“এটা বিহারের সমীরকণ, বাংলার সঙ্গে কোনওরকম যোগ নেই”: সাফ বার্তা কুণালের

বিহারে(Bihar Election) গেরুয়া ঝড়। যে এসআইআর নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে এত বিতর্ক, সেই এসআইএর(SIR) পরবর্তী প্রথম নির্বাচন বিহারে। সেখানেই কার্যত ইতিহাস তৈরি করেছে এনডিএ জোট। ২০০-এর ওপর আসন পেয়ে সরকার গড়তে চলেছে বিজেপির(BJP) এনডিএ(NDA) জোট। তারপর থেকেই স্বাভাবিকভাবে বঙ্গ বিজেপি নেতারাও সুর চড়াতে শুরু করে দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতেই এবার আসরে তৃণমূল(TMC) নেতৃত্বও। বিহারের ফলাফল যে বাংলার ওপর কোনও প্রভাব ফেলবে না স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। এসআইএর পরবর্তী বিহারের ফলাফল নিয়ে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বরা নানান কথাবার্তা বললেও, বাংলায় এমনটা হওয়ার কোনওরকম সম্ভাবনাই দেখছেন না তৃণমূলের(TMC) নেতৃত্বরা। বিজেপির নেতারা যখন বলছেন অঙ্গ, কলিঙ্গ হয়ে গিয়েছে এবার বঙ্গের পালা। সেই সময় পাল্টা দিতে পিছিয়ে নেই তৃণমূল নেতারাও। কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh) স্পষ্ট বার্তা, “এটা বিহারের সমীরকণ। বাংলার সঙ্গে কোনওরকম যোগ নেই। বাংলায় কোনওরকম প্রভাব পড়বে না। বাংলায় ঐক্য, উন্নয়ন, সম্প্রীতি, অধিকার, আত্মসম্মান ফ্যাক্টর। ২৫০+ ভোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আবার মুখ্যমন্ত্রী”। তিনি আরও জানিয়েছেন, “বিহার দেখিয়ে বাংলাকে হুমকি দিয়ে বিজেপির যে নেতারা বিবৃতি দিচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন, তারা অকারণ সময় নষ্ট করছেন। বাংলার মানুষের অধিকার, আত্মসম্মানকে আঘাত করে শুধু অন্য রাজ্য দেখিয়ে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। এখানে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা মতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ভরসা। বিহার সহ বহু রাজ্যও তাঁর উন্নয়নের মডেলও ফলো করছে। বাংলার মানুষ সার্বিক স্বার্থেই তৃণমূলকে সমর্থণ করেন এবং করবেন”। গত ৪ নভেম্বর থেকে বাংলাতে শুরু হয়েছে এসআইআর। এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই বিজেপি নেতারা সুর চড়াচ্ছেন। অনেকেই বলছেন ভোটার তালিকা থেকে নাকি প্রায় দেড় কোটির মতো ভুয়ো ভোটারের নাম বাদ যাবে। তবে পাল্টা প্রতিবাদে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। আগামী ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিহার নির্বাচনের ফলাফলকে সামনে রেখে বিজেপি যেমন ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছেন। তেমনই পাল্টা ছক প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূলও। রাজনৈতিক চাপান উতোর যে বাড়তে শুরু করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিহারে গেরুয়া ঝড়, বাংলায় হুঙ্কার শুভেন্দু – সুকান্তদের

সমস্ত পূর্বাভাস, আশঙ্কাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে বিহারে(Bihar Election) ফের গেরুয়া ঝড়। বিপুলভাবে জিতে এবার বিহারে সরকার গড়ার পথে এনডিএ-জোট(NDA)। এসআইআর পরবর্তী বিহার ভোটেই কার্যত বাজিমাত বিজেপি(BJP) এবং নীতিশ কুমারের(Nitish Kumar) জেডিইউ জোটের। এই ফল দেখার পরই হুঙ্কার বঙ্গ বিজেপির দুই প্রধান নেতা শুভেন্দু অধিকারি(Suvendu Adhikari) এবং সুকান্ত মজুমদারের(Sukanta Majundar)। বিহার, উড়িষ্যার পর এবং বাংলাতেও নাকি হতে চলেছে পালা বদল। আর এই নিয়েই ফের একবার উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। এসআইআর(SIR) এবারের নির্বাচনে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার প্রতিটা রাজনৈতিক দল গুলোর। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই বঙ্গ রাজনীততে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতোর। পশ্চিমবঙ্গের আগেই বিহারে হয়েছিল এসআইআর। সেই নিয়েও কম সুর চড়ায়নি বিজেপি(BJP) বিরোধী দলগুলো। তাই এই বিহার নির্বাচন যে সকলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এসআইআর পরবর্তী বিহার(Bihar Election) নির্বাচনে কার্যত ইতিহাস গড়তে চলেছে এনডিএ জোট। জেডিইউয়ের থেকে বেশি আসনে জয় পয়েছে বিজেপি। এটা দেখার পরই শুভেন্দু অধিকারির(Suvendu Adhikari) রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বিরাট বার্তা। শুভেন্দু অধিকারি বলেছেন, “বিহারের পর এবার বাংলা। এসআইআরের পর স্বচ্ছ ভোটার তালিকায় ভোট হবে। ২০২১ সালে নন্দীগ্রাম যেটা করেছে, ২০২৬ সালে গোটা বাংলায় দেখা যাবে সেই ছবি”। শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারি নয়, একইরকমভাবে সুর চড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সম্পাদক সুকান্ত মজুমদারও(Sukanta Majumdar)। তাঁর তো স্পষ্ট কথা, অঙ্গ, কলিঙ্গ হয়ে গিয়েছে, এবার পালা বঙ্গ জয়ের। তিনি বলেন, “অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গ। অর্থাৎ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা। কলিঙ্গ মানে উড়িষ্যা জয় হয়ে গিয়েছে। অঙ্গ মানে বিহার জয় হয়ে গেল। এবার পালা বাংলার। বাংলার মানুষ নিশ্চই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। বিহারের মতো বাংলার মানুষও জঙ্গলরাজ থেকে মুক্তি পেতে চান”। এসআইআর পরবর্তী বিহারেই ছিল প্রথম নির্বাচন। সেখান এনডিএ জোট এবং বিজেপির এমন সাফল্য যে বঙ্গ বিজেপিকে বাড়তি অক্সিজেন যোগাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আগামী ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে কী হয় সেটাই দেখার অপেক্ষায় সকলে।
বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার চিকিৎসক

হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল বারাসত মেডিকেল কলেজের (Barasat Medical College) তৃতীয় বর্ষের চিকিৎসক দীননাথ কুমারের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত এই চিকিৎসক দীননাথ কুমার আরজি কর মেডিকেল কলেজের (RG Kar Movement) আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির (Child Molestation) অভিযোগে বৃহস্পতিবার বারাসাত মেডিকেল কলেজ থেকে তাকে গ্রেফতার করল বারাসাত থানার পুলিশ। হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন করার সময় অভিযোগকারী ওই নাবালিকার প্রাথমিক চিকিৎসা করবার সুযোগে তার শ্লীলতাহানি করে দীননাথ কুমার। এরপর এই ঘটনার কথা নাবালিকা তার পরিবারকে জানালে, পরিবারের তরফ থেকে ওই পিজিটি চিকিৎসক দীননাথ কুমারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার পরিবার। দীননাথ কুমার বিহারের বাসিন্দা। বারাসাত মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বারাসাত মেডিকেল কলেজের বয়েজ হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করতেন তিনি। এমনই জানান বারাসাত মেডিকেল কলেজের অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট সুব্রত মন্ডল। দীননাথ কুমারের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছেন এবং তদন্ত করে দেখছে।” পুরো বিষয়টিই যেহেতু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে তাই এই বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। তবে তদন্তে প্রকৃত সত্য সামনে আসুক এবং দোষী শাস্তি পান বলেই জানান তিনি। গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত চিকিৎসক দীননাথ কুমারকে। শুক্রবার অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ৩৫১(২)/৭৪/৭৬/বিএনএস এবং ৮ পক্সো ধারায় মামলার রুজ করে আদালতে পেশ করা হবে।
মতুয়াদের নাগরিকত্বের আন্দোলনকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ডাক অধীরের

এসআইআর (SIR)-এর প্রতিবাদে ও মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে গত ৫ নভেম্বর থেকে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে (Thakurnagar Thakurbari) আমরণ অনশনে বসেছেন তৃণমূলের(TMC) রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরের (Mamata Thakur) অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সাধু-গোঁসাইরা। ইতিমধ্যেই অনশন মঞ্চে অনেকেই গুরুতর অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকেই ভর্তি হয়েছেন বনগাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে। এই আবহে গত বুধবার অনশনে যোগ দেন মমতা ঠাকুর নিজে। অনশনের নবম দিনে, অর্থাৎ ১৩ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার সর্বভারতীয় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য শ্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) ঠাকুরনগরে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের (All India Matua Mahasongha) চলমান অনশন মঞ্চে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি সমর্থন করেন এবং অনশনরতদের স্বাস্থ্যের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অধীর চৌধুরী অনশনকারীদের অনুরোধ করেন যেন তাঁরা আপাতত অনশন স্থগিত করেন এবং তাঁদের আন্দোলনকে আরও সুসংগঠিত রূপে এগিয়ে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “প্রয়োজনে দিল্লিতে গিয়ে এই দাবি নিয়ে আন্দোলন করা যেতে পারে, আমি সর্বতোভাবে পাশে থাকব।” তিনি আরও আশ্বাস দেন যে, সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে বিষয়টি তিনি দলের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে উত্থাপনের উদ্যোগ নেবেন। তাঁর দাবি, কেন্দ্র সরকার যেন সংসদে একটি অর্ডিন্যান্স আনে, যাতে SIR প্রক্রিয়ায় মতুয়া ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সমাজের নাম বাদ না পড়ে। বর্তমান SIR প্রক্রিয়ায় বাংলায় বিপুল সংখ্যক মতুয়া এবং তপশিলি জাতির মানুষের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই আশঙ্কার প্রতিবাদে গত ৫ নভেম্বর থেকে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ ঠাকুরনগরে আমরণ অনশন শুরু করেছে। গত ১০ নভেম্বর অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লিতে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বাসভবনে সাক্ষাৎ করে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে এবং ঠাকুরনগরের অনশন মঞ্চে তাঁর উপস্থিতির অনুরোধ জানায়। সেই আহ্বানেই বৃহস্পতিবার তিনি দিল্লি থেকে ঠাকুরনগরে এসে অনশন মঞ্চে উপস্থিত হন ও মতুয়া সমাজের দাবির প্রতি কংগ্রেসের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।