ভারতে অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফের হাতে ধরা পড়ল শেখ হাসিনা সরকারের সেনা সচিব

গত বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের ফলে ভারতে পালিয়ে আসেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করেন মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইউনূস আসার পর থেকেই বাংলাদেশে আওয়ামী লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সব রকম তৎপরতা চালায়। একনকী হাসিনার পাশাপাশি জনরোষের হাত থেকে বাঁচতে আওয়ামী লিগের অনেক উচ্চপদস্থ নেতারাও লুকিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। এবার শেখ হাসিনা সরকারের সেনা আধিকারিকের ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা। গত শনিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে তিনি ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশ করার সময় বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের সেনাবাহিনীর এক সময়ের সচিব আফরুজ্জামান এসিপি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্বে ছিলেন। ইউনূস সরকার আসার পরে সাতক্ষীরা জেলায় আত্মগোপন করে ছিলেন শেখ হাসিনা সরকারের এই উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিক। বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলার আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা। রাজ্যজুড়ে নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে আফরুজ্জামান গত শনিবার রাতে বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানার ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তের হাকিমপুর চেকপোস্ট দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেন। আফরুজ্জামান ভারতে প্রবেশের সময়ই ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা আটক করে তাঁকে। তারপর তাঁকে স্বরূপনগর থানার পুলিশ হাতে তুলে দেওয়া হয়। আফরুজ্জামানের কাছ থেকে বেশকিছু নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে। সেই সমস্ত নথিপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে ভারতের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের হাতে। বিএসএফ ও পুলিশের তরফ থেকে যৌথভাবে রাজ্যের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের পুরো ঘটনাটি লিখিতভাবে জানানো হয়। এমনকী ভারতের হাই কমিশনারের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টিই জানানো হয়েছে বাংলাদেশ হাই কমিশনারকে। বাংলাদেশের সচিবকে আপাতত রাখা হয়েছে স্বরূপনগর থানায়। রবিবার তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে। এনআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের হাইকমিশনারের মধ্য তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ইউনূস সরকারের হাতে তাঁর জীবন সুরক্ষিত নয়, সেই কারণেই বাংলাদেশে দীর্ঘ কয়েক মাস সীমান্তবর্তী এলাকায় আত্মগোপন করে ছিলেন আফরুজ্জামান। শনিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে ঢোকার সময়ই বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
সময় যখন আসবে ‘আওয়ামী লীগ আইলো’ বললে ‘লাল-স্বাধীনতাওয়ালারা’ পালাবে

সীতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক: জুলাই ৩৬ কোনও বিপ্লব ছিল না, এটি ছিল একটি ষড়যন্ত্র। ড. ইউনূস সরকারের কোনও আইনগত বৈধতা নেই, এটি অবৈধ সরকার। গোপালগঞ্জ ঘটনার পর ড. ইউনূসের পদত্যাগ করা উচিত, তার হাত রক্তে রঞ্জিত। ৮ আগস্টের পর সকল হত্যাকাণ্ডের জন্যে বাংলাদেশে ড. ইউনূসের বিচার হবে তা প্রায় নিশ্চিত। মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে ড. ইউনূস রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন। গত এক বছরে ড. ইউনূস সরকারের কোনও অর্জন নেই, তবে ‘তুমি কে, আমি কে, জঙ্গি, জঙ্গি’–ইউনূস জঙ্গিদের নেতা এবং তিনি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করেছেন, এটি তাঁর অর্জন। মব ভায়োলেন্স ইউনূস সরকারের একমাত্র পন্থা, ড. ইউনূস সেটিকে আর্মি ভায়োলেন্স-এ পরিণত করেছেন। দেশের সেনাবাহিনী-নৌবাহিনী এখন গোপালগঞ্জে নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। বুট চাপা দিয়ে মানুষ হত্যা, লাশকে টেনে-হিঁচড়ে ট্রাকে তোলা, ‘গুলি চালা-চালাইছি স্যার’– এসবই সেনাবাহিনী ও ড. ইউনূস সরকারের সাফল্য। আওয়ামী লীগ সরকারের দোষের অন্ত নাই, তারা ১৭ বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার লুট করেছে। বর্তমান সরকার ১০ মাসে ২০ বিলিয়ন ডলার খেয়ে ফেলেছে, এটি তাদের সাফল্য। আওয়ামী লীগ সরকার স্বৈরাচার হলে ইউনূস সরকার স্বৈরাচারের বাপ। আওয়ামী লীগ ৭৭ বছরের একটি পুরোনো দল, এর ভিত্তি দেশের মাটির ভেতরে প্রোথিত, এঁরা মাটি ফুঁড়ে বের হয়। ১৯৭৫ ও ২০০১-২০০৫-এ আমরা তা দেখেছি। আওয়ামী লীগের গত ১৭ বছরের শাসনকালের নেতারা হয়তো হারিয়ে যাবেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ থাকবে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে ইউনূস সরকার যা করছে তা আমাদেরকে পাকিস্থানী আমলের কথা মনে করিয়ে দেয়? ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগকে ব্যান্ড করেছিল, আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন করে ফিরেছে। এবার নিষিদ্ধের পর হয়তো আর একবার দেশ স্বাধীন করে দেবে। একটা সময় আসবে যখন ‘আওয়ামী লীগ আইলো’ বললে ‘লাল-স্বাধীনতাওয়ালারা’ পালানোর জায়গা পাবে না। সদ্য জামাত একটি বড় সমাবেশ করেছে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। বাংলাদেশে টাকা দিয়ে বড় সমাবেশ করা কোনও ব্যাপার না। প্রফেসর ইউনূস তো বিদেশী মাধ্যমে বলেই দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে টাকা দিয়ে ভোট বেচাকেনা হয়? নোবেল বিজয়ীর কথা সত্য হলে দেশে টাকা ও বিরিয়ানি দিয়ে লোকও আনা যায়? জামাতের মাদ্রাসার ছাত্ররা আছে, জঙ্গিরা আছে, টাকা আছে, বিরিয়ানি আছে, লোক তো হবেই। তবে সুষ্ঠু ভোট হলে ৩-৪%-ই থাকবে। এজন্যেই জামাত নির্বাচন চায় না, কারণ তারা এ অবৈধ সরকারের অংশ। তবে তারা ‘পিআর’ নামক নুতন এক ‘কৌশল’ আমদানি করতে চাইছে, যাতে ৩-৪% ভোট পেলেও ৯/১২জন এমপি পেতে পারেন? জনগণ অবশ্য এদের চালাকি বুঝে গেছে, তাই ওতে কাজ হবে না। নির্বাচনে জয় না পেলে নির্বাচন কেন, তাই জামাত-এনসিপি নির্বাচন বানচালের নুতন ষড়যন্ত্র করছে, গোপালগঞ্জ আক্রমণ যার অংশ। বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘তিনি আমার কথা শুনলেন না, তিনি শুনলেন ভুট্টো সাহেবের কথা’– বিখ্যাত ডায়লগ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের বেতনভুক কর্মচারী, তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব ছিল শেখ হাসিনা সরকারকে রক্ষা করা, তাঁরা উল্টোটা করেছেন, তারা শেখ হাসিনার কথা শোনেননি, তারা শুনেছেন ভলকার টার্ক ও ডোনাল্ড লু-র কথা। কারণ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে চাকরি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে চাকরি রক্ষার জন্যে এঁরা সীমান্ত ছেড়েও চলে আসতে পারে। সেনাবাহিনীতে চাকরির মূল লক্ষ্য কি জাতিসংঘ বাহিনীতে চাকরি? সামনে নির্বাচিত সরকার এলে এটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার। সেনাবাহিনীর বেতন বাড়িয়ে এটি বন্ধ হওয়া উচিত। এবার গোপালগঞ্জ হত্যাযজ্ঞের পর সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি অনেকটা ক্ষুণ্ন হয়েছে, অসংখ্য অভিযোগ গেছে। বলা হচ্ছে, যারা নিজদেশে নিরস্ত্র জনগণকে হত্যা করতে পারে, তাঁরা কিভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনিতে যাবে।
