উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর বুধবার নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে একাধিক ভুয়া ভোটারের অভিযোগ তোলেন। দুলাল বরের দাবি, বাগদার বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান খানের মেয়ে বুশরা খান ও জামাই মাসুদ খান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে থাকে, কিন্তু এখানকার ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে তাদের। এবং শ্বশুর মিজানুর রহমান খাঁনকে বাবা বানিয়ে এখানকার ভোটার হয়েছেন মাসুদ খান।
তাঁর আরও অভিযোগ, বয়রা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জাভেদ খাঁনের বাবা আসপাকুর খাঁনকে বাবা সাজিয়ে কবিরুল খান ভোটার হয়েছেন। কবিরুল জাভেদের মামা, এখন তিনি এই এলাকায় থাকেন না। এছাড়াও শশুরকে বাবা সাজিয়ে এভাবে ভোটার তালিকায় নাম তোলার একাধিক অভিযোগ করেছেন বিজেপির এই প্রাক্তন বিধায়ক। বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েত সহ আরও কয়েকটি পঞ্চায়েতের ৭৭৫টি ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ তুলেছেন দুলাল বর।
এই বিষয়ে ইমেল মারফত নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে দাবি করেছেন। তাঁর করা অভিযোগের কপি অভিযুক্তরা পেয়ে যাচ্ছেন, এর ফলে তাঁর জীবন সংশয় হতে পারে বলেও দাবি করেছেন দুলাল বাবু। এই বিষয়ে তিনি বিডিও, থানার ওসি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন।
যদিও বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের মিজানুর রহমান খাঁন দুলাল বরের অভিযোগ সত্য বলে স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কোনও ছেলে নেই। ছোট থেকে ভাইপো মাসুদ খান তার কাছে থাকতেন। পরবর্তীতে জামাই হয়েছে, সেই কারণে তাঁকে বাবা বানিয়ে ভোটার হয়েছিলেন। এখন যেহেতু মেয়ে-জামাই এখানে থাকে না। তাই তিনি তাদের ভোট বাতিল করবার আবেদন করবেন।
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা জাভেদ খাঁন জানিয়েছেন, “আমার বাবাকে বাবা বানিয়ে কোনও এক ব্যক্তি ভোটার হয়েছিলেন। আমরা জানতে পেরে ইতিমধ্যেই সেই ভোট কেটে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি। বিজেপির তরফ থেকে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”
এই বিষয়ে বাগদা পূর্ব ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পরিতোষ কুমার সাহা জানিয়েছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস ভূতুড়ে ভোট কেটে দেওয়ার জন্য আগে থেকেই কাজ করছে। আমরা চাই ভূতুড়ে ভোটার কেটে দেওয়া হোক। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে প্রবেশ করে কী করে ভোট দিচ্ছে। সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব তো কেন্দ্রীয় সরকারের। নির্বাচন কমিশনও কেন এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”
অন্যদিকে দুলাল বরের অভিযোগ প্রসঙ্গে বাগদার বিডিও প্রসূন কুমার প্রামাণিক জানিয়েছেন, “আমরা যা অভিযোগ পাচ্ছি তার সঠিক তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমি একজন সরকারি আধিকারিক। আমার কাছ থেকে কোনও তথ্য কোনও জায়গায় প্রকাশিত হয় না। যে কেউ তার মতামত জানাতেই পারেন।”







