গত শুক্রবার মালদা শহরের রথবাড়ি মোড়ে তৃণমূলের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এবং শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠান হয়। সেখানে যোগ দিয়ে চড়া সুরে বিজেপিকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতারা। এবার ওই মঞ্চ থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘আজকের মাতঙ্গিনী হাজরা’ বলে সম্বোধন করলেন মালদার তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। পাশাপাশি এদিন ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিজেপি নেতা-কর্মীদের রক্তে দেশকে আবার নতুন ভাবে স্বাধীন করার ডাক দিলেন তিনি। তাঁর কথায়, বিজেপি নেতারা আজকের ‘মীরজাফর’। তাঁদের রক্ত নিয়ে দেশে নতুন করে স্বাধীনতা আনার ডাক মালদার তৃণমূল সভাপতির। তিনি বলেন, “এ যুগেও বাংলায় মাতঙ্গিনী হাজরা জন্ম নিয়েছেন, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে লড়াই করে প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে হবে।”
তিনি এদিন বিজেপি নেতা-কর্মীদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “মালদার কালিয়াচকের জালালপুরের বাসিন্দা এক যুবককে বাংলা ভাষায় কথা বলায় রাজস্থান থেকে জোর করে পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপে পড়ে এখন সরকার তাঁকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। তখন তাঁর বাবা, মা, পরিবার কেঁদেছিল। আমরাও বিজেপি নেতাদের পিছনে লাথি মেরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেব। তখন দেখব তাঁর পরিবার কাঁদে কেমন করে।” বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে খুনি এবং ইংরেজরূপী রাক্ষসের সঙ্গে তুলনা করেন তৃণমূলের এই জেলা সভাপতি।
এমনকী মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার পরেও সাংবাদিকদের প্রশ্নেও নিজের মন্তব্যে অনড় আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি আরও বলেন, “ভিন রাজ্যে বাংলায় কথা বলায় পরিযায়ী শ্রমিকরা পুলিশি অত্যাচারের মুখে পড়ছেন। বিজেপি শাসিত রাজ্যে তাঁদের ইচ্ছে করে ধরে ধরে জেলবন্দী করা হচ্ছে। বিজেপির নেতারা জেনে রাখুন— সুকান্ত মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষরা জেনে রাখুন, আপনাদের পরিবারের লোকজনও ভিন্ রাজ্যে গিয়ে বাংলায় কথা বলে বিপদে পড়তে পারেন। তখন বিজেপির নেতার পরিবারের লোকজনরাও রেহাই পাবেন না। তখন কী করবেন আপনারা?”
যদিও তৃণমূল সভাপতির এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেছেন, “তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। তৃণমূল ভয় পাচ্ছে। ২০২৬ শে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ভয়েই উনি প্রলাপ বকছেন। উনি বিজেপি নেতাদের রক্ত পরে ঝরাবেন। আগেও তো নিজের দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাক। মালদায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে একের পর এক নেতা-কর্মী খুন হচ্ছেন। সেগুলো আটকানোর ক্ষমতা নেই, উনি আবার বিজেপি নেতাদের রক্ত কী ঝরাবেন। ওনারা আগে নিজেদের ঘর সামলাক, মানুষের ভালো দেখতে হবে না। তার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টি আছে।”







