মামলা জয়ী শুভেন্দু, মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ হাই কোর্টের

নির্বাচনের আগেই শুভেন্দু অধিকারির(Suvendu Adhikari) কাছে হার বিধানসভা স্পিকার কথা তৃণমূল নেতা বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Biman Banerjee)। হাই কোর্টের রায়ে জয়ী হলেন শুভেন্দু অধিকারি(Suvendu Adhikari) ও অম্বিকা রায়(Ambika Roy)। নির্বাচনের আগে এই জয় যে শুভেন্দুকে বাড়তি অক্সিজেন যোগাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বৃহস্পতিবারই দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বিধায়ক পদ খোয়ালেন মুকুল রায়(Mukul Roy)। ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে এই প্রথমবার কেউ দল বিরোধী কাজের জন্য বিধায়ক পদ খোয়ালেন। মুকুল রায়(Mukul Roy) ২০২১ সালের জুন মাসে বিজেপি(BJP) থেকে তৃণমূলে(TMC) ফিরে গিয়েছিলেন। এরপরই তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করেছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সেই কমিটির চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন মুকুল রায়। সেই সময়ই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ছিলেন বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারি(Suvendu Adhikari) এবং বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। মুকুল রায়ের(Mukul Roy) বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ এনে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজেরই আবেদন করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারি। দীর্ঘদিন ধরেই এই মামলাটির শুনানি হচ্ছিল হাই কোর্টে। বর্তমানে মামলাটি যায় বিচারপতি দেবাংশু বসাক(Debangshu Basak) এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির(MD Shabbar Rashidi) ডিভিশন বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার তারাই মুকুল রায়ের বিধায়র পদ খারিজের রায় দিয়েছেন। আর এই ঘটনাকে অনেকেই নির্বাচনের আগে বিজেপির নৈতিক জয় হিসাবেও দেখছেন। শুধুমাত্র তাই নয় শুভেন্দু অধিকারির নেতৃত্বাধীন বিজেপি যে নির্বাচনের আগে নতুন অস্ত্রও পেয়ে গেল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিন মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের পাশাপাশি, তাঁকে যে পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্তও ত্রুটিযুক্ত, তাও এদিনে খারিজ করে দিয়েছে দেবাংশু বসাক ও শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ।
মালদায় পৌঁছেই তৃণমূলকে নিশানা শুভেন্দুর

মালদায়(Maldaha) দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দিতে গিয়েই বিস্ফোরক রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি(Suvendu Adhikari)। আসন্ন নির্বাচনে নাকি আগামী দিনে তৃণমূলকে(TMC) শূন্য করে দেওয়ার হুঙ্কার শুভেন্দু অধিকারির(Suvendu Adhikari)। সেইসঙ্গে সিএএ নিয়েও সুর চড়ালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাঁর সাফ জবাব বাংলাদেশ থেকে আসা সিএএ-র(CAA) নিয়ম মেনে নাগরিকত্ব দেবে বিজেপি সরকার। ইতিমধ্যেই এসআইআরের দামাম বেজে গিয়েছে। সেখানেই শুভেন্দুও সুর চড়াতে শুরু করেছে। গত শুক্রবারই হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ হারিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারি(Suvendu Adhikari)। একইসঙ্গে অবশ্য ১৫ টি মামলা থেকে অব্যহতিও পেয়েছেন তিনি। এরপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপান উতোর। শুভেন্দুকে যেমন আক্রমণ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব, তেমনই পাল্টা দিচ্ছে বিজেপিও। এরই মাঝে মালদায় গিয়ে শুভেন্দু অধিকারির বিরাট হুঙ্কার। শনিবার দুপুরে স্পেশাল ট্রেনে করে ওল্ড মালদা স্টেশনে নামেন ,দক্ষিণ দিনাজপুরের দলীয় কর্মসূচিতে যোগদান করার উদ্দেশ্যে তিনি এই স্টেশনে নামেন। শুভেন্দু অধিকারীর স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই মালদা জেলার বিজেপি নেতৃত্ব এবং দলীয় কর্মীরা দলীয় পতাকা নিয়ে নেতাকে অভিনন্দন জানান এবং এবং ফুলের তোড়া এবং উত্তরীয় পরিয়ে নেতা কে বরণ করেন। ওল্ড মালদা স্টেশনে নেমেই বিজেপির বিরোধী দলনেতা। সেখানে পৌঁছেই শুভেন্দু অধিকারির মুখে সিএএ নিয়ে কথা। শুভেন্দু অধিকারী জানান, যারা পূর্ববঙ্গ থেকে অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে এসেছেন তাদের কোন ভয়ের কারণ নেই শুধু তাদের সিএএ তে আবেদন করতে হবে, নাগরিকত্ব দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের ,অন্যদিকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি মালদায় ছটি আসন দিয়ে শুরু করবে বিজেপি আসন বাড়তে পারে এবং তৃণমূল শূন্য হয়ে যেতে পারে এমনটাই দাবি করেন।
