২০২১ সালে ভোট পরবর্তী হিংসায় কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে করা ব্যবস্থা নিল আদালত। শুক্রবার সিবিআই-এর বিশেষ আদালত ৩ পুলিশ কর্মী এবং একজন তৃণমূল কর্মী সহ মোট ৪ জনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ৪ অভিযুক্ত – নারকেলডাঙ্গা থানার প্রাক্তন অফিসার-ইন-চার্জ শুভজিৎ সেন, তৎকালীন সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার, হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ এবং তৃণমূল কর্মী সুজাতা দে – কে ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে শুভজিৎ সেন ইতিমধ্যেই অবসর গ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মে মাসে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী যে হিংসা হয়, প্রথম থেকেই সেই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। বিজেপি’ র সক্রিয় সদস্য অভিজিৎ সরকারকে নির্বাচনের ফলাফলের দিনই খুন করা হয়। অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই মামলার সাথে যুক্ত থাকা ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করে। কয়েকদিন পরই এই গ্রেফতারের নির্দেশ দিলো বিশেষ সিবিআই আদালত। প্রথমে ৩ জন পুলিশ কর্মীর নাম প্রথমে চার্জশিটে না থাকলেও । তবে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন। সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারপতি রোহন সিনহার পর্যবেক্ষণ ” রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে সমাজের কি হবে? ” পাশাপাশি এদিন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা শুভজিৎ সেনের আইনজীবীকে বিচারপতি গ্রোহন সিনহা জানতে চান,” আপনার মক্কেল ঘটনার উনিশ দিন পর কিভাবে আইসি থেকে এসিপি হলেন? ” অর্থাৎ পুলিশের বিরুদ্ধে এই ঘটনার যে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ বারবারই মৃতের পরিবার তুলছিল তাতে কার্যত শিলমোহর দেন বিচারপতি সিনহা। তবে এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন
খুন হওয়া অভিজিৎ সরকারের ভাই বিশ্বজিৎ সরকার। তিনি বলেন, ” অভিযোগে নাম থাকা সত্ত্বেও, দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে কখনও হেফাজতে নেওয়া হয়নি বা কলকাতা পুলিশ তদন্ত করেনি, বরং তাকে পদোন্নতি দিয়েছে,”
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এই রায় থেকে সেইসব পুলিশ কর্মীদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ তারা এখন সংবিধান পরিবর্তে তৃণমূলের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।”
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজনৈতিক খুনের তদন্ত শুরু হয়, গোটা ঘটনার পেছনে তৃণমূলকে দায়ী করে বিজেপি। যদিও প্রথম দিন থেকে এই অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস অস্বীকার করে এসেছে। এই ঘটনায় মানিকতলার বিধায়ক পরেশ পাল, মেয়র পরিষদ স্বপন সমাদ্দার ও স্থানীয় কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষ কেউ হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে হাইকোর্টে আগাম জামিনের মামলা চলায় এই তিনজনের কেউই এদিন আদালতে হাজিরা দেননি।