গোপালগঞ্জ হত্যাযজ্ঞের দায়িত্ব নিয়ে ড. ইউনূসের পদত্যাগ করা উচিত

সীতাংশু গুহ: ১৯৭১-এ শান্তিতে নোবেল বিজয়ী উইলী ব্র্যান্ড বলেছিলেন, ‘মুজিব হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না, কারণ যাঁরা মুজিবকে হত্যা করেছে তাঁরা যেকোনও জঘন্য কাজ করতে পারে’। গোপালগঞ্জে ঠান্ডা মাথায় সাধারণ মানুষকে হত্যা করে সেনাবাহিনী তা আবার প্রমাণ করেছে। গোপালগঞ্জ ঘটনার অসংখ্য ভিডিও ফুটেজে সেনাবাহিনীর লজ্জাজনক ভূমিকার স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। আল-জাজিরার রিপোর্ট বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। ড. ইউনূস প্রতিরক্ষা বাহিনীর মন্ত্রী, তাঁর উচিত এ হত্যাযজ্ঞের দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করা। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের উচিত সংশ্লিষ্টদের কোর্ট মার্শালে সোপর্দ করা। এ হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার, সেনাবাহিনী কেউ এড়াতে পারেন না। কালুয়া টোকাই হাসনাত ক’দিন আগে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছুঁড়েছিল। গোপালগঞ্জে জাতি দেখল সেই হাসনাতকে মিলিটারির সাঁজোয়া গাড়ির মধ্যে ঢুকে পালাতে। অনেকেই বলছেন, এনসিপি নেতারা গোপালগঞ্জ গিয়েছিল বাঘের মত, পালিয়েছে কুকুরের মত। গোপালগঞ্জে এনসিপি-সেনারা যে আগুন লাগিয়েছে, সেই আগুন হয়তো এখন পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এবং নেতারা বারবার পালাবে। বোঝা গেছে, পুলিশ ব্যতীত এনসিপি নেতারা ঘরের বাইরে যাবার দিন শেষ হয়ে আসছে, সভা তো দূরের কথা। আইএসপিআর বলেছে, সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়? আইএসপিআর-র প্রতি মানুষের আগেও আস্থা ছিল না, এখনও নেই! আইন ও সালিশি কেন্দ্র বলেছে, ‘রাষ্ট্র নাগরিকের জীবনরক্ষায় ব্যর্থ’। দেশে বসে এরচেয়ে শক্ত কথা বলা সম্ভব নয়, প্রকৃত সত্য হচ্ছে, রাষ্ট্র ষড়যন্ত্র করে মানুষ হত্যা করছে। কালো গেঞ্জি পরা ছেলেটিকে মিলিটারি আটক করে নিয়ে যায়, এরপর তিনি গুলিতে নিহত হ’ন কী করে? সম্ভবত: ছেলেটির নাম ‘রমজান’, রমজানকে কী মেটিক্যুলাস পরিকল্পনায় হত্যা করা হয়নি? হাতে বন্দুক থাকলেই কি মানুষ মারা যায়? ড. ইউনূসের সাথে ইয়াহিয়া খান বা ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে টিক্কা খানের তফাৎ কি? বলা হচ্ছে, ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি, বাকি লাশ কোথায়? ড. ইউনূসের বাংলাদেশে মানুষের কি লাশ ফেরত পাওয়ার অধিকারও থাকবে না? দীপ্ত, ইমন, সোহেল, রমজানের লাশের ময়নাতদন্ত হয়নি বলে শোনা যাচ্ছে। জুলাই ষড়যন্ত্রে নিহত অনেকের লাশের ময়নাতদন্ত হয়নি। দু’টি ঘটনায় যথেষ্ট মিল আছে, তাই না? সেনাপ্রধান ৩রা আগষ্ট ২০২৪-এ বলেছিলেন, সেনাবাহিনী জনগণের বুকে গুলি চালাবে না। জাতি দেখল ১৬ই জুলাই ২০২৫ সেনাবাহিনী মানুষের বুকে তো বটেই, মাথায়ও গুলি চালিয়েছে। ‘প্রথম আলো’ হেডিং করেছে, ‘গোপালগঞ্জে এনসিপির ওপর হামলা, সংঘর্ষ, নিহত ৪’। এই হচ্ছে মিডিয়া! বাংলাদেশে