নির্বাচনের আগে অস্বস্তিতে শুভেন্দু, মামলা খারিজ হলেও রক্ষরকবচ হারালেন বিরোধি নেতা

নির্বাচনের আগেই বড় ধাক্কা খেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি(Suvendu Adhikari)। শুভেন্দু অধিকারির অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ প্রত্যাহারের রায় দিলেন হাই কোর্টের(Calcutta High court) বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এর ফলে শুবেন্দু অধিকারির(Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে এফআইআর করতে আর কোনওরকম বাধা থাকল না। বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাইকোর্টের এই রায় যেমন শুভেন্দু অধিকারির অস্বস্তি অনেকটাই বাড়াল, তেমনই এটা যে শাসক দলের কাছে নির্বাচনের আগে বড়সড় অস্ত্র হয়ে উঠল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০২২ সাল থেকে হাইকোর্টের থেকে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারি(Suvendu Adhikari)। অর্থাৎ হাই কোর্টের নির্দেশ ছাড়া শুভেন্দু অধিকারির বিরুদ্ধে কোনওরকম মামলা এবং এফআইআর করা যাবে না। আর তাতেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনওরকম মামলার তদন্ত করাও যাচ্ছিল না। হাই কোর্টের এই রায়ে আপাতত সেই রাস্তা খোলা। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এই রায়ের ফলে রাজ্য সরকার এবং সিবিআইকে যৌথভাবে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল(সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর স্পষ্ট বক্তব্য যে কোনও অন্তর্বর্তীকালীন রায় এমনভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারে না। সেই কারণেই এই রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারির বিরুদ্ধে এদিন ১৫ মামলাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারি বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই তিনি অভিযোগ করতে শুরু করেছিলেন যে তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র চলছে। শুধুমাত্র তাই নয় তাঁর বিরুদ্ধে নাকি একের পর এক এফআইআর দায়ের করা হচ্ছে। সেই সবগুলোকেই তিনি ভুয়ো আখ্যা দিয়ে দুবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এরপরই হাইকোর্টের তরফে ২০২২ সালে অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারি। এতদিন সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে কোনওরকম মামলা বা এফআইআর করতে পারছিলেন না কেউ। হাইকোর্টের এই নতুন রায়ের ফলে সেই রাস্তাই এবার খুলে গেল।
স্পিকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুভেন্দু অধিকারীর

বিধানসভার ভিতর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবেশ নিয়ে এবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্ট অবমাননার মামলা দায়ের করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীরই(Suvendu Adhikari) করা এক মামলায় কলকাতার হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিধানসভার আইনের উল্লেখ করে বলেছিলেন, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে বিধানসভায় প্রবেশ করা যায় না। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে বিধানসভায় প্রবেশ করায় ফের একবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু(SuvenduAdhikari)। কেননা গত ১লা সেপ্টেম্বর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় একটি নির্দেশিকা জারি করেন, সেখানে তিনি স্পষ্ট জানান— ‘মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া আর কোনও মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা বিধানসভায় ঢুকতে পারবেন না।’ এক্ষেত্রে শুভেন্দুর(Suvendu Adhikari)দাবি, স্পিকার মুখ্যমন্ত্রীর রক্ষীদের বিধানসভায় প্রবেশের অনুমতি দিয়ে আদালতের নির্দেশকে অবমাননা করেছেন। শুভেন্দুর(Suvendu Adhikari) পক্ষের আইনজীবীর মন্তব্য— “স্পিকার জানিয়েছিলেন বিধানসভায় কোনও বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষীর প্রবেশের অধিকার নেই। তারপরেও বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে প্রবেশ করেছেন, যা আদালত অবমাননার সমান।” সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে বিধানসভায় প্রবেশের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, তৃণমূল বিধায়কদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে বিধানসভা এলাকার মধ্যে প্রবেশ করার অনুমতি রয়েছে। অথচ বিজেপি বিধায়কদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের ভিতরে ঢোকার অনুমতি নেই। তাঁদের বিধানসভার বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। যদিও সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করেনি। তবে বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিধানসভার আইনের উল্লেখ করে সবার ক্ষেত্রেই সমান ভাবে নিয়ম বলবৎ করার নির্দেশ দেন, পাশাপাশি বিধানসভার সচিবকে তা নিশ্চিত করার কথাও জানান। শুভেন্দুর তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে আদালতকেই অবমাননা করেছেন। সকলের জন্য সমান নিয়ম তিনি বলবৎ করেননি। এই মামলার প্রমাণ হিসাবে ওইদিনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের দাবিও জানান শুভেন্দুর পক্ষের আইনজীবীরা। আগামী সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি হতে পারে। সবে রাজ্যে বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে ততই যে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও তীব্র হচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিধানসভায় ধুন্ধুমার, বিজেপিকে ‘চোর’ আখ্যা মমতার, সাসপেন্ড পাঁচ বিজেপি বিধায়ক

বৃহস্পতিবারও ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করার কথা ছিল। সেই মতো দুপুর ১২টা নাগাদ শুরু হয় অধিবেশন। এর আগে গত মঙ্গলবার শঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সাসপেন্ড হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মতো তিনি আজ বিধানসভা কক্ষে ছিলেন না। বিজেপির হয়ে মুখ্য সচেতক ছিলেন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ও বাঙালি ইস্যুতে সরাসরি বিজেপির বিজেপিকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘চোরেদের সরকার’ বলে আখ্যা দেন। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা কক্ষ। রীতিমত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিজেপি বিধায়করা পাল্টা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই ‘চোর চোর’ শ্লোগান তুলতে থাকেন। এর পরেই সাসপেন্ড করা হয় বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে। বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীরা শঙ্কর ঘোষকে টেনে বের করার চেষ্টা করলে বিজেপির অন্যান্য বিধায়কদের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। এরপর দু ঘণ্টার মধ্যে সাসপেন্ড হন বিজেপির পাঁচজন বিধায়ক। যদিও তৃণমূল বিধায়করা নিজেদের আসনে বসেই সবটা দেখেছিলেন। এদিন অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে বক্তব্য রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তাঁর আগে বলার কথা ছিল বিজেপির অগ্নিমিত্রা পলের। কিন্তু স্পিকার তাঁর নাম ডাকলেও তিনি সভাকক্ষে উপস্থিত না থাকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ডাকা হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই অগ্নিমিত্রা পল সভাকক্ষে ঢোকেন। তখন বিজেপি বিধায়করা চিৎকার করতে থাকেন, যাতে অগ্নিমিত্রাকে বলতে দেওয়া হয়। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই স্পিকারকে বলেন বিজেপি বিধায়ককে বলতে দেওয়ার জন্য। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় যেহেতু তিনি উপস্থিত ছিলেন না, তাই তাঁর জন্য বরাদ্দ সময় কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়। তারপর আবারও মুখ্যমন্ত্রী বলতে শুরু করেন। তখনই বিজেপির তরফ থেকে পাল্টা শ্লোগান তোলা হয়। স্পিকার বারণ করা সত্ত্বেও থামেননি বিজেপি বিধায়করা। এরপরই প্রথমে শঙ্কর ঘোষ। তার পর সাসপেন্ড করা হয় অগ্নিমিত্রা পাল। এরপর একে একে মিহির গোস্বামী, অশোক দিন্দা, বঙ্কিম ঘোষকেও সাসপেন্ড করা হয়। মিহির গোস্বামীকে কার্যত চ্যাংদোলা করে বার করা হয় বিধানসভা কক্ষ থেকে। