সামনে বিহার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সেখানে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য সমীক্ষার কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। তাতে নথি হিসাবে দেখাতে হচ্ছে নিজের এবং বাবা-মায়ের জন্মের শংসাপত্র। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ডের মতো নথি এক্ষেত্রে বিবেচিত হচ্ছে না। তা নিয়ে মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত ১০ জুলাই শীর্ষ আদালতে বিহারের ভোটার সমীক্ষার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার ভিত্তিতে চলা শুনানিতে কমিশনকে পরিচয়-তথ্য হিসাবে আধার, রেশন ও ভোটার কার্ডকে গণ্য করার পরামর্শ দিয়েছিল বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ।ওই দিনই নির্দেশ দেওয়া হয়, ২১ জুলাইয়ের মধ্যে জবাব পেশ করতে হবে ইসিআইকে। সেই নির্দেশ মেনে সোমবার বিকেলে হলফনামা জমা দেয় নির্বাচন কমিশন। হলফনামায় দাবি করা হয়েছে, আইনবিরুদ্ধভাবে বা ভোটারদের অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে না। এসআইআর-এর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা খারিজেরও আবেদন জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তির ভোট দেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে কিনা সেটা যাচাই করতে নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইতেই পারে কমিশন। এই অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, আধার কার্ড কেবল পরিচয়পত্র। ভোটার হওয়ার যোগ্যতা প্রমাণে আধার কার্ডের ভূমিকা নিয়ে ৩২৬ ধারায় বিধিনিষেধ রয়েছে।এই সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দু’টি এবং কর্ণাটক হাইকোর্টের একটি পুরনো নির্দেশের অংশও হলফনামা তুলে ধরেছে কমিশন।
কমিশনের দাবি, পুরনো ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই এপিক নম্বর তৈরি হয়। তাই ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রমাণপত্র হিসাবে ভোটার কার্ডের বৈধতা নেই। অন্যদিকে দেশজুড়ে ভুয়ো রেশন কার্ডের রমরমা যেভাবে বেড়েছে, তাতে করে রেশন কার্ডের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তাই ভোটার তালিকার যোগ্যতা প্রমাণে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র হিসাবে মোট ১১টি নথির তালিকা দিয়েছে কমিশন। কিন্তু শীর্ষ আদালতের সুপারিশ সত্ত্বেও সেই তালিকায় আধার কার্ড, ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করেনি কমিশন। যদিও নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়েছে, এসআইআর তালিকায় নাম না থাকলেও কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৮শে জুলাই। আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে বিহারের সাধারণ জনগণ।







