SIR-এর নামে সুপার ইমার্জেন্সির চেষ্টাঃ কেন্দ্রকে তোপ মমতার

এসআইআর(SIR) নিয়ে এই মুহূর্তে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য জুড়ে নির্বাচনের আগে থেকেই যেন তেতে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতির আসর। এবার উত্তরবঙ্গ স্টেডিয়াম থেকে ফের একবার বিজেপি(BJP) ও অমিত শাহের(Amit Shah) বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এসআইআর নিয়ে কেন এত তাড়াহুড়ো তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন মমতা। এমনকি অমিত শাহের ইস্তফাও দাবী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। গত সপ্তাহের চার নভেম্বর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যে এসআইআর(SIR)। সেই নিয়েই এখন কার্যত রাজনীতির উত্তাপের মাত্রা ক্রমশই চড়তে শুরু করেছে। যেদিন থেকে এসআইআর(SIR) শুরু হয়েছে, সেদিনই পথে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee), অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এই মুহূ্র্তে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মমতা। সেখানে প্রসাসনিক বৈঠক থেকেও অমিত শাহ সহ বিজেপিকে নিশানা করতে ছাড়লেন তিনি। মমতার সরাসরি অভিযোগ এসআইআরের নাম নিয়ে নাকি রাজ্যে সুপার ইমার্জেন্সি পরিস্থিতি তৈরি করার পরিকল্পনা চলছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে জোরকদমে চলছে এসআইআর প্রক্রিয়া। শোনাযাচ্ছে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারিই নাক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হতে পারে। খুব সম্ভবত তারপরই ঘোষণা হতে পারে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। আর সেখানেই কেন এত তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে সেটা নিয়েই এবার সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সজল ঘোষের পোস্ট ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে— তবে কি বন্ধ হতে পারে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের (Santosh Mitra Square) পুজো বকলমে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের (Sajal Ghosh) পুজো নামেই পরিচিত। কলকাতার অন্যান্য নামীদামী পুজোর সঙ্গে রীতিমত টেক্কা দিয়ে প্রতি বছরই বিপুল ভিড় জমে এই মণ্ডপে। উপরন্তু এবারে যেহেতু সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের (Santosh Mitra Square) থিম ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor)— স্বাভাবিক ভাবেই অন্যবারের তুলনায় এবার এই মণ্ডপ ঘিরে মানুষের বাড়তি উৎসাহ থাকাই স্বাভাবিক। একনকী গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) শহরে এসেছিলেন এই পুজো উদ্বোধনে। কিন্তু পুজো উদ্বোধনের চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সজল ঘোষের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে তৈরি হল জল্পনা। সেই পোস্টে সজল ঘোষ (Sajal Ghosh) লিখেছেন, ‘পুজো চালাতে পারব জানি না’ ! আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর চর্চা। গতকাল অমিত শাহ (Amit Shah) পুজো উদ্বোধনের পর থেকেই রীতিমত দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে (Santosh MitraSquare)। এর থেকেই অনুমান করা যায় আগামী কয়েকদিন কী পরিমাণ মানুষের সমাগত হতে পারে এখানে। তারই মধ্যে সজল ঘোষের (Sajal Ghosh) পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে কী বন্ধ হয়ে যেতে পারে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের (Santosh Mitra Square) পুজো ? গত শুক্রবার সজল ঘোষ (Sajal) সংবাদমাধ্যমের সামনে পুলিশি জুলুমের অভিযোগ তুলে জানিয়েছিলেন, তাঁকে বারবার থানা থেকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। মানুষ যাতে মণ্ডপ অবধি পৌঁছাতে না পারে সেজন্য যেখানে সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। এই পুলিশি জুলুমের মুখে তিনি পুজো চালাতে পারবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপি কাউন্সিলর। যদিও পুলিশের তরফ থেকে সজল ঘোষের অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলা হয়েছে, সকলে যাতে দুর্ঘটনা এড়িয়ে প্রতিমা দর্শন করতে পারে, সে কারণেই ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই ! চলতি বছরের ১৪ মে, ১২ জুন এবং ১৫ জুলাই, ৯ সেপ্টেম্বর মুচিপাড়া থানার তরফ থেকে একাধিক নির্দেশিকা জারি করে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতিকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়েছিল মণ্ডপে ঢোকা ও বেরনোর ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জায়গা রাখতে হবে। মণ্ডপ থেকে বেরনোর গেটের কাছে বা পার্কের পূর্ব প্রান্তে কোনও হকার, স্টল বা বিক্রেতাকে বসতে দেওয়া হবে না। মণ্ডপের ভিতরে বা আশেপাশে কোনও ধরনের লাইন্ড অ্যান্ড সাউন্ড শো করা যাবে না। মণ্ডপ চত্বরে অন্তত ৬০টি CC ক্যামেরা বসাতে হবে। ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া মোড় থেকে ঢোকার গেট পর্যন্ত কোনও বিজ্ঞাপনের গেট বা সেই ধরনের কোনও কাঠামো রাখা যাবে না। নাগরদোলনা বা কোনও জয় রাইড বসানো যাবে না। ২৫০ জন প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ারকে মোতায়েন করতে হবে। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো ঘিরে পুলিশের এই বাড়তি নজরদারি নিয়ে এর আগেও একাধিকবার সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। এবার পুজোর শুরুতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন পোস্ট কী সত্যিই রাজনৈতিক চাপ— নাকি গিমিক তৈরির চেষ্টা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সব রাজ্যেই ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির নির্দেশ কেন্দ্রের

সমস্ত রাজ্যে তৈরি করতে হবে ডিটেনশন ক্যাম্প। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বহিষ্কার করার আগে যাতে তাঁদের গতিবিধি সীমাবদ্ধ করা যায় এবং নজরদারি চালানো যায়, সে কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনকী এই ডিটেনশন ক্যাম্পে কাদের রাখা হবে তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কোনও সন্দেহভাজনকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠাতে পারবে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। যদি ওই সন্দেহভাজন বিদেশি দাবি করেন যে তিনি বিদেশি নন। তারপরও এই নিয়ে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে না পারেন কিংবা আদালত থেকে এই নিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করতে না পারেন, তবে তাঁকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে। অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী বিদেশিদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তাঁদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই ডিটেনশন শিবিরে পাঠানো হবে। সম্প্রতি পাশ হওয়া অভিবাসন ও বিদেশি আইন, ২০২৫-র পরিপ্রেক্ষিতে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এমনকী কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, নিজের দেশে দোষীসাব্যস্ত কোনও বিদেশিকে ভারতে প্রবেশ এবং আশ্রয় দেওয়ার বিষয়েও আরও কঠোর হতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি এবার থেকে কোনও বিদেশি ভারতের কোনও পর্বতশৃঙ্গে আরোহণের ক্ষেত্রেও নিতে হবে সরকারি ছাড়পত্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, কেন্দ্র সরকার বা রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন বা জেলা কালেক্টর বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, এই আদেশের মাধ্যমে জানতে চাইতে পারে যে কেউ আইনের অধীনে বিদেশি কিনা। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে সর্বোচ্চ তিনজন সদস্য থাকবেন, যাদের আইনি অভিজ্ঞতা আছে, যাঁদের কেন্দ্র সরকার যোগ্য বলে মনে করবে। এবার থেকে কোনও বিদেশি কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া ভারতে যে কোনও অঞ্চলে ইচ্ছাধীন মতো যেতে পারবে না। এমনিতেই এসআইআর(SIR) ও এনআরসি(NRC) নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে সংসদের বাইরে এবং ভিতরে এই ইস্যুতে সরব। এমনকী পশ্চিমবঙ্গেও বাংলা ও বাঙালি নির্যাতনের প্রতিবাদে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিষোদ্গার করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়েও তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করছে বঙ্গ বিজেপির নেতারা। এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশিকাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
পুজোর আগেই আবারও বাংলায় আসার সম্ভাবনা প্রধানমন্ত্রীর, আসছেন শাহও