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এই ঘটনার জন্য সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই আঙুল তুলে বলেন, “স্পিকার মমতার দালাল, মমতার নির্দেশেই এই নাটকের চিত্রনাট্য লিখেছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।” পাশাপাশি বিজেপিকে মুখ্যমন্ত্রী ‘চোর’ বলায়, তার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শুভেন্দু বলেন, “মমতা সবচেয়ে বড় চোর। ও চাকরি চুরি করেছে, আর ভাইপো টাকা নিয়েছে। পিসি-ভাইপো মিলে প্রশ্ন ফাঁস করে বিক্রি করেছে। তার অডিও প্রমাণও আমার কাছে আছে।” তারপরই মমতার নাম ধরেই শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, “ওকে নন্দীগ্রামে হারিয়েছি, ভবানীপুরেও হারাব।” পাশাপাশি এদিনের ঘটনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আরও একবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, যাতে তাঁর বক্তব্য মানুষ শুনতে না পায় সে কারণেই বিজেপি পরিকল্পনা করেই এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তিনি বলেন, “আমি ধিক্কার জানাচ্ছি। এরা জেনেশুনেই, আমার কথা যাতে মানুষ শুনতে না পারে, আমার কন্ঠরোধ করার জন্যই ওদের এই কর্মসূচি। সকালে কিন্তু ওরা ছিল না। ওরা এসেছে, আমি আসার কিছুক্ষণ আগে। যখন নাম ডেকেছে, ওরা কিন্তু তখন বক্তব্য রাখেনি। যেই নিজেদের বলা হয়ে গিয়েছে, ওমনি অশান্তি। আমি বলবই, আমার কন্ঠরোধ করা যাবে না।” এরই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালিদের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার পর একটা দল, যাদের দেশ স্বাধীন করার পিছনে কোনও ভূমিকা ছিল না, তারা এখন দেশের সবথেকে বড় ডাকাত। মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করেন। ব্রিটিশদের সঙ্গে মিশে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। সাম্প্রদায়িক বিভাজন করেছিল। আগামী দিন বিজেপির কেউ নির্বাচিত হবেন না। স্বৈরাচারী শক্তি। যে বাঙালি দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে, সেই বাঙালিদের এরা অপমান করছে। এরা বাঙালির শত্রু।” সব মিলিয়ে রাজ্য বিধানসভা ভোটের আগে কেউ যে কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছেড়ে দিতে রাজি নয়, তা আজকের ঘটনায় স্পষ্ট। এরপর ভোট যত এগোবে ততই এই রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
বাংলা ও বাঙালি ইস্যুতে বিধানসভা উত্তাল, আবারও সাসপেন্ড শুভেন্দু অধিকারী

ভিন রাজ্যে বাংলা এবং বাঙালিদের উপর হেনস্থার প্রতিবাদে এর আগেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী এই ইস্যুতে মহানগরীর রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। এবার এই ইস্যু নিয়ে মঙ্গলবার প্রস্তাব পেশ করা হল বিধানসভায়। মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এই প্রস্তাব পেশ করার সময় প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের এক শিশুর উপর অমানবিক অত্যাচারের ঘটনা। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি বিধায়করা ‘আহা রে’ বলে ব্যঙ্গ শুরু করেন। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। আলোচনা পরবর্তীকালে বিস্তারিত রূপ নিলে বিভিন্ন বিজেপি বিধায়ক ‘মোদি’ ‘মোদি’ বলে স্লোগান শুরু করেন। এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ফিরহাদ হাকিম ‘জয় বাংলা’ রব তোলেন। বলাবাহুল্য, অধিবেশন কক্ষে এদিন বাংলা ও বাঙালি ইস্যুতে প্রস্তাব পেশ করার সময় রীতিমত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবারে বাঙালি হেনস্থা নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করার সময় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় উল্লেখ করেন কয়েক মাস আগে দিল্লির বুকে ঘটে যাওয়া সেই মর্মান্তিক ঘটনার কথা। তাঁর অভিযোগ, দিল্লি পুলিশের এক কর্মী এক পরিযায়ী শ্রমিকের শিশুকন্যাকে শারীরিক নিগ্রহ করেন। এমনকি তাঁকে মারধোরের অভিযোগও ওঠে। এই প্রস্তাবের সময় বিরোধী দলের বেঞ্চে দেখা যায় বিভিন্ন ‘অভব্য’ আচরণ। ব্যঙ্গ করে ‘আহা রে’ বলে ধ্বনি তুলতেও শোনা যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শশী পাঁজা