সংসদের উচ্চ কক্ষে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দিলেন চার বিশিষ্টকে

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮০ (১) (ক)–এর অধীনে রাজ্যসভায় ৪ জন সদস্যকে মনোনীত করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রবিবার সকালে রাইসিনা হিলস এর র তরফে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৪ জন বিশিষ্ট নাগরিককে রাজ্যসভাতে মনোনয়ন দিলেন। তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু চমক। যে চার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন বিশিষ্ট আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, কেরলের সমাজকর্মী তথা শিক্ষাবিদ শ্রী সদানন্দন মাস্টার, প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈন। রাষ্ট্রপতি মনোনীত সাংসদদের তালিকায় কসাবকে ফাঁসিতে ঝোলানো আইনজীবী, তেমন এই তালিকায় আছেন প্রাক্তন আমলা, আবার শিক্ষাবিদ ও গবেষক রয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২৬/১১ মুম্বই হামলায় ধৃত একমাত্র জঙ্গি অজমল কাসবের বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিশিষ্ট সরকারি আইনজীবী উজ্জ্বল। ২০১০ সালে আদালত কসাবকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন বিচারক এবং পরবর্তী পর্যায়ে সেই রায় সুপ্রিম কোর্ট ও রাষ্ট্রপতির দ্বারাও অনুমোদিত হয়ে অবশেষে, ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর কসাবের ফাঁসি কার্যকর হয়। পাশাপাশি ১৯৯৩ মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, গুলশন কুমার হত্যা, প্রমোদ মহাজন হত্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার আইনজীবী ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ২০২৪ এ নির্বাচনে বিজেপি মুম্বই উত্তর-মধ্য লোকসভা কেন্দ্রে উজ্জ্বল নিকম’কে প্রার্থী করলেও ব কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে হেরে যান। প্রাক্তন বিদেশসচিব দার্জিলিং এর আদি বাসিন্দা হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দীর্ঘদিন কূটনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করার পর অবশেষে সংসদে প্রবেশ করতে চলেছেন। তবে এর আগে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে তিনি বিজেপি প্রার্থী হতে পারেন এমন সম্ভাবনা তৈরী হলেও শেষ পর্যন্ত টিকিট পান রাজু বিস্তা। তবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে রাষ্ট্রপতির তরফে তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করা হল। রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্যদের নামের ওই তালিকায় রয়েছেন কেরলের প্রবীণ সমাজকর্মী ও শিক্ষাবিদ সি. সদানন্দন মাস্টার। ঘটনাচক্রে তিনি কেরল বিজেপির অন্যতম মুখ। কেরলের ত্রিশূর জেলার প্রখ্যাত শিক্ষক ও সমাজসেবী তিনি। ১৯৯৪ সালে পেরিঞ্চেরি এলাকায় রাজনৈতিক হামলার শিকার হন। বাদ যায় দু’টি পা। তা সত্ত্বেও শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন তিনি। সদানন্দনের উপর হামলার ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলা হয় বামেদের। ২০২১ সালে কেরল বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হলেও জয় পাননি তিনি। তবে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ার পিছনে রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী বছর কেরলে বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। রয়েছে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈ ওনের নামও। ত মধ্যযুগ ও ঔপনিবেশিক ভারতের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ইতিহাস নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করেছেন তিনি। দিল্লির গার্গী কলেজে ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। নেহরু মেমোরিয়াল মিউজ়িয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরির ফেলো হিসাবেও কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চের সিনিয়র ফেলো হিসেবে যুক্ত। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ২০২০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।