সমস্ত রাজ্যে তৈরি করতে হবে ডিটেনশন ক্যাম্প। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বহিষ্কার করার আগে যাতে তাঁদের গতিবিধি সীমাবদ্ধ করা যায় এবং নজরদারি চালানো যায়, সে কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনকী এই ডিটেনশন ক্যাম্পে কাদের রাখা হবে তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে সরকার।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কোনও সন্দেহভাজনকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠাতে পারবে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। যদি ওই সন্দেহভাজন বিদেশি দাবি করেন যে তিনি বিদেশি নন। তারপরও এই নিয়ে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে না পারেন কিংবা আদালত থেকে এই নিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করতে না পারেন, তবে তাঁকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে। অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী বিদেশিদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তাঁদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই ডিটেনশন শিবিরে পাঠানো হবে। সম্প্রতি পাশ হওয়া অভিবাসন ও বিদেশি আইন, ২০২৫-র পরিপ্রেক্ষিতে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এমনকী কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, নিজের দেশে দোষীসাব্যস্ত কোনও বিদেশিকে ভারতে প্রবেশ এবং আশ্রয় দেওয়ার বিষয়েও আরও কঠোর হতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি এবার থেকে কোনও বিদেশি ভারতের কোনও পর্বতশৃঙ্গে আরোহণের ক্ষেত্রেও নিতে হবে সরকারি ছাড়পত্র।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, কেন্দ্র সরকার বা রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন বা জেলা কালেক্টর বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, এই আদেশের মাধ্যমে জানতে চাইতে পারে যে কেউ আইনের অধীনে বিদেশি কিনা। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে সর্বোচ্চ তিনজন সদস্য থাকবেন, যাদের আইনি অভিজ্ঞতা আছে, যাঁদের কেন্দ্র সরকার যোগ্য বলে মনে করবে। এবার থেকে কোনও বিদেশি কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া ভারতে যে কোনও অঞ্চলে ইচ্ছাধীন মতো যেতে পারবে না।
এমনিতেই এসআইআর(SIR) ও এনআরসি(NRC) নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে সংসদের বাইরে এবং ভিতরে এই ইস্যুতে সরব। এমনকী পশ্চিমবঙ্গেও বাংলা ও বাঙালি নির্যাতনের প্রতিবাদে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিষোদ্গার করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়েও তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করছে বঙ্গ বিজেপির নেতারা। এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশিকাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।







