তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ভাটপাড়ার আইসিকে নিশানা করলেন অর্জুন সিং

গত ১৩ সেপ্টেম্বর উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে খুন (Murder Case) হন তৃণমূল কর্মী (Trinamool Worker) হীরা কুরেশি। সেই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম জড়ায় সওকত আলির। তিনিও তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী (Trinamool Worker)। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশ সওকতকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ সেই সওকত আলির সঙ্গে ভাটপাড়া (Bhatpara) থানার আইসি (IC)-র জন্মদিনের কেক কাটার ছবি প্রকাশ্যে এনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh) বলেন, “তৃণমূল মরছে, তৃণমূল মারছে। মুসলিম মরছে, মুসলিম মারছে। এ রাজ্যে কোনও আইনের শাসন নেই। পুলিশ তৃণমূল কংগ্রেসের পোষা গুণ্ডা বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। চারিদিকে দুর্নীতি আর দুর্নীতি। সেই দুর্নীতির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে আক্রোশের জেরেই তৃণমূলের হাতেই তৃণমূল খুন হচ্ছে।” গত কয়েক দিন ধরে জগদ্দল সংবাদ শিরোনামে। তৃণমূল কর্মী (Trinamool Worker) হীরা কুরেশি পর আবারও গতকাল ব্যারাকপুর কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে রাহুতা এলাকা থেকে উদ্ধার হয় পচাগলা একটি মৃতদেহ। যদিও ওই ব্যক্তির পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। এই প্রসঙ্গ নিয়ে অর্জুন সিং সরাসরি দায়ী করেছেন ভাটপাড়া থানার আইসি-কে। অর্জুন সিং-এর মতে, আইসি সমাজ বিরোধীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তার ফলেই এলাকায় সন্ত্রাস বাড়ছে। অর্জুন সিংয়ের দাবি, তৃণমূল কর্মী হীরা কুরেশি খুনে মূল অভিযুক্ত সওকত আলিকে ভাটপাড়া থানার পুলিশ এখনও গ্রেফতার করেনি। কারণ ভাটপাড়া থানার আইসি-র সাথে সওকত আলির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সেই ছবিও এদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন অর্জুন সিং। দেখানে ভাটপাড়ার আইসি-র জন্মদিনে উপস্থিত শওকত আলি। অর্জুন সিংয়ের দাবি শওকত আলিই হীরা কুরেশিকে খুন করিয়েছে। এরপর প্রমাণ লোপাটের জন্য হীরা কুরেশির খুনি সাহেবকেও খুন করিয়ে দিয়েছে শওকত আলি। সেই শওকত আলিকে ভাটপাড়া থানার আইসি জন্মদিনে থানার মধ্যেই কেক কাটার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এর থেকেই স্পষ্ট যে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক কত ঘনিষ্ঠ। যদিও তৃণমূল কর্মী হীরা কুরেশির খুন প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি ভাটপাড়ার তৃণমূল সভাপতি দেবজ্যোতি ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে পুলিশি তদন্ত চলছে। তাই এ প্রসঙ্গে তিনি আলটপকা কোনও মন্তব্য করবেন না! সব মিলিয়ে ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনের আগে আবারও যে ব্যারাকপুর উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার অস্বস্তি আরও বাড়ল

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন চন্দ্রনাথ সিনহা (Chandranath Sinha)। তারপর আদালত থেকে অন্তর্বর্তী জামিনে ছাড়া পান তিনি। আজ অর্থাৎ শনিবার ফের নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে আদালতে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। অন্যদিকে মন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে পেতে মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি(ED)। সেকারণেই আজ আদালতে ইডির (ED) তরফ থেকে জোর সওয়াল করা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। এমনকী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গত শুক্রবার ইডি (ED) আধিকারিকরা তাঁর গ্রামের বাড়ি বীরভূমের মুরারইয়ের একটি কিষাণমাণ্ডিতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ইডি (ED) আধিকারিকরা বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করে বলেই সূত্রের খবর। ফলে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে (Chandranath Sinha) যে গ্রেফতার করতে জাল গুটাচ্ছে ইডি (ED) আধিকারিকরা তা একপ্রকার স্পষ্ট। তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষের জবানবন্দি থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার নাম। এরপরই ইডি আধিকারিকরা মন্ত্রীর ব্যাঙ্কিং নথিপত্রের উপর নজরদারি চালাতে শুরু করেন। ইডি আধিকারিকদের মতে প্রায় ১৫৯ জন চাকরিপ্রার্থীর থেকে গড়ে ৮ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিলেন মন্ত্রী, যার মোট অর্থমূল্য ১২.৭২ কোটি টাকার মতো। সেই বিপুল পরিমাণ টাকার হদিস পেতেই মারিয়া ইডি আধিকারিকরা। সেইসব নথিপত্র জোগাড় করতেই গত শুক্রবার বীরভূমের মুরারইয়ে এক কৃষকমাণ্ডিতে হানা দেয় ইডির অফিসাররা। সেখানে দীর্ঘ তল্লাশিতে ইডির হাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এসেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তার ভিত্তিতেই আজ আদালতে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানাতে পারে ইডির তরফের আইনজীবীরা। তবে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বিষয়ে নতুন কী নথিপত্র আজ আদালতে পেশ করেন ইডি আধিকারিকরা সেটাই দেখার।