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে বিধান সভায় তৃনমূলকে সাফ করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে শুভেন্দু বলেন,” নন্দীগ্রাম-খেজুরির লোককে যতো জেল খাটাবেন তত ঐক্যবদ্ধ হবে। মনে রাখবেন ২০২১ সালে পূর্ব মেদিনীপুর নরেন্দ্র মোদীকে ৪৪ শতাংশ ভোট দিয়েছিল। ২০২৪ সালে ভোট দিয়েছিল আর ২০২৬ এ ৫১ শতাংশ ভোট আজ 16 টা বিধানসভাই আমরা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেব।” এমনকি তৃণমূলের সংখ্যালঘুদের হাতে আগামী দিনে তৃণমূলেরই হিন্দুরা খুন হবে পারেন বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।