বলেন, “চুপ করে থাকো তোমরা। তোমরা অসভ্য, অসভ্যতা করছো।” এই ধমকে সাময়িকভাবে চুপ হয় বিজেপি বিধায়করা। গত কয়েকমাস ধরেই দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, গুজরাত, তেলেঙ্গানা ও ওড়িশা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই খবর সামনে আসছিল যে, বাংলায় কথা বললে ‘বাংলাদেশি’ বলে তকমা দিয়ে আটক করছিল সেখানকার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। আজ বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীন এই বিষয় উল্লেখ করে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বাংলাদেশি নই, আমরা ভারতীয় বাঙালি।” এই আলোচনা পরে বিশদে পর্যালোচনা করার সময় উঠে আসে বিভিন্ন মনীষীদের কথা এবং তাঁদের অবদান। যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ক্ষুদিরাম বসুর কথা বিশেষভাবে তুলে ধরেন তৃণমূল মন্ত্রীরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিজেপি বিধায়কদের বিরোধিতা অব্যাহত থাকে। এই বাংলা বিরোধী বিজেপির বিরোধিতাকে ব্রিটিশদের সঙ্গে তুলনা করেন তৃণমূল কংগ্রেস। সব মিলিয়ে বাংলা ও বাঙালিদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ হওয়া নিয়ে রীতিমত সরগরম হয়ে ওঠে তৃণমূল ও বিজেপি যুযুধান দু পক্ষই। এমনকী বিধানসভায় এদিন গতকালের মেয়ো রোডে সেনাবাহিনীর তৃণমূলের সভামঞ্চ খুলে ফেলার প্রসঙ্গও উঠে আসে। আর সেসময় সেনার পক্ষেই স্লোগান তুলতে শোনা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এমনকী মোদীর নামেও ওঠে জয়ধ্বনি। এই ঘটনার জেরে রীতিমত উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা কক্ষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সাসপেন্ড করেছেন বলেই দাবি করেন শুভেন্দু। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে এসে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, “আমাকে আবারও সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেনার হয়ে বলার জন্য সাসপেন্ড হতে হয়েছে। আমি সেনার জন্য গর্ব অনুভব করি।”
শুভেন্দু গড়ে ফুটল ঘাসফুল, খাতা খুলতেই পারল না বিজেপি-সিপিএম জোট

নন্দীগ্রাম সমবায় ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পেল তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার নন্দীগ্রাম ১নম্বর ব্লকের গড়চক্রবেড়িয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন বোর্ড নির্বাচনে সিপিএম ও বিজেপি জোটকে কার্যত ধরাশায়ী করল শাসক শিবির। ১২টি আসনের সবকয়টি আসনে জয়ী হল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাস তালুকে এই জয় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ তৃণমূলের কাছে। স্থানীয় বেশ কিছু সমবায়ে বিজেপি জয় পেলেও, নন্দীগ্রাম ১নম্বর ব্লকের গড়চক্রবেড়িয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তৃণমূল নিজেদের দখলে রেখেছে। এই জয়ের ফলে আগামী ৫ বছর আবারও এই সমবায় সামলাবে শাসক শিবির। এই সমবায় ভোটে ৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি ও বাম জোট। তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছিল ১২টি আসনেই। স্বাভাবিকভাবে ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩টি আসনে এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বাকি ৯ টি আসনে ভোট হয়। সেই ৯ টি আসনে প্রত্যেকটিতে ১০ থেকে ১৫ টি করে ভোট পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল। এই ভোট গ্রহণ কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পুলিশি তৎপরতা ছিল তুঙ্গে।
বঙ্গ বিজেপিকে চাঙ্গা করতে আজ দমদমে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী

আজ অর্থাৎ শুক্রবার বঙ্গ সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মোদীর এই ঝটিকা সফর। আজ বিকেলেই তিনি পা রাখবেন কলকাতায়। বিমানবন্দর থেকে নেমে প্রথমে যশোর রোড মেট্রো স্টেশনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই নোয়াপাড়া থেকে জয় হিন্দ বিমানবন্দর পর্যন্ত নতুন মেট্রো লাইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তিনি। সেখানে বঙ্গ বিজেপির তরফ থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য সহ বিজেপির একাধিক রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিত থাকার কথা। এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ থাকলেও, তাঁর না যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। যশোর রোড মেট্রো স্টেশন থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড, বেলেঘাটা থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবার উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রীর। শুক্রবার যশোর রোড স্টেশন থেকে মেট্রো চড়ে তিনি জয় হিন্দ বিমানবন্দর স্টেশন পর্যন্ত যাবেন। আবার ওই পথেই মেট্রো ধরে ফিরবেন যশোর রোড স্টেশনে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করারও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির পালে হাওয়া তুলতে প্রশাসনিক কর্মসূচির পাশাপাশি দমদমে রাজনৈতিক সভাও করবেন করবেন। মেট্রোর উদ্বোধন পর্ব সেরে দমদম সেন্ট্রাল জেলের মাঠে প্রথমে প্রশাসনিক সভা এবং তারপর দলীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সভা থেকে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে চাঙ্গা করতে কী বার্তা দেন তিনি, তা নিয়ে সকলের মধ্যেই কৌতূহল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে এয়ারপোর্ট থেকে গোটা দমদম চত্বর। দুপুরের পর থেকে শহরের একাধিক জায়গায় যানচলাচলও নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। যদিও এদিকে বাংলায় ঘূর্ণাবর্ত এবং মৌসুমী অক্ষরেখার অতিসক্রিয়তার প্রভাবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আগাম পূর্বাভাস দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। এমনকী শুক্রবারও কোনও কোনও জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও রয়েছে। তবে শুধু বৃষ্টি নয়, বৃষ্টির পাশাপাশি কোনও কোনও জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার দাপটও দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি আজ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও রয়েছে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরের দিন মোদীর রাজনৈতিক সভা ঘিরে দলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় বাড়ানোটাও বিজেপির রাজ্য নেতাদের কাছে নিঃসন্দেহেই বড় চ্যালেঞ্জ।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দুর

নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে ভোটের বৈতরণী পেরোতে চাইছে বিজেপি— এমন অভিযোগ তুলে ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলের সাংসদরা গত কয়েক সপ্তাহ জুড়ে সংসদ এবং সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এমনকী কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও ২০২৪ সালের ভোটার লিস্ট ধরে ধরে বারাণসী সহ একাধিক কেন্দ্রের ভোট কারচুপির তথ্য সামনে আনছেন। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা দেশজুড়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘ভোট চোর’ শ্লোগান তুলছেন বিরোধীরা। এই আবহে এবার বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধেই পাল্টা ভোট চুরির অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগের তির ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে থেকে জয়ী তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। ২০২৪ লোকসভা ভোটে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে রেকর্ড ৭ লক্ষ ১০ হাজার ভোটে জিতেছেন অভিষেক। এবার এই জয়ের ব্যবধান নিয়েই সরব হল রাজ্য বিজেপি। প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিপুল মার্জিনের জয় নিয়ে এর আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর। তিনি রীতিমত সাংবাদিক সম্মেলন করে ডায়মন্ড হারবারে লক্ষ লক্ষ ভুয়ো ভোটার আছে বলে দাবি করেছিলেন। যদিও তারপরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিনিধি মারফত অনুরাগ ঠাকুরের বাড়িতে সমস্ত তথ্য সম্বলিত ভিডিয়ো ডেটা পাঠিয়েছিলেন। রাজ্যে এসআইআর নিয়ে টালবাহানার মধ্যে আবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সম্প্রতি বিজেপির এক সভা থেকে তিনি মন্তব্য করেন, “তিনি নাকি ৭ লক্ষ ভোটে জিতেছেন। জানেন, ৯০০-র বেশি বুথে সেলোটেপ লাগানো ছিল। প্রতি বুথে ৮ জন করে পোলিং এজেন্ট, আর বাইরে ছিল জাহাঙ্গির বাহিনী। আপনি যদি গিয়ে ভিতর থেকে চিৎকার করেন, যে আমি পদ্মফুল বা অন্য কোনও প্রতীক খুঁজে পাচ্ছি না, তাহলে আপনি যখন বুথ থেকে বেরোবেন, তখনই মারবে। আবার যদি নাও টেপেন, শব্দ না হয়, তাও মারবে। এই করে সাত লক্ষ ভোটে জিতেছে।” সব মিলিয়ে অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই উত্তাপ যে আরও বাড়বে তা এখনই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
