মুম্বইয়ে ফের বোমাতঙ্ক, হাই-অ্যালাট জারি গোটা শহরজুড়ে

আবারও বোমাতঙ্কের ছক মুম্বইয়ে। শুক্রবার সকালে হোয়াট অ্যাপ মারফত ট্রাফিক পুলিশের কাছে আসে একটি বার্তা, আর তাতেই নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। শহরজুড়ে জারি হল হাই-অ্যালাট। সেই বার্তায় দাবি করা হয়েছে ৩৪ জন আত্মঘাতী জঙ্গি ৪০০ কেজি আরডিএক্স নিয়ে ঢুকে পড়েছে শহরে। তাতেই ঘুম উড়েছে গোয়েন্দা দফতরের। শহর জুড়ে সতর্কতার পাশাপাশি চালানো হচ্ছে চিরুনি তল্লাশিও। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন এবং বিমানবন্দর এলাকাতেও। সব মিলিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন মুম্বইবাসী। এমনিতেই মুম্বই বিস্ফোরণের স্মৃতি এখনও শহরবাসীর মনে উজ্জ্বল। তার উপর শুক্রবার সকালেই ট্রাফিক পুলিশের ফোনে ভেসে আসে এই হুমকি বার্তা। এই বার্তায় লস্কর-ই-জিহাদি নামে এক সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ৩৪টি গাড়িতে করে ৩৪ জন মানববোমা ঢুকে পড়েছে মুম্বই শহরে। তাদের কাছে রয়েছে ৪০০ কেজি আরডিএক্স বিস্ফোরক। মিলাদ-উদ-নবি অর্থাৎ নবি দিবস, যা ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। ওই দিনেই একের পর এক বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হবে গোটা মুম্বই শহর। যা দেখে কেঁপে উঠবে গোটা ভারত। এই বার্তা সামনে আসার পরেই হুলুস্থল পড়ে যায়। রীতিমত নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শহরের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা। সন্দেহভাজন কিছু দেখলেই আটক করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা দফতর সূত্রে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা এই মেসেজ পাঠিয়েছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন গোয়েন্দা দফতরের দুদে অফিসাররা। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, খুব শীঘ্রই এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে পারবেন তাঁরা। আপাতত এই ঘটনা সামনে আসার পর যে আতঙ্ক আর উদ্বেগ বেড়েছে শহরবাসীর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও প্রশাসন এ বিষয়ের অত্যন্ত তৎপর রয়েছে।
‘বেঙ্গল ফাইলস’ বিতর্কে মমতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বিবেক অগ্নিহোত্রী

শুক্রবারই মুক্তি পাচ্ছে বহু বিতর্কিত ছবি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’। গত বেশ কিছুদিন ধরেই বার বার চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত এই ছবিটি। এমনকী ছবির ট্রেলার লঞ্চের পর সেই বিতর্ক যেন আরও বেড়েছে। বাংলা থেকে ছবিতে অভিনয় করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ দাশ ও মিঠুন চক্রবর্তীর মতো অভিনেতারা। এমনকী এই ছবির অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এও দাবি করেছিলেন যে, পুরো চিত্রনাট্য নাকি তাঁকে দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, ছবি নাম নাকি তাঁকে প্রথমে বলা হয়েছিল ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’। পরে ট্রেলার লঞ্চের সময়ই তিনি জানতে পারেন, এই দিল্লি ফাইলস নয়, ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’। এবার নিজের ছবি মুক্তির আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ছবির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। মুম্বইতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিবেক দাবি করেছেন যে, তিনি বাংলার হল মালিকদের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাচ্ছেন যে, তাদের ছবি যাতে দেখানো না হয় তার জন্য নাকি হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাদের। তিনি বলেন, “অনেক হল মালিক এবং বড় বড় মাল্টিপ্লেক্সের কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশ তাদের হুমকি দিয়েছে। যদি তাদের হলে ছবিটি মুক্তি পায় তাহলে তাদের পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে।” পাশাপাশি এই ঘটনার পিছনে রাজ্য সরকারের প্রচ্ছন্ন মদত আছে বলেই এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন বিবেক। তাঁর মতে, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার যা করছে তা অবৈধ এবং অসংবিধানিক। আমরা একটি রিট পিটিশন দায়ের করার পরিকল্পনা করছি, কিন্তু কাল কী হয় তার উপর নির্ভর করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব এবং সেই অনুযায়ী আইনি পদক্ষেপ নেব।” এই ছবির সহ-প্রযোজক পল্লবী যোশী, যিনি সম্পর্কে চলচ্চিত্র পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর স্ত্রী। তিনি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এ অভিনয়ও করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “আমি ইতিমধ্যেই এই ছবির ব্যাপারে ভারতের সম্মানীয় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে কথা বলেছি।” এমনকী এই ছবির বিষয়ে তাঁর হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন বলেই দাবি করেছেন পল্লবী যোশী। এর আগেও দ্য তাশখন্দ ফাইলস’ এবং ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ছবি তৈরি করে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ এই সিরিজে তাঁর তৃতীয় সংযোজন। এমনকী বাংলার লক্ষ লক্ষ সাধারণ দর্শকদের কথা মাথায় রেখে এই ছবিটি বাংলায় ডাব করা হয়েছে, যাতে করে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষদের বুঝতে কোনও অসুবিধা না হয়। আজই কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’। এখন দেখার বহু বিতর্কিত কাহিনী ‘দ্য ক্যালকাটা কিলিং’-এর প্রেক্ষাপটে বানানো এই ছবি দেখে সাধারণ মানুষ কী প্রতিক্রিয়া দেন।
পুজোর আগেই বড় উপহার পেল বনগাঁ শাখার যাত্রীরা, চালু হল AC লোকাল

কিছুদিন আগেই পরীক্ষামূলক ভাবে শিয়ালদহ-রানাঘাট শাখায় এসি(AC) লোকাল চালু করা হয়েছিল পূর্ব রেলের তরফ থেকে। রেলের এই উদ্যোগে অভূতপূর্ব সাড়াও মিলেছিল। এমনকী এই পরিষেবা যে পরবর্তীতে বনগাঁ শাখায়ও চালু করা হবে, তাও জানানো হয়েছিল রেলের তরফ থেকে। অবশেষে আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকাল থেকেই চালু হয়ে গেল এই পরিষেবা। শুক্রবার রানাঘাট থেকে বনগাঁ হয়ে শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা দেয় এসি লোকাল ট্রেন। সকাল ৭টা ৪২-এ বনগাঁ পৌঁছয় এসি লোকাল ট্রেন। পুজোর আগে এটা নিঃসন্দেহেই একটা বড় উপহার বনগাঁ শাখার যাত্রীদের জন্য। যে শিয়ালদহ শাখায় লোকাল ট্রেনগুলোতে এতদিন বাদুড়ঝোলা হয়ে যেত যাত্রীরা, সেখানে দাঁড়িয়ে এসি লোকাল ট্রেন চড়া নেহাতই চাঁদ হাতে পাওয়ার সমান। অবশেষে যাত্রীদের সেই স্বপ্নই পূরণ হল। শুক্রবার সকালে প্রথমবার শিয়ালদহ-ভায়া বারাসত – বনগাঁ-রানাঘাট রুটে ছুটল এসি ট্রেন। স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রীদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা ছিল দেখার মতো। প্রত্যেকের মুখেই ছিল চওড়া হাসি। শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ পর্যন্ত ওই ট্রেনের ভাড়া রাখা হয়েছে ১২০ টাকা। ওই রুটে সর্বনিম্ন ৩৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা ভাড়া ধার্য করা হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই বনগাঁ স্টেশনের কাