মালদা, ১৩ জুলাই: মৃত্যুর ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও দেহ সৎকার না করে, বিচারের দাবিতে আগলে রেখেছেন বাবা। গ্রামের ক্লাব ঘরে দেহ পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসীরাই। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে গ্রাম জুড়ে চলছে বিক্ষোভ। মানিকচকের ভূতনি বেসরকারি স্কুলের হোস্টেলের মধ্যে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষক সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় অত্যাচারের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের বাবা। কিন্তু পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করেনি। এই পরিস্থিতিতে নিজের ছেলের দেহ সৎকার করছেন না বাবা। বরফ দিয়ে ঘরে রেখেছেন। ন্যায় বিচারের দাবি পরিবার সহ গ্রামবাসীদের। ঘটনার ১২ দিন পার হলেও মৃত ছাত্রর দেহ বরফ দিয়ে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তে ছাত্রের যে রিপোর্ট সামনে এসেছে সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় ছাত্রের পরিবার এবং গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি মালদার ভূতনি থানার হিরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেদারটোলা গ্রামের।
আবার ময়নাতদন্ত করার দাবি তুলছেন তারা। অভিযুক্ত ওই বেসরকারি আবাসিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ক্লাস শিক্ষককে যতক্ষণ না পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ততক্ষণ দেহ থাকবে বরফে সংরক্ষিত অবস্থায়। গ্রামের বাসিন্দারা দিনরাত এক করে দেহ পাহারা দিচ্ছেন। এমনকী মৃত ছাত্রের ন্যায় বিচারের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টেরও দারস্থ হয়েছে মৃত ছাত্রটির পরিবার। মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল জানান, হাইকোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিমধ্যে মামলাও করা হয়েছে।
চলতি মাসের ২ তারিখ রাতে মানিকচকের রোজমেরী মিশনারী স্কুলের হোস্টেল থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় শ্রীকান্ত মণ্ডল নামে অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রের। এই মৃত্যু ঘিরে রহস্য ক্রমশই দানা বাঁধে। বিদ্যালয় অবশ্য প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে যে, ছাত্রটি আত্মহত্যা করেছে। গত ২রা জুলাই বুধবার রাতে দেহ উদ্ধার হয়। তার পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দেহ ময়নাতদন্ত হয়। শুক্রবার পুলিশের কাছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজির হোসেনের বিরুদ্ধে মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অত্যাচারেই মৃত্যু হয়েছে বলেই দাবি মৃত ছাত্রের পরিবারের।
মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল জানান, “আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষের নামে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।”
মৃতদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও সেটা মানতে নারাজ মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল। প্রায় ১২ দিন হয়ে গেল মৃত ছাত্রের সৎকারকার্য সম্পূর্ণ হয়নি। পরিবার ও গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় স্থানীয় ক্লাবের ফ্রিজের মধ্যে বরফ দিয়ে রাখা হয়েছে ছাত্রের মৃতদেহ। গ্রামবাসী ও ছাত্রের মা-বাবার দাবি, অবিলম্বে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হোক।অভিযুক্তদের ধরে ফাঁসির সাজার দাবি জানান তারা। এমনকী ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।







