সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত শনিবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে ১ হাজার ৮০৪ জন অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের দিকেই পাল্টা অভিযোগের আঙুল তোলেন ‘টেন্টেড’ শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, স্কুল সার্ভিস কমিশন এর আগে আদালতে দাবি করেছিল যে তাদের কাছে ওএমআর শিট নেই, তাহলে কীসের ভিত্তিতে তারা ‘যোগ্য’ ‘অযোগ্য’ নির্ণয় করল। এমনকী তারা আরও দাবি করেছিল যে, সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে এই তালিকা তৈরি হয়নি। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের একাংশ। যদিও তাদের দাবি খারিজ করে দিল আদালত।
আগামী ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে যে শিক্ষক নিয়োগের নতুন পরীক্ষা হওয়ার কথা, সেই পরীক্ষার বসার অনুমতি চেয়েও কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল ‘টেন্টেড’ শিক্ষকদের একাংশ। প্রায় ৩০০ জনের কাছাকাছি ‘অযোগ্য’ তালিকাভুক্ত শিক্ষক সোমবার আদালতের কাছে আপিল করেন, যাতে তাদের আবার নতুন করে পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধেও অস্বচ্ছতার অভিযোগ তোলেন তারা। যদিও মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় তাদের। এদিন মহামান্য বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না অযোগ্য তালিকাভুক্তরা।
বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য এদিন সরাসরি মামলাকারীদের প্রশ্ন করেন, “এতদিন কোথায় ছিলেন? তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরে কেন আদালতে আসছেন? যেখানে শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে কীভাবে বলছেন আপনারা ‘অযোগ্য’ নন।” যদিও তারপর মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ি পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, “আমার মক্কেলরা দাগি নন। তাঁরা সাদা খাতা জমা দেননি, অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। ফলে তাঁদের পরীক্ষায় বসার অধিকার থাকা উচিত।” এরপরেই বিচারপতি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে তালিকা প্রকাশের পর দাগিদের পরীক্ষায় বসার দাবি কীভাবে তুলছেন?” এর পর বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে প্রকাশিত ‘টেন্টেড’ তালিকা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না। আদালতের স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ, তালিকা প্রকাশের আগে আসেননি কেন? ফলে কমিশনের ‘টেন্টেড’ তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের আর নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার কোনও সুযোগ থাকল না।