গত সপ্তাহেই মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করতে বঙ্গ সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই সরকারি প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি দমদমে রাজনৈতিক সভাও করেন তিনি। আবারও পুজোর আগেই নরেন্দ্র মোদীর বাংলায় আসার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও পুজোর আগেই দু বার বঙ্গ সফর করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। অতএব ২৬শে বিধানসভা ভোটকে যে পাখির চোখ করতে চাইছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, তা স্পষ্ট। গত সপ্তাহে দমদমে ‘পরিবর্তন সংকল্প যাত্রা’ সভা থেকে তৃণমূলকে সরাসরি নিশানা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তৃণমূলের পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতিকে সামনে রেখে তাদের উৎখাতের জন্য বঙ্গবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মাহাত্ম্যকে তুলে ধরে নতুন বাংলা গড়ার আহ্বান জানান মোদী। তাঁর কথায় উঠে আসে বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’র সেই জনপ্রিয় সংলাপ ‘দাদা, আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম’। সবকিছু ঠিক থাকলে পুজোর আগেই অর্থাৎ আগামী ২০ সেপ্টেম্বর বঙ্গ সফরে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। ওই নদিয়ার নবদ্বীপে একটি প্রশাসনিক সভার পাশাপাশি রাজনৈতিক সভাও করার কথা তাঁর। যদিও মোদীর বঙ্গ সফরের আগেই বাংলায় জোড়া সভা করার কথা অমিত শাহর। আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর বিজেপির ‘পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলন’ হওয়ার কথা। সেখানেই প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা অমিত শাহর। যদিও কোথায় এই সভা হবে তা এখনও নির্দিষ্ট হয়নি। কেননা ১১ হাজার দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে একসঙ্গে কোথায় জায়গা দেওয়া হবে, তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে এখনও আলোচনা চলছে। তবে এই সভা ছাড়াও পুজোর আগে আরও একবার বাংলায় আসবেন অমিত শাহ। মহালয়ার পরের দিন, অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোর উদ্বোধন করার কথা তাঁর। বিজেপি কাউন্সিল সজল ঘোষের পুজো বলে পরিচিত এটি। যদিও এই পুজোর উদ্বোধনে আগেও এসেছেন অমিত শাহ। ওইদিনই বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সাংস্কৃতিক মঞ্চ আয়োজিত দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে অংশ নেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। দু’বছর পরে ওই পুজোর আবার আয়োজন হচ্ছে ইজেডসিসিতে। সব মিলিয়ে বাংলায় বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই বিজেপির কেন্দ্রীয় যে পশ্চিমবঙ্গকে হোম টাউন বানিয়ে ফেলবে, সে ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। কেননা বছর ঘুরলেই বঙ্গে বিধানসভা ভোট। যদিও তার আগেই রয়েছে বিহারের নির্বাচন। অতএব বিহারের নির্বাচন মিটলে যে বাংলায় বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের যাতায়াত আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। কেননা বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কঠিন চ্যালেঞ্জ দিতে যে মরিয়া বিজেপি তা মোদী-শাহর ঘন ঘন বঙ্গ সফর থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা অভিষেকের

বুধবার লোকসভায় ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। গ্রেফতার হওয়া জনপ্রতিনিধিদের অপসারণের লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন বিল। নতুন সংশোধনী এই বিলের আওতা থেকে বাদ যাবেন না প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীরাও। এবার এই বিল নিয়েই কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই বিল নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণের মাঝে তিনি তুলে আনেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গও। অভিষেক লিখেছেন, “বিরোধী দল এবং সমগ্র জাতির সমর্থন থাকা সত্ত্বেও, কেন্দ্রীয় সরকারের এখনও পিওকে পুনরুদ্ধার করার সাহস নেই। তারা কেবল ফাঁকা বক্তৃতা দেয়, কিন্তু যখন ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আমাদের সীমান্ত রক্ষা এবং আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে কাজ করার কথা আসে, তখন তারা কোনও প্রকৃত উদ্যোগ দেখায় না। কেন্দ্র জাতির সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। রাজ্য সরকারকে ফেলতে সবরকম চেষ্টা করছে কেন্দ্র।” এমনকী এ প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, “এই সরকার নিজেকে জনবিরোধী, কৃষকবিরোধী, গরিববিরোধী, তফসিলি জাতিবিরোধী, উপজাতিবিরোধী, ওবিসি-বিরোধী, ফেডারেলবিরোধী এবং সর্বোপরি ভারতবিরোধী হিসেবে প্রমাণ করেছে। দেশের সংবিধান বিক্রি করছে। দেশটাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাবছে।” কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন এই বিল নিয়েই বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার ছলেবলে কৌশলে সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী নেতা ও মুখ্যমন্ত্রীদের জেলে ভরছে। তাঁদের