নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর

নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। শনিবার দুপুরে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভক্তিপুর গ্রামে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,ওই গ্রামেরই এক বাড়িতে বহুদিন ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চালু রয়েছে। অভিযোগ,কেন্দ্রের কর্মী মমিনা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের নিম্নমানের খাবার দিচ্ছেন। কখনও দেওয়া হচ্ছে পচা আলু বা সবজি, কখনও আবার পচা ডিম। এমনকি অনেক সময় বিভিন্ন অজুহাতে কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।প্রায় দেড় বছর ধরে এই অনিয়ম চলছে বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা।শনিবার দুপুরে যখন শিশুদের খাবার বিতরণের সময় আসে, শেষের দিকে কয়েকজন খাবার নিতে গেলে তখন কর্মী মমিনা খাতুন তাদেরকে খাবার দিতে অস্বীকার করেন বলেন খাবার শেষ হয়ে গেছে।কিন্তু সেই সময়ই স্থানীয়রা দেখতে পান রাঁধুনি চুপিসারে কিছু খাবার বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন।সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নজরে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। মুহূর্তের মধ্যেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র এলাকায়। বিক্ষোভকারী আব্দুল মালেক বলেন,আমাদের গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য যে খাবার সরকার থেকে দেওয়া হয়,তা যদি পচা হয় বা কেউ বাইরে বিক্রি করে দেয়,তাহলে এটা চরম অন্যায়।খাবার সঠিক নয় এবং নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে।বারবার বলা সত্ত্বেও কোন কর্ণপাত করেনি।আমরা চাই এর তদন্ত হোক। আরেক বিক্ষোভকারী নুরবানু বিবি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“আমাদের সন্তানদের পচা খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। অনেক সময় সেন্টার বন্ধ থাকে। বারবার বলার পরেও কোনও ফল হয়নি। আজ আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায় চাই। ভক্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা সমিদুল বলেন,প্রায় দেড় বছর ধরে আমরা এই ধরনের অনিয়ম দেখছি। অনেকবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আজ আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে।” এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সিডিপিও আব্দুস সাত্তার বলেন,ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদি কোনও অনিয়ম প্রমাণিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চোখের জলে শেষ শ্রদ্ধা কাশ্মীরের তুষারঝড়ে শহিদ বাংলার প্যারা কমান্ডো সুজয় ঘোষকে

কাশ্মীরের অনন্তনাগে তুষারঝড়ে প্রাণ হারালেন দেশের দুই এলিট প্যারা কমান্ডো। তাঁদের মধ্যে একজন বীরভূমের রাজনগরের কুন্ডীরা গ্রামের সুজয় ঘোষ। গত শুক্রবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে আহত দুই প্যারা কমান্ডোকে উদ্ধার করে সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সুজয়ের পরিবারের কাছে তাঁর শহিদ হওয়ার খবর আসে। কান্নায় ভেঙে পড়ে সুজয়ের মা নমিতা ঘোষ, বাবা রাধেশ্যাম ঘোষ সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। নিতান্তই দরিদ্র পরিবারের সুজয় বছর সাতেক আগে ২০১৮ সালে সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। তাঁর হাত ধরেই পরিবার ধীরে ধীরে সচ্ছ্বল হচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথেই বাড়ির ছেলের এই মর্মান্তিক পরিণতি যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সুজয়ের বৃদ্ধ দাদু বামাপদ ঘোষ, দাদা মৃত্যুঞ্জয় ঘোষরা। ঢুকরে কেঁদে উঠছেন বারবার। অবশেষে শনিবার বিকেলে সুজয় ঘোষের কফিনবন্দি দেহ পৌঁছালো বীরভূমের রাজনগর ব্লকের কুণ্ডীরা গ্রামে। মুহূর্তের মধ্যেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে। সকাল থেকেই গ্রামের রাস্তার দুধারে মানুষের ঢল, শহিদকে শেষবারের মতো এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমায় হাজার হাজার মানুষ। মাত্র ২৭ বছর বয়সে দেশের জন্য প্রাণ দিলেন সুজয় ঘোষ। সেনা ট্রাক গ্রামের প্রবেশদ্বারে ঢোকার মুহূর্তেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা নমিতা ঘোষ ও বাবা রাধেশ্যাম ঘোষ। চোখে জল পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও প্রতিবেশীদের। কান্নাজড়িত গলায় সুজয়ের মা বলেন, “আমার ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, এটাই আমার গর্ব।” সুজয়কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এদিন উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী এবং বিজেপি জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও সুজয়কে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। শহিদের স্মৃতিতে কুণ্ডীরা গ্রামের আকাশ বাতাস যেন মুখরিত হয়ে ওঠে ‘সুজয় ঘোষ অমর রহে’ স্লোগানে। একদিকে বীর সন্তান হারানোর বেদনা, অন্যদিকে দেশের জন্য তাঁর আত্মবলিদানে গর্বিত মা— এই দুই অনুভূতির মাঝে, কিছুক্ষণের জন্য যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা বীরভূম জেলা।
এসআইআর নিয়ে হুঁশিয়ারি তৃণমূলের