সরকার, সেনাবাহিনী, মিডিয়া, নেতা কারও প্রতিই সাধারণ মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না! এই আস্থাহীনতা দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাবে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দেশ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা বিশাল র্যালি করলে সেনাবাহিনী বাধা দেয়? সরকার রাতের আঁধারে শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বর’ ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ বলেছে, তারা ধৈর্য্যের সাথে গোপালগঞ্জ পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে এখন আর ইতিবাচক কিছুই ঘটছে না, সবই নেতিবাচক। সরকারের কথাবার্তা নেতিবাচক। রাস্তায় শ্লোগান নেতিবাচক। পুলিশ-মিলিটারির ভূমিকা নেতিবাচক। এর মধ্যে নাহিদ বলেছে, তাঁরা আবার গোপালগঞ্জ যাবে। তিনি আরও বলেছেন, পালাতে পেরেছি, সেটাই মুখ্য। নেতা, গোপালগঞ্জ নিশ্চয়ই যাবেন, তবে এবার পুলিশ-মিলিটারি ছাড়া যাইয়েন, পালানোর গ্যারান্টি কিন্তু থাকবে না? (লেখক লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী)
দিল্লির চাপে পিছু হটল ইউনূস সরকার, স্থগিত হল সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি ভাঙার কাজ

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন ইউনূস সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল যাতে করে ময়মনসিংহে অবস্থিত কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িটি না ভাঙা হয়। অবশেষে এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসল বাংলাদেশ সরকার। এর আগে জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলে সেখানে নতুন শিশু অ্যাকাডেমি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মহম্মদ ইউনুসের সরকার। এই আবহে গত মঙ্গলবার ভারত সরকার জানিয়েছে যে তারা বাংলাদেশের ময়মনসিংহে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক সম্পত্তি মেরামত ও পুনর্নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। ময়মনসিংহের হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি এমনিতেই বহুকাল ধরে অযত্নে অবহেলায় ভগ্নদশায় কোনওমতে দাঁড়িয়ে ছিল। এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছিল, ‘বাংলা সাংস্কৃতিক নবজাগরণের প্রতীক ভবনটির ঐতিহাসিক মর্যাদা বিবেচনা করে, ধ্বংসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা ভালো এবং এটিকে সাহিত্যের মিউজিয়াম এবং ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা যায় কিনা তার জন্য এর মেরামত ও পুনর্নির্মাণের বিকল্পগুলি খতিয়ে দেখা হোক। ভারত সরকার এই উদ্দেশ্যে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।’ দিল্লির এই কড়া বার্তার পরই সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি-বিজড়িত এই বাড়ি ভাঙার কাজ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। শোনা যাচ্ছে, বাড়িটি কীভাবে পুনর্নির্মাণ করা যায় তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি নতুন কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সরকার। প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে প্রথম সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজের সোস্যাল সাইটে বাংলাদেশ সরকার এবং ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই বাড়িটি মাহাত্ম্য তুলে ধরেন। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে এবং দিল্লির চাপে পিছু হটল ইউনূস সরকার।