বিএসএফ নিরাপত্তা এড়িয়ে তিনবিঘা করিডোর দিয়ে ভারতে প্রবেশ দুই বাংলাদেশি যুবকের

কোচবিহার জেলার স্পর্শকাতর তিনবিঘা করিডোরে কড়া নিরাপত্তা সত্ত্বেও দিনের আলোয় দুই বাংলাদেশি যুবকের প্রবেশে চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। তিনবিঘা করিডোরে সর্বক্ষণ বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন থাকে। করিডোরের দুই প্রান্তের গেট ছাড়াও মাঝপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া। বাড়তি নজরদারির জন্য সিসিটিভিও বসানো রয়েছে। এতকিছুর পরও বছর চব্বিশের নাইম ইসলাম ও এমডি আশিকুর রহমান নামে বাংলাদেশের রংপুর জেলার দুই যুবক ভারতে প্রবেশ করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পথভ্রষ্ট হয়েই তারা করিডোর দিয়ে ঢুকে পড়ে এবং একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিল। সেই সময় কুচলিবাড়ি থানার পুলিশের নজরে আসতেই তাদের আটক করা হয়। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আটক নাইম ইসলামের দাবি— “আমি পেশায় ড্রাইভার। পাটগ্রাম এলাকায় ভুট্টার গাড়ি লোডের কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে একটু চা খেতে বের হয়েছিলাম। আমরা বুঝতেই পারিনি যে ভারতে ঢুকে পড়েছি।” একই দাবি করে অপর যুবক আশিকুর রহমানও। এ প্রসঙ্গে মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ গড়াই জানিয়েছেন, “আনুষ্ঠানিকভাবে দুজনকে বিএসএফ হাতে হস্তান্তরিত করা হয়েছে। বিষয়টি এখন বিএসএফ দেখছে।” অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন—”এত নিরাপত্তা সত্ত্বেও কীভাবে দিনের আলোয় বাংলাদেশিদের প্রবেশ সম্ভব হল?”
শিয়ালদহে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে মারধর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের

এতদিন বিজেপি শাসিত ভিন রাজ্যগুলি থেকেই অভিযোগ আসছিল যে, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে তাঁদের বাংলাদেশী বলে গ্রেফতার করা হচ্ছিল। কিন্তু এবার এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল পশ্চিমবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র খোদ কলকাতা শহরেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়াকে বাংলাদেশি সন্দেহে মারধর করল শিয়ালদহ ব্রিজের নীচে একদল ব্যবসায়ী। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল হোস্টেলের একজন ছাত্র শিয়ালদা ব্রিজের নিচে মোবাইলের দোকানে কিছু দরকারি জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন। সেখানেই চলছিল দর-কষাকষি। এমনকী ওই ছাত্রের সঙ্গে দোকান মালিকের খানিক বচসাও হয়। এরপর নাকি হিন্দিভাষী দোকানদার ওই পড়ুয়াকে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। এরপর ওই পড়ুয়া হোস্টেলে ফিরে গিয়ে তাঁর সহপাঠীদের ডেকে আনেন। আর তারপরই ওই চার ছাত্রদের উপর চড়াও হন আশপাশের ব্যবসায়ীরাও। গুরুতর আহত অবস্থায় চারজন ছাত্রকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলেই অভিযোগ পড়ুয়াদের। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা পুলিশের তরফ থেকে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। ঘটনার খবর পেয়ে মুচিপাড়া থানায় যান বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায়। অবিলম্বে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা গুজরাটে মার খাব, রাজস্থানে মার খাব, এখন কলকাতাতেও মার খাব? মানলাম ওড়িশায় বিজেপি সরকার, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকার আছে। কলকাতায় তো বিজেপি নেই। তাহলে এই অপরাধীগুলো কেন গ্রেফতার হবে না?” পাশাপাশি গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের সুরে সুর মিলিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আগে তো ভিন রাজ্যে হত। এখন এখানেও হচ্ছে। এই পরিবেশ তৈরি করছেন দিল্লিওয়ালারা।” অন্যদিকে আক্রান্ত ছাত্রদের অভিযোগ, “আমাদের হস্টেলের কিছু ছেলে মোবাইলের কভার কিনতে যায়। তখন একটা লোক হিন্দিতে বলছে, ‘বাংলাদেশি বলব। কী করবি বল? কী করার আছে কর।’ এরপর আমায় মারল। আমার মোবাইল কেড়ে নিল। আমাদের একটা ছেলেকে আটকেও রেখেছিল। তার জন্য আমরা প্রতিবাদ করি। সেই কারণে, ছুরি-বন্দুক দিয়ে আঘাত করে আমাদের।” অন্যদিকে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের দাবি, “শিয়ালদহ মানে গেটওয়ে অফ কলকাতা। যদি সেখানেই এমন বাংলাদেশি বলে তাহলেও নিন্দনীয়। যদিও পুরো বিষয়টিই তদন্ত করে দেখা উচিত।”
বাগদায় ৭৭৫ জন ভুয়ো ভোটার, দাবি বিজেপির প্রাক্তন বিধায়কের

উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর বুধবার নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে একাধিক ভুয়া ভোটারের অভিযোগ তোলেন। দুলাল বরের দাবি, বাগদার বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান খানের মেয়ে বুশরা খান ও জামাই মাসুদ খান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে থাকে, কিন্তু এখানকার ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে তাদের। এবং শ্বশুর মিজানুর রহমান খাঁনকে বাবা বানিয়ে এখানকার ভোটার হয়েছেন মাসুদ খান। তাঁর আরও অভিযোগ, বয়রা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জাভেদ খাঁনের বাবা আসপাকুর খাঁনকে বাবা সাজিয়ে কবিরুল খান ভোটার হয়েছেন। কবিরুল জাভেদের মামা, এখন তিনি এই এলাকায় থাকেন না। এছাড়াও শশুরকে বাবা সাজিয়ে এভাবে ভোটার তালিকায় নাম তোলার একাধিক অভিযোগ করেছেন বিজেপির এই প্রাক্তন বিধায়ক। বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েত সহ আরও কয়েকটি পঞ্চায়েতের ৭৭৫টি ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ তুলেছেন দুলাল বর। এই বিষয়ে ইমেল মারফত নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে দাবি করেছেন। তাঁর করা অভিযোগের কপি অভিযুক্তরা পেয়ে যাচ্ছেন, এর ফলে তাঁর জীবন সংশয় হতে পারে বলেও দাবি করেছেন দুলাল বাবু। এই বিষয়ে তিনি বিডিও, থানার ওসি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন। যদিও বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের মিজানুর রহমান খাঁন দুলাল বরের অভিযোগ সত্য বলে স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কোনও ছেলে নেই। ছোট থেকে ভাইপো মাসুদ খান তার কাছে থাকতেন। পরবর্তীতে জামাই হয়েছে, সেই কারণে তাঁকে বাবা বানিয়ে ভোটার হয়েছিলেন। এখন যেহেতু মেয়ে-জামাই এখানে থাকে না। তাই তিনি তাদের ভোট বাতিল করবার আবেদন করবেন। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা জাভেদ খাঁন জানিয়েছেন, “আমার বাবাকে বাবা বানিয়ে কোনও এক ব্যক্তি ভোটার হয়েছিলেন। আমরা জানতে পেরে ইতিমধ্যেই সেই ভোট কেটে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি। বিজেপির তরফ থেকে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।” এই বিষয়ে বাগদা পূর্ব ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পরিতোষ কুমার সাহা জানিয়েছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস ভূতুড়ে ভোট কেটে দেওয়ার জন্য আগে থেকেই কাজ করছে। আমরা চাই ভূতুড়ে ভোটার কেটে দেওয়া হোক। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে প্রবেশ করে কী করে ভোট দিচ্ছে। সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব তো কেন্দ্রীয় সরকারের। নির্বাচন কমিশনও কেন এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না।” অন্যদিকে দুলাল বরের অভিযোগ প্রসঙ্গে বাগদার বিডিও প্রসূন কুমার প্রামাণিক জানিয়েছেন, “আমরা যা অভিযোগ পাচ্ছি তার সঠিক তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমি একজন সরকারি আধিকারিক। আমার কাছ থেকে কোনও তথ্য কোনও জায়গায় প্রকাশিত হয় না। যে কেউ তার মতামত জানাতেই পারেন।”
ব্যাঙ্গালোরে কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ফের অনুপ্রবেশ, গ্রেপ্তার ৬ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী

সীমান্ত এলাকার থানায় গ্রেফতার ছয় বাংলাদেশি, সঙ্গে গ্রেপ্তার এক ভারতীয় দালাল। ধৃত মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (২০), মোহাম্মদ জুয়েল রানা (২৪) বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। কেতাবুল(২৬), কামাল উদ্দিন (২৮), কলিমুদ্দিন (২৫) বাংলাদেশের রাজশাহীর বাসিন্দা। মোহাম্মদ সেলিম (২৪) বাংলাদেশের নুসরাতপুর ফেনী জেলার বাসিন্দা। অন্যদিকে দ্রুত আশরাইল শেখ মুর্শিদাবাদের রানীনগর থানার রাধাগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রানীনগর থানার অন্তর্গত কাতলামারী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ধৃতদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়ে লালবাগ আদালতে তোলা হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ব্যাঙ্গালোরে কাজে যাওয়ার জন্যই বাংলাদেশ থেকে রানীনগর থানা সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবেশ করেছে এই অনুপ্রবেশকারীরা।
গ্রেফতার ৩ বাংলাদেশী

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: ফের সীমান্তবর্তী জেলায় গ্রেফতার বাংলাদেশী। তিন বাংলাদেশী ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলো রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। সোমবার রাতে রঘুনাথগঞ্জের কুতুবপুর ঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাদের। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মোহাম্মদ মেসবাউল হক, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এবং মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। সকলেরই বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। কৃষ্ণসাইল কুতুবপুর ঘাট দিয়ে নদী পেরিয়ে এপারে এসেছিল বলেই প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। যদিও কি উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল ওই তিন ব্যক্তি তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আজ মঙ্গলবার ধৃত তিনজনকে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে পাঠানো হয় রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশের পক্ষ থেকে।