গ্রামীণ চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন RDAI-র বার্ষিক সম্মেলন বারাসতে

ভারতের সর্ববৃহৎ গ্রামীণ ডাক্তারদের ট্রেড ইউনিয়ন রুরাল ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (RDAI)-র বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল উত্তর ২৪ পরগনার(North 24th PGS) নীল দর্পণ সভাগৃহে। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ডাঃ বাপ্পা রায়। পাশাপাশি ছিলেন সংগঠনের উচ্চপদস্থ নেতৃত্ব ডাঃ কিসুন সিং(DR. Kisun Singh), ডাঃ সমীর ঘোষ, ডাঃ মুজাফফর হোসেন এবং ডাঃ পরশুরাম রায়। সম্মেলনে রোবোটিক সার্জারির জটিল প্রক্রিয়া নিয়ে বিশদে আলোচনা করেন খ্যাতনামা অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ মনোজ কুমার খেমানি(Manoj Kumar Khemani)। উপস্থিত ছিলেন রেডিওলজিস্ট ডাঃ কাজল রায় এবং স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এন বি কাঞীলালও। ডাঃ বাপ্পা রায়ের বক্তব্য, “গ্রামীণ ডাক্তারদের ট্রেড ইউনিয়নটি সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত। গোটা দেশে এটিই একমাত্র সংগঠন, যা পেশাগতভাবে ট্রেড ইউনিয়নের মর্যাদা পেয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন গ্রামে থেকে মানুষের চিকিৎসা করার পরেও তারা ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।” তাঁর অভিযোগ, গ্রামীণ ডাক্তাররা সারা বছর রোদ-বৃষ্টি-ঝড়-ঝঞ্ঝা কিংবা মহামারী, সব উপেক্ষা করে পরিষেবা দিয়ে আসছেন। প্রয়োজন হলে অভিজ্ঞতার জোরে সময়মতো রোগীকে বড় হাসপাতালে পাঠিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছেন। তবু তাঁদের উপর চলছে নানা অবিচার। সম্মেলনে ডাঃ কিসুন সিং এবং ডাঃ সমীর ঘোষ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য এখনই তৈরি হতে হবে সমস্ত গ্রামীণ ডাক্তারদের। অন্য দিকে ডাঃ মুজাফফর হোসেন ঘোষণা করেন, খুব শীঘ্রই কলকাতায় একটি প্রকাশ্য সমাবেশ ডাকা হবে যেখানে পশ্চিমবঙ্গের সব জেলার গ্রামীণ চিকিৎসকরা একত্রিত হবেন। ডাঃ সমীর ঘোষ আরও জানান, RDAI-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সংগঠন নিয়মিত প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করছে। এর মাধ্যমে চিকিৎসকরা আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে যেমন আরও দক্ষ হচ্ছেন, তেমনই চিকিৎসক নৈতিকতা সম্পর্কেও সচেতন করা হচ্ছে তাঁদের। সম্মেলনের শেষে ডাক্তারদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার বার্তাই উঠে আসে জোরালো ভাবে।
কলকাতার সমস্ত দোকানের হোর্ডিং করতে হবে বাংলায়, নির্দেশিকা পুরসভার

