বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত চরমে পৌঁছাচ্ছে। সম্প্রতি চার অফিসারের সাসপেনশন নিয়ে দুজনের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে। এই আবহে বর্ধমানের সভা থেকে নাম না করেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কার্যত তোপ দাগলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কড়া হুঁশিয়ারি, ‘বিজেপির খেলার পুতুল হবেন না’।
এসআইআর (SIR) নিয়ে এমনিতেই নানা টানাপোড়েন চলছে। বিহারে এসআইআর-এ ইতিমধ্যেই বাদ পড়েছে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম। তা নিয়ে সংসদের বাইরে ও ভিতরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক দলগুলির সাংসদরা। এমনকী কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপি নিয়ে সরব হয়ে কমিশনের তোপের মুখে পড়েছেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার স্বয়ং সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুল গান্ধীকে নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে হলফনামা জমা দিতে বলেছেন। এবার বর্ধমানের সভা থেকে রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করলেন তৃণমূল নেত্রী।
এমনিতেই রাজ্যের চার অফিসারের সাসপেনশন নিয়ে কমিশনের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি থাকতে কারো গায়ে আঁচ লাগতে দেবেন না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শেষপর্যন্ত কমিশনের চাপে বারুইপুর ও ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের দুই ইআরও(ERO) এবং দুই সহকারী ইআরও-কে সাসপেন্ড করতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। কমিশনের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) করতে হবে। যদিও সে বিষয়ে কমিশনের কাছে সময় চেয়েছে রাজ্য সরকার। কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের এই সংঘাতের আবহেই জেলা সফরে গিয়ে, বর্ধমানের মঞ্চ থেকে কার্যত ঘুরিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির দালাল বলেই বার্তা দিলেন তিনি। এদিন মমতা বলেন—”আপনাকে অনেক প্রণাম। কিন্তু আপনারা যদি বিজেপির ললিপপ হন, তাহলে দেশের মানুষ ক্ষমা করবে না। বাংলাকে ওরা দোষ দিচ্ছে।” রাজ্য-কমিশনের মধ্যে সংঘাতের আবহে তৃণমূল সুপ্রিমোর এই হুঁশিয়ারিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও নির্বাচনের আগে এই সংঘাত যে আরও বাড়বে, তারও আঁচ করছেন বিশেষজ্ঞরা।







