সামনেই শুরু হবে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-র করা একটি মন্তব্যে সোরগোল পড়ে গেছে জাতীয় রাজনীতিতে। প্রধানমন্ত্রী শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগে স্পষ্টতই বার্তা দিয়েছেন, এই অধিবেশন চলাকালীন সংসদের ভিতর কোনও ধরনের নাটক বরদাস্ত করা হবে না। এবার প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করলেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
তাঁর অভিযোগ, “সাধারণ মানুষের দাবি নিয়ে বিরোধীরা যদি সংসদে প্রশ্ন তোলে, সেটা কি নাটক?” এরই পরিপ্রেক্ষিতে অভিষেক এদিন নোটবন্দির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “নোটবন্দির সময় যখন সাধারণ মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড় করিয়ে মারা হয়েছিল, তখনও তো তার দায় চাপানো হয়েছিল অন্যদের উপর। সরকার তাহলে কীসের দায় নেবে?”
পাশাপাশি দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিস্ফোরণ, হামলা ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের মতো ঘটনা বেড়ে যাওয়ায়— এ বিষয়ে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “দেশে যে এত এত বিস্ফোরণ, হামলার ঘটনা ঘটছে, তার দায় কার?” একই সঙ্গে বাংলায় SIR চলাকালীন ৪০ জনের উপর মানুষের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “এত মৃত্যুর পরেও দায় এড়াতে চাইছে কেন্দ্র।”
২৬শে বাংলায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারে ‘সেবাশ্রয় ২’ প্রকল্পের সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্বৈতহীন ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট দাবি, “আমরা SIR প্রক্রিয়ার বিরোধী নই। সময় নিয়ে, যথাযথ পদ্ধতি মেনে SIR পরিচালনা করুক নির্বাচন কমিশন।” এদিন SIR প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিগত প্রয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন,”বিএলও(BLO)দের নির্দিষ্ট কোনও ট্রেনিং নেই। বিএলও অ্যাপ যথাযথ কাজ করছে না। অমানুসিক চাপে কাজ করতে হচ্ছে বিএলওদের।”
সোমবার নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করার পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনের দামামাও বাজিয়ে দিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জোর গলায় বলেন, “বাংলার মানুষ সব দেখছে। আগামী নির্বাচন মানুষ বিজেপিকে তার যোগ্য জবাব দেবে।” পাশাপাশি রাজ্যে SIR-এর ফলে তৃণমূলের আসন সংখ্যা বাড়বে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। সব মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল আরও বাড়াতে এটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কৌশল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। কেননা বাংলা বিজেপি এক ইঞ্চি জমিও যে ছেড়ে দিতে রাজি নয় তৃণমূল, তা আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যেই স্পষ্ট।