শুভেন্দু গড়ে ঘাসফুল ফোটাতে মরিয়া অভিষেক, তমলুক ও বারাসত নিয়ে আজ বৈঠকে বসছেন

বর্তমানে সংসদে তৃণমূলের চিফ হুইপের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে স্বভাবতই ব্যস্ততা বেড়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু তার মধ্যেও ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে নতুন করে দলের সংগঠন সাজাতে তৎপর তিনি। আর সেই উদ্দেশ্যেই প্রতি সপ্তাহে এক একটা জেলা ধরে ধরে তাদের নেতৃত্বদের সঙ্গে নিজে বৈঠকে বসছেন তৃণমূলের এই সেকেন্ড-ইন কমান্ড। সেই বৈঠকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে যেমন প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, তেমনই আগামী নির্বাচনের রণকৌশলও তৈরি করে দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা ২৬শে নির্বাচনের আগে দলের সংগঠনকে আরও মজবুত করতে না পারলে বিজেপির সঙ্গে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যে মোটেও সহজ হবে না, তা ভালো মতোই জানেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর তাই জেলা স্তরের নেতারাদের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিক খামতি পূরণে মরিয়া তিনি। কেননা বিজেপিকে এই রাজ্যে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেওয়া হবে না বলে যে চ্যালেঞ্জ তিনি নিয়েছিলেন তা কার্যকর করতে হলে সবার আগে তৃণমূল স্তরের সংগঠনকে যে আরও শক্তিশালী করতে হবে তা ভালো মতোই জানেন অভিষেক। তাই জেলা স্তরের নেতারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে তাই নিয়ম মাফিক ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে জেলা স্তরের নেতারাদের নিয়ে মিটিং সারছেন তিনি। গত সপ্তাহে মালদা ও মুর্শিদাবাদ নেতৃত্বদের সঙ্গে বৈঠকের পর আজ, অর্থাৎ মঙ্গলবার অভিষেক ডেকে পাঠিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক সাংগঠনিক কেন্দ্রের নেতৃত্বদের। সেই সঙ্গে আজ ক্যামাক স্ট্রিটের বৈঠক থাকবেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বও। এই বৈঠকে থাকার কথা দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিরও। সব মিলিয়ে আজকের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পূর্ব মেদিনীপুর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড় নামে পরিচিত। এখানেই গত বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু। এমনকী গত লোকসভা নির্বাচনেও এই জেলার ১৪টির মধ্যে ১৩টি বিধানসভাতেই তৃণমূল হেরে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে বঙ্গ রাজনীতির হাইভোল্টজ কেন্দ্র বলেই পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুর। তাছাড়া এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং দলের একাংশের বিরোধী দলের সঙ্গে যোগসাজশ রাখা নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ ওঠে। সেসব নিয়েই আজ বৈঠকে বসছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। শুভেন্দুর গড়ে ঘাসফুল ফোটাতে জেলা নেতৃত্বকে কী বার্তা দেন অভিষেক সেদিকেই নজর সকলের। পাশাপাশি বারাসতের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নিয়েও নতুন কী রণকৌশল সাজান অভিষেক তা নিয়েও কৌতূহলী রাজনৈতিক মহল। কেননা এই কেন্দ্র থেকে নানান সময়ে নাগরিক পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগ সামনে এসেছে। ফলে এসবের বিরুদ্ধে জেলা নেতৃত্বকে কী দাওয়াই দেন অভিষেক, তাও তাৎপর্যপূর্ণ। গতকালই দিল্লি থেকে ফিরেই আজ হাইভোল্টজ বৈঠকে বসছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। এর থেকেই স্পষ্ট যে নির্বাচনের আগে নতুন করে বিজেপির বিরুদ্ধে রণকৌশল তৈরিতে তৎপর তৃণমূল। কেননা ২৬শে বিজেপির বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ে সহজ জয় হাসিল করাই যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই লক্ষ্যের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।