কারো বিরুদ্ধেই এখনও কোনও অভিযোগ প্রমাণ হয়নি, কিন্তু তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে জেলে ছিলেন। নতুন এই বিল আনার ফলে নির্বাচিত অ-বিজেপি সরকার ভেঙে দেওয়া সহজ হবে। এটা আদতে বিজেপির একটা হাতিয়ার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টে সেই বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন বিল পাশ হওয়ার ফলে কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কোনও সরকারে মুখ্যমন্ত্রী হন কিংবা যে কোনও মন্ত্রী— তিনি যদি কোনও গুরুতর অপরাধে গ্রেফতার হন, এবং টানা ৩০ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকেন, তাহলে এই আইন তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে জানাবেন। আর অন্যদিকে, রাজ্যের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল এই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। পাঁচ বছরের বেশি সাজা পেলে মন্ত্রিত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া যাবে এই আইনের ফলে। আর সে কারণেই এই নতুন সংশোধনী আইন নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্ম সার্টিফিকেট দেখতে চাইলেন মমতা

“আগে অমিত শাহ জন্মের কাগজ দেখান।” ঝাড়গ্রামের সভা থেকে এভাবেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এসআইআর এবং এনআরসি শুনিয়ে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে অবস্থাই হোক বাংলায় তিনি কোনদিনও এনআরসি হতে দেবেন না বলে একাধিকবার জানিয়েছেন। বুধবারও ঝাড়গ্রাম থেকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। তিনি বলেন, ” অমিত শাহ আগে জন্মের শংসাপত্র দেখান। তারপর বাকিদের টা দেখতে চাইবেন।” ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথার মোড়ে সভা করেন তিনি। সেখান থেকেই বাঙালি হেনস্তা থেকে এনআরসি, একাধিক ইস্যুকে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করেন তিনি। তাঁর সাফ কথা, “এসআইআরের নেপথ্যে এনআরসি। ভয়ে মানুষ আত্মহত্যা করছে। কিন্তু কেউ ভয় পাবেন না। মানুষের অধিকার কাড়তে দেব না। বিজেপির চালাকি মানুষ বুঝে গিয়েছে। এনআরসি হচ্ছে না, হবেও না।” বিজেপি সরকারকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন “আসল ভোটারের নাম বাদ গেলে সকলের মুখোশ খুলে দেব। নাম বাদ দিলে আমাদের দেহ পেরিয়ে যেতে হবে।” এরপরই তিনি প্রশ্ন করেন, “কোন আইনে নোটিস পাঠাচ্ছে অসম সরকার?” নির্বাচন কমিশনকেও নিশানা করে তিনি।
বাংলায় রণকৌশল ঠিক করতে সোমে সাংসদদের নিয়ে বৈঠক অমিত শাহর

মমতার পাল্টা অমিত শাহ। একাধিক ইস্যুতে যখন বিজেপিকে চাপে ফেলার কী রণকৌশল হবে, তা নির্ধারণ করতে আজ বিকেলে দলীয় সাংসদদের নিয়ে ভার্চুয়াল মিটিং করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ঠিক সেইদিনই অর্থাৎ সোমবার বাংলার বিজেপি সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন অমিত শাহও। এইদিন সন্ধ্যেবেলা বাংলায় ১২ জন বিজেপি সাংসদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা শাহ’র। ইতিমধ্যে বিহারের ভোটের আগে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন নিয়ে তুমুল হইচই। এই এসআইআর-এর বিরোধিতা করে সুর চড়িয়েছে ইন্ডিয়া জোট, যার অন্যতম শরিক তৃণমূল। শুধু দলগত ভাবে নয়, সরকারি ভাবেও এই এসআইআর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। চলতি বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া জোট নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচী নিয়েছে তৃণমূলের প্রস্তাবে সায় দিয়ে। সেই বিক্ষোভে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাংলায় ২৬-শের আগে এই বাংলা ও বাঙালি ইস্যু আর এসআইআর নিয়ে আগাম সতর্কতা নিতে চাইছে পদ্ম শিবিরও। বিভিন্ন রাজ্যের মতো বাংলায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী লাগু হলে কী ভূমিকা হবে বিজেপি সাংসদদের, তা স্থির করতে বাংলার সাংসদদের নিয়ে শাহের বৈঠক বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি বাংলা ও বাঙালি ইস্যুতে খনিকটা হলেও বাড়তি সুবিধাতে তৃণমূল। তার পাল্টা রণকৌশল ঠিক করতে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এরাজ্যে এসআইআর লাগু হলে কীভাবে তার মোকাবিলায় ময়দানে নেমে কাজ করবে বিজেপি, তা নিয়ে বাংলার সাংসদদের পাঠ দেবেন অমিত শাহ। এর পাশাপাশি, আগামী ৯ আগস্ট অভয়ার ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের একবছরে যে নাগরিক মিছিলের ডাক দিয়েছে তাঁর পরিবার, তাতে পতাকা ছাড়া অংশ নিতে চায় বিজেপি। সেই মর্মে অমিত শাহকে নিজেদের কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে।