পুজোর আগেই নতুন জিএসটি(GST) রেট বেঁধে দিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। গত বুধবার ছিল ৫৬তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক। সেই বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের উপস্থিতিতে নতুন জিএসটি রেট ধার্য্য করল অর্থমন্ত্রক। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হবে নতুন এই জিএসটি রেট। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বাণিজ্য শুল্ক ৫০ শতাংশ করায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে ভারতের বাণিজ্য মহল। স্বাভাবিক ভাবেই সকলের নজর ছিল জিএসটি কাউন্সিলের এই বৈঠকের উপর। বাণিজ্য ক্ষেত্রে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতে এই বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এই বৈঠকে মূলত দুই স্ল্যাবের জিএসটি কাঠামো সাজাতে চেয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছে কাউন্সিলও। ফলে এখন থেকে আর আগের মতো ৫, ১২, ১৮ ও ২৮ শতাংশের জিএসটি স্ল্যাব থাকছে না। পরিবর্তে জিএসটি অনেক সরলীকরণ করে ৫ শতাংশ ও ১৮ শতাংশের দুটি স্ল্যাব করা হয়েছে। তবে বিলাসবহুল দ্রব্যের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ জিএসটিই বহাল থাকছে।
সরকারের এই নতুন জিএসটি রেটের ফলে সস্তা হতে পারে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন— ঘি, মাখন, চিজ, পাস্তা, সাবান, সস ও বিভিন্ন মিস্টিজাত খাবার। কেননা আগে এগুলোর উপর জিএসটির হার ছিল ১২ থেকে ১৮ শতাংশ। এখন তা কমিয়ে আনা হয়েছে ৫ শতাংশে। এই একই জিএসটি রেটের আওতায় পড়ছে বিভিন্ন ড্রাই ফুড যেমন— কাজু, পেস্তা, আমন্ড, খেজুর ও বেশ কিছু রকমের ফল। পাশাপাশি দুগ্ধজাত দ্রব্য যেমন— দুধ, পনির, ছানা, রুটি ও পিৎজার উপর থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে জিএসটি। একই সঙ্গে দাম কমবে বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম যেমন থার্মোমিটার, অক্সিজেন, ডায়াগনস্টিক কিট প্রভৃতির ক্ষেত্রে। এছাড়াও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন— তেল, সাবান, শ্যাম্পু, দেশলাই, মোমবাতি, শেভিং ক্রিম প্রভৃতিতে আগে যেখানে ১২ থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি দিতে হত, এখন থেকে তা দিতে হবে ৫ শতাংশ। পাশাপাশি গ্রানাইট, মার্বেল, ইঞ্জিনিয়ারিং উডের মতো পরিবেশ বান্ধব নির্মাণ সামগ্রীর উপরও মাত্র ৫ শতাংশ কর প্রযোজ্য হবে।
এই নতুন জিএসটি মডেলের দ্বিতীয় ধাপে রাখা হয়েছে বিভিন্ন আসবাবপত্র, খেলাধূলা ও খেলনা সামগ্রী, বিভিন্ন হস্তশিল্প ও স্টেশনারি জিনিসপত্র, লেখাপড়ার সরঞ্জাম যেমন— পেন, পেন্সিল, নোটবুক প্রভৃতি। এমনকী সিমেন্টের উপর জিএসটির হার ২৮ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দাম কমতে পারে সাইকেল, মোটরবাইক, ছোট গাড়িও।
তবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমলেও, কমছে না নেশার দ্রব্য সামগ্রী, যেমন— বিভিন্ন তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিড়ি, সিগারেট, গুটখা, পানমশলা প্রভৃতি। এদের ক্ষেত্রে জিএসটি রেট ২৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। এই জিএসটি রেটের আওতায় পড়ছে বিভিন্ন ধরনের পানীয়ও।







