সুন্দরবন বাঁচাতে ম্যানগ্রোভকে রাখি পরিয়ে পরিবেশ বাঁচানোর অনন্য বার্তা দিলেন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার সর্ব ধর্মের মহিলারা। তাঁদের দাবি, ম্যানগ্রোভ বাঁচলে বাঁচবে নদীর বাঁধ, আর নদীর বাঁধ বাঁচলে বাঁচবে সুন্দরবন এলাকার নদীপাড়ের প্রত্যন্ত সব গ্রাম। আর তাই ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর বার্তা দিতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মহিলারা ম্যানগ্রোভকে ভাই ও দাদা হিসাবে রাখি পরিয়ে একদিকে যেমন ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর বার্তা দিলেন, তেমনি পাশাপাশি সুন্দরবন বাঁচানোর বার্তাও দিলেন। অনন্য এই ছবি ধরা পড়ল হিঙ্গলগঞ্জের প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার বরুনহাট এলাকায়। ইছামতি ও গৌড়েশ্বর নদীর সংযোগস্থলে নদীর বাঁধে ম্যানগ্রোভে রাখি পরালেন গ্রামের মহিলারা। তাদের বক্তব্য, “ম্যানগ্রোভ বাঁচলে বাঁচবে নদীর বাঁধ, বাঁধ বাঁচলে বাঁচবে গ্রাম, গ্রাম বাঁচলে বাঁচব আমরা। বাঁচবে জমির ফসল, মাছের ভেড়ি। আয়লা, আমফান ও বুলবুলের মত ভয়াবহ দুর্যোগ আমরা দেখেছি। আমরা উপলব্ধি করেছি মাসের পর মাস বাড়ি ছেড়ে, গ্রাম ছেড়ে ফ্ল্যাট সেন্টার বা আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার কী দুর্বিষহ পরিস্থিতি। তাই আমরা সমাজকে বার্তা দিতে চাই যে ম্যানগ্রোভ কাটবেন না, ম্যানগ্রোভ বাঁচান এবং বেশি বেশি করে ম্যানগ্রোভ লাগান এবং তাদেরকে রক্ষা করুন। ম্যানগ্রোভ রক্ষা করার জন্যই আমরা যেমন বাড়িতে দাদা ভাইকে রক্ষা করার জন্য রাখি পরাই, ঠিক তেমনই বাধাবিঘ্ন থেকে রক্ষা করার জন্য ম্যানগ্রোভকে রাখি পরিয়ে তাদেরকে রক্ষা করার বার্তা দিলাম।”
পাশাপাশি এদিন সুন্দরবনের ‘স্বপ্ন সমিতি’-র পক্ষ থেকেও সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভে রাখি পরানোর কর্মসূচী নেওয়া হয়। হিঙ্গলগঞ্জের ঘোষ পাড়াতে ‘স্বপ্ন সমিতি’-র পক্ষ থেকে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভকে রাখি পরালেন তারা। বোনেরা ভাইয়ের মঙ্গল কামনার্থে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভকে রাখি পরালেন। তাদের ভাইয়েরা কাজকর্ম সূত্রে বাইরে। তাই ভাইদের মঙ্গল কামনার্থে বোনেরা ম্যানগ্রোভকে রাখি পরালেন। ইছামতি নদীর তীরে সুন্দরবনের বাদাবন অর্থাৎ এই ম্যানগ্রোভ ভরা অরণ্যে এই অভিনব উদ্যোগ নিলেন তারা। এ বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জের প্রধান রূপা গুপ্তা তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। সব মিলিয়ে প্রকৃতি বাঁচানোর এক অভিনব বার্তা দিলেন সুন্দরবনের মহিলারা।







