‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের ১২ বছর পূর্তিতে বাংলার মেয়েদের কী বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ?

২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্য রাজ্যে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝে কেটে গিয়েছে ১২টা বছর। দীর্ঘ এই একযুগে এই প্রকল্প নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনাও কম হয়নি। শুনতে হয়েছে বিরোধীদের নানা টিপ্পনিও। তা সত্ত্বেও এই প্রকল্পের প্রভাবে কোনও ঘাটতি পড়েনি। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পুরস্কৃত হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রকল্প। ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের ১২ বছর পূর্তিতে সে কথাই স্মরণ করলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন— “আমাদের সকলের গর্বের কন্যাশ্রী প্রকল্প আজ ১২ বছরে পা দিল। সারা বিশ্ব, সারা দেশ এবং সারা বাংলার সব কন্যাশ্রীদের জানাই অভিনন্দন।” পাশাপাশি এও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইউনেস্কো এই প্রকল্পকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বীকৃতি দিয়েছে ৬২টি দেশের ৫৫২টি প্রকল্পের মধ্যে প্রথম স্থান পেয়ে কন্যাশ্রী জিতেছে ইউনাইটেড নেশনস পুরস্কার। এতদিনে যে রাজ্যের ৯৩ লক্ষের বেশি ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় এসেছে এবং তাঁদের হাতে পৌঁছে গেছে প্রায় সাড়ে সতেরো হাজার কোটি টাকা, সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টে। রাজ্যের নারীদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন— “জীবনে বড় হও, দেশের ও রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করো। তোমরাই একদিন বিশ্ববাংলা গড়বে, বিশ্বে সম্মানের মুকুট মাথায় পরবে।” আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের উচ্চশিক্ষা ও স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে সামনে সারিতে তুলে আনতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ২১ বয়সে পৌঁছনো ছাত্রীদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়, যা সরাসরি তাঁদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এই প্রকল্পের ব্যাপ্তি ও প্রসারতা যে সর্বজনবিধিত তার উল্লেখ করে রাজ্যের মেয়েদের এদিন ‘কন্যাশ্রী’ দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন— “আমি কন্যাশ্রী, আমি ভবিষ্যতের অনন্যা।” সব মিলিয়ে ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পকেও আরও একবার মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার এও এক কৌশল হিসাবে এই বিষয়টিকে দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তৃণমূল সরকারের সাফল্যের খতিয়ানকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এও এক প্রয়াস।