পাহাড় রাজনীতির দুই অতি পরিচিত মুখ বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এই দুই নেতা। পাহাড় ও ডুয়ার্সের ভোট রাজনীতিতে বিমল গুরুং এখনও যথেষ্ট বড় ফ্যাক্টর। তাই ২০২৬ বিধানসভার আগে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এই বৈঠককে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে বিজেপির সঙ্গে গুরুংয়ের সম্পর্ক নতুন নয়। ২০০৭ সাল থেকে পাহাড়ে বিজেপির উত্থানের পেছনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল গুরুংয়ের। বিশেষ করে দার্জিলিং লোকসভা আসনে বিজেপির একাধিকবার জয়ের পিছনেও যে গুরুং বড় ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করেছিল, তা সর্বজনবিধিত।
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ২০১৭ সালে পাহাড়ে অশান্তির সময় গুরুংকে একাধিক মামলায় ফাঁসানো হয়। সে সময় একপ্রকার অন্তর্ধানেই ছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময় আত্মগোপন করে থাকার পর ২০২০ সালে কলকাতায় এসে তৃণমূলকে প্রকাশ্যেই সমর্থনের বার্তা দেন তিনি। এমনকি ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট এবং পরবর্তীতে দার্জিলিং পুরনির্বাচনে তাঁর দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়েই নির্বাচন লড়ে। কিন্তু ভোটের ফল আশানুরূপ হয়নি। এরপর ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে আবারও বিজেপিকে সমর্থন জানায় বিমল গুরুংয়ের দল। সে সময় শুভেন্দু অধিকারীর সভায় এসে বিজেপিকে সমর্থনের কথা জানিয়েও ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সর্বময় নেতা। কিন্তু পাহাড়ে লোকসভা ভোটের ফলে তার তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি।
তবে ফের আরও একটা বিধানসভা নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিমল গুরুং এবং রোশন গিরির এই বৈঠক নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা দানা বাঁধছে। যদিও এই বৈঠক শেষে কোনও পক্ষ থেকেই সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটা যে নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাত নয়, তা রাজনৈতিক মহলে স্পষ্ট। তবে কি ২০২৬-এর বিধানসভাকে মাথায় রেখে পাহাড় রাজনীতির নতুন কোনও সমীকরণ তৈরিতেই এদিনের বৈঠক—এই প্রশ্নের উত্তর তো ভবিষ্যতই বলবে। আপাতত গুরুংয়ের নেতৃত্বে পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা যে তাদের হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া তা স্পষ্ট।







