পুজোয় খোশমেজাজে অনুব্রত মণ্ডল, তুললেন মেয়ের সঙ্গে সেলফিও

মহাষষ্ঠীতে গ্রামের প্রাচীন পুজোয় অনুব্রত মণ্ডল, কন্যার সঙ্গে সেলফি তোলায় মাতোয়ারা গ্রামবাসী। মহাষষ্ঠীর দিন নিজের গ্রামের শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাপুজোর তদারকিতে হাজির হলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। প্রতিমার গয়না পরানোর কাজ দেখেন তিনি, আর সেই মুহূর্তে মেয়ের সঙ্গে সেলফি তুলে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন। নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামের এই পুজো প্রায় ১৪০–১৫০ বছরের পুরনো। মণ্ডল বাড়ির এই ঐতিহ্যবাহী পুজো বহু দশক ধরে ‘অনুব্রত মণ্ডলের গ্রামের পুজো’ নামেই পরিচিত। স্থানীয়দের কাছে তিনি এখনও পরিচিত ‘কেষ্ট মোড়ল’ নামে। এদিন পুজোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনুব্রত বলেন, “ছোটবেলায় এখানে এলে রাস্তাঘাট কাদামাটি ছিল। পুজোর দিনে বৃষ্টিতে পড়ে যেতাম, জামাকাপড় ভিজত, আর কাঁদতাম। কিন্তু তখন এক আলাদা আনন্দ ছিল। দাদুরা পাঁচ ভাই ছিলেন, এই পুজো তাঁদের থেকেই শুরু।” গ্রামজুড়ে নানা ধরনের পুজো থাকলেও মণ্ডল বাড়ির আয়োজন আলাদা আকর্ষণ। মহাষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত চলে ভুরিভোজ, জমজমাট আয়োজন, রাজনৈতিক নেতা–মন্ত্রীদের আগমন ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। এবছরও সেই আয়োজন চোখে পড়েছে। গরু পাচার মামলা ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় দুই বছর কারাবন্দি থাকার পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি পান অনুব্রত মণ্ডল। ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে তিনি জেলা কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন। তার পর থেকেই গ্রামের পুজোয় ফিরেছে পুরনো জৌলুস। এবছর তাই গ্রামবাসীদের কাছে অনুব্রতের উপস্থিতি যেন এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাঁকে ঘিরে তাই গ্রামবাসীদের উচ্ছ্বাসও তুঙ্গে।
শান্তিনিকেতনে ২৫ বছরের হীরালিনী দুর্গোৎসব, নতুন চমক কাঠের খোদাই মূর্তি

শান্তিনিকেতনের শিল্প, কৃষ্টি ও আদিবাসী সংস্কৃতির মেলবন্ধনে পঁচিশ বছরে পা দিল হীরালিনী দুর্গোৎসব। থিমের বাজারে প্রতিযোগিতাহীন এই পুজোর মূল লক্ষ্য শিল্প ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে নতুন মাত্রা দেওয়া। এবছরের বড় আকর্ষণ কাঠের খোদাই করা নতুন দুর্গামূর্তি, যা দেখতে ইতিমধ্যেই ভিড় জমিয়েছে পর্যটক ও শিল্পপ্রেমীরা। ২০০১ সালে শিল্পী বাধন দাসের হাত ধরে সূচনা হয় এই পুজোর। তাঁর অকালমৃত্যুর পর শিল্পী আশিস ঘোষ দায়িত্ব নেন এবং ফাইবার কাস্টিং, বাঁশ, লোহা ও কাঠ দিয়ে স্থায়ী মূর্তি তৈরি করে প্রতিবছর নতুন সাজে প্রতিষ্ঠা করার রীতি চালু করেন। এবারের ষষ্ঠ মূর্তি সেই ধারায় নতুন সংযোজন। বিশেষত্ব হল, মা দুর্গার হাতে নেই কোনও অস্ত্র— শান্তির প্রতীক পদ্মফুলেই শোভা পাচ্ছেন তিনি। মহাসপ্তমী থেকে মহানবমী পর্যন্ত চলে আদিবাসী নাচ-গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে আসা শিল্পীরা ধামসা-মাদলের তালে পরিবেশন করছেন লোকগীতি ও নৃত্য। মণ্ডপ প্রাঙ্গণে বসেছে শিল্প প্রদর্শনীও। গত বছর মহালয়ার দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়ালি এই পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন। এবছর ২৫তম বর্ষে কাঠের খোদাই করা মূর্তির মাধ্যমে এই দুর্গোৎসব আরও এক অনন্য অধ্যায় রচনা করল, যা শান্তিনিকেতন ও সোনাঝুরির প্রকৃতির সঙ্গে শিল্পের মেলবন্ধনকে নতুনভাবে তুলে ধরেছে।