এসআইআরের(SIR) কথা ঘোষণার পর থেকেই আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। পুজোর পর থেকে ফের এসআইআর(SIR) নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। এসআইআরের বিরোধিতা করে পের একবার সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের বিজয়া সম্মিলনীতে গিয়ে ফের একবার এসআইআর নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের(TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। তাঁর সাফ বার্তা, একজনও প্রকৃত ভোটারের নামও যদি বাদ যায় তবে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের(Election Comission Of India) অফিস ঘেরাও হবে। কয়েকদিন আগেই এসআইআর নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর(Shantanu Thakur)। তিনি বলেছিলেন রাজ্যে নাকি এসআইআরে(SIR) বাদ যাবে ১ কোটি ২০ লক্যের মতো মানুষের নাম। সেই সময়ই প্রতিবাদে সরব হয়েছিল তৃণমূল। এবার এসআইআরের বিরোধিতা করে কার্যত হুঙ্কার দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। বিজয়া সম্মিলনীতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, “আগে বলেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। কিন্তু তা করে হেরেছিল ওরা। এবার ভোটার তালিকায় কারচুপি করতে চাইছে। তাই নির্বাচন কমিশনকে এসব কাজে লাগিয়েছে। যেভাবে দিল্ল, মহারাষ্ট্রে করেছিল, সেভাবেই এবার অন্য রাজ্যের ভোটারদের নাম তালিকায় ঢোকাতে চাইছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা ধরে ফেলেছেন”। কুণাল(Kunal Ghosh) আরও বলেন, “এসআইআর নিয়ে এককাট্টা থাকুন। মাথার ওপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন। একজনও আসল ভোটারের নাম যদি তালিকা থেকে বাদ যায়, তবে দিল্লিতে এক লক্ষ লোক নিয়ে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও করা হবে”। এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় এই এসআইআর ইস্যু নিয়ে। পুজোর পরই এসআইআর করার কথা কার্যত পরিস্কার করে দিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর তারই বিরোধিতায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। লড়াই যে ক্রমশই জমে উঠছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভাঙল কালভার্ট, যোগাযোগ বিছিন্ন কলকাতা-দীঘার!

পুজোর মরসুম চলছে। সেইসঙ্গে সপ্তাহের শেষ। বাঙালিদের অন্যতম প্রিয় ঘুরতে যাওয়ার জায়গা দীঘা। কিন্তু সেই দীঘা যাত্রাতেই এবার বিপত্তি। ভোগান্তির মুখে বহু পর্যটক। ১১৬ বি জাতীয় সড়কের কালভাট ভেঙে রাস্তা বন্ধ। আর তাতেই কলকাতা থেকে দীঘার সম্পর্ক কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। কোনও গাড়িই কলকাতা থেকে দীঘার উদ্দেশে যেমন যেতে পারছে না, তেমনই কলকাতায় ফেরার গাড়িও দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর তাতেই ভোগান্তিতে পড়েছে অসংখ্য পর্যটকরা। শনিবার সাকালেই ঘটেছে এই ঘটনাটা। পুলিশ সূত্রা জানা গিয়েছে মরিশদার কাছে এদিন দুপুরে আচমকাই ভেঙে পড়েছে একটি কালভার্ট। আর তাতেই বহন্ধ করে দিতে হয়েছে সমস্ত যানবাহন চলাচল। এতে যেমন সমস্যায় পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা, তেমনই অসুবিধায় পড়েছেন পর্যটকরাও। একে শনিবার, আর সেইসঙ্গে এমন ঘটনা সমস্যা যে বাড়িয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আপাতত কোলাঘাট থেকে দিঘাগামী যানবাহনগুলিকে বাজকূল এবং হেঁড়িয়া হয়ে এগরা দিয়ে কাঁথি এবং দিঘার দিকে পাঠানো হচ্ছে। দীঘাগামি এবং কলকাতায় আসার গাড়িগুলো আপাতত রাস্তার দুপাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। এরফলেই বিপাকে পড়েছেন বহু পর্যটকরা। শনিবার বরাবরই দীঘায় ভিড় একটু বেশি হয়। শর্ট ট্রিপের জন্য বাঙালিদের কাছে যে দীঘা অন্যতম পছন্দের স্পট তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আপাতত কলকাতাগামী গাড়ি গুলোকে রামনগর বাজার এবং কাঁথির থেকে এগরার দিকে পাঠানো হচ্ছে৷