বাংলা ও বাঙালি(Bengali) ইস্যু নিয়ে এখন সরগরম বাংলার রাজনীতি। বিজেপি(BJP) শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষা বলার অপরাধে বারবার বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের ছবি দেখা যাচ্ছে। তারই প্রতিবাদে সরব হয়েছে তৃণমূল(TMC) সরকার। এবার পুজোর আগেই আরও বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। কলকাতার দোকানপাট সহ প্রতিটি ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড এবার বাংলাতে করার নির্দেশ দেওয়া হল কলকাতা পুরসভার(Kolkata Corporation) তরফে। সেই নির্দেশ না মানলে লাইসেন্স পর্যন্ত বাতিল করা হতে পারে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলা ও বাঙালি নিয়ে রাজনৈতিক তর্জা তুঙ্গে পৌঁছেছে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে যেভাবে বাঙালি পরিযায়ি শ্রমিকরা হেনস্থা হচ্ছে, তাতে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে সরকার। বাংলা ও বাঙালির অত্যাচারের বিরুদ্ধে আগেই তৃণমূল(TMC) নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। চলছে দিকে দিকে প্রতিবাদ সভাও। এরই মাঝে পুরসভার তরফে এই নতুন নির্দেশিকা রাজনৈতিক তর্জাটা যে আরও বেশ বাড়িয়ে দিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মেয়র ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim) জানিয়েছেন, “যে সকল ব্যবসায়ীরা বাংলায় হোর্ডিং ব্যবহার করার কথা মানবেন না তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। দুর্গা পুজোর সময় ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত থাকবেন এবং সেই সময় চাপ থাকবে। তাই কালী পুজোর পরই আমরা পরিদর্শনে বেড়োব”। দুর্গা পুজোর সময় ব্যবসায়ীদের অতরিক্ত চাপ থাকবে বলেই সেই সময় আলাদা করে কোনওরকম পরিদর্শন করা হবে না। তবে কালী পুজো মিটে গেলেই এরপর পুরসভার(Kolkata Corporation) গঠিত দল পরিদর্শনে বেড়োবে। সেখানেই কোনও দোকান বা ব্যবসায়িং সংস্থায় যদি বাংলায় হোর্ডিং না থাকে তাহলে বড়সড় পদক্ষেপ নেবে তারা। ইতিমধ্যেই পরিদর্শনের জন্য নাকি একটি বিশেষ দলও গঠিত হয়ে গিয়েছে। কালী পুজো মিটলেই শুরু হয়ে যাবে কাজ। একইসঙ্গে এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে বোর্ডের একেবারে শীর্ষে এবং প্রধান স্থানেই বাংলায় নাম ব্যবহার করতে হবে।
রেল মানচিত্রে যুক্ত হল মিজোরাম, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেন নতুন রেলপথের

দিল্লি থেকে মিজোরাম জুড়ে দিল নতুন রেলপথ। শনিবার আইজলে বৈরবি-সৈরাং এই নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আইজলের সিপাই লাম্মুয়ালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও, খারাপ আবহাওয়ার কারণে লেঙ্গপুই বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেন এই রেলপথের। যদিও দুর্গম পাহাড় ও জঙ্গলের কারণে এই রেলপথ তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া মোটেও সহজ হয়নি। এই রেলপথ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের এদিন ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা খরচে তৈরি ৫১.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বৈরবি-সৈরাং রেলপথ, মিজোরামের প্রথম রেলপথ। রেলপথ উদ্বোধনের পাশাপাশি এদিন নরেন্দ্র মোদী আইজল থেকে দিল্লি পর্যন্ত রাজধানী এক্সপ্রেস এবং সৈরাং থেকে গুয়াহাটি ও কলকাতা পর্যন্ত দু’টি দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনেরও উদ্বোধন করেন। এই ভার্চুয়াল সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, “মিজোরাম তো বটেই, গোটা দেশের জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। আজ থেকে ভারতীয় রেলের সঙ্গে যুক্ত হল আইজল। এই রেলপথ তৈরি হওয়ায় মিজোরামের জীবন ও জীবিকায় বড় পরিবর্তন আসবে।খুব সহজেই এখানকার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যেতে পারবে।” পাশাপাশি এই রেলপথ তৈরি নিয়ে বিরোধীদেরও নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর অভিযোগ, ভারতের কিছু রাজনৈতিক দল শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতি করে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যথা নেই। আর সে কারণেই মিজোরামে রেলপথ তৈরির কথা কারও মাথায় আসেনি। প্রায় দু-দশকের উপর চলছে এই রেলপথ তৈরির কাজ। এই গোটা রেলপথের জন্য তৈরি করা হয়েছে ৪৮টি সুড়ঙ্গ। এছাড়া ৫৫টি বড় সেতু এবং ৮৭টি ছোট সেতু রয়েছে এই লাইনের যাত্রাপথে। অবশেষে চলতি মাসের জুনে এই রেলপথে ট্রেন চলাচলের গ্রিন সিগনাল দেয় রেল সুরক্ষা কমিশন। আর শনিবার সেই রেলপথেরই উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।