রাজপথে নেমে ফের ইন্ডিয়া জোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করলেও সেটিকে কার্যত ‘নাটক’ বলে উড়িয়ে দিলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী।
বুধবার ডোরিনা ক্রসিংয়ের সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে ব্যাট ধরতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই জোটের আর এক শরিক সিপিআইএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেও কংগ্রেস নিয়ে কার্যত নীরব ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের রাশ যে এখনও তারই হাতে বুধবারের প্রতিবাদ সভা থেকে তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিতে চাইলেন মমতা। পাশাপাশি কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক তিনি যে খুব একটা খারাপ করতে চাইছেন না, তাও বুঝিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও গোটা বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ অধীর। পাল্টা ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে বার্তা দিয়ে কংগ্রেস নিয়ে চুপ থাকাকে আসলে মমতার ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেন অধীর। বলেন, “মমতার এই নাটক সারা ভারতবর্ষ জানে, দিল্লির নেতারাও জানে। এই ইন্ডিয়া জোটে কখনও সে থাকে, আবার কখনও থাকে না। নিজের প্রয়োজনে ইন্ডিয়া জোট, ইন্ডিয়া জোট বলে চিৎকার করে। আবার প্রয়োজন মিটে গেলে এই জোটের বিরোধিতা করে। আসলে এই জোটকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে।” এমনকী বুধবার সিপিআইএম-কে আক্রমণ করলেও কংগ্রেস নিয়ে কোনও মন্তব্য না করার বিষয়টিকে ‘কংগ্রেস-তৃণমূল নৈকট্য’ বলে মানতে নারাজ প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তার বক্তব্য, “উনি এর আগে একাধিকবার রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করেছেন, সোনিয়া গান্ধীকে আক্রমণ করেছেন। এমনকি এক সময় কংগ্রেস করতেন বলে ওনার লজ্জা করে এই মন্তব্যও করেছেন। পুরোটাই নাটক।” এর পাশাপাশি এই রাজ্যের বাঙালিদের আখেরে ক্ষতি করে এখন ভোটের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বাঙালি বাঙালি’ করছেন বলেও অভিযোগ অধীর চৌধুরীর। তিনি বলেন,” বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের উপর নির্যাতন হচ্ছে এই ইস্যু নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক খেলা শুরু করেছেন। যে যে রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নির্যাতিত হয়ে চলে আসতে হয়েছে কেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সেখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছেন না। যারা চাকরি হারিয়েছে সেই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের এই রাজ্যে কেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন না?” এখানেই শেষ নয়, অধীর আরও বলেন, “যে সারদার টাকায় উনি দল চালাতেন, যে সারদার টাকায় উনি নির্বাচনে লড়েছেন সেই সারদা চিটফান্ড যাদের টাকা লুট করেছে তারা কি বাঙালি নন? কই তাদের নিয়ে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাস্তায় মিছিল করতে দেখিনি? উল্টে যারা সারদার তদন্ত রুখে দিল, যারা সারদায় জড়িত তাদের বাঁচাতে মিছিল করেছেন। এই যে ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থী রাস্তায় দিনের পর দিন বসে আছে। যে ২৬ হাজারের চাকরি চলে গেল তারা বাঙালি নয়? আসলে সামনে ভোট তাই আর কোনও ইস্যু না পেয়ে এখন এই ইস্যুকে সামনে ধরে মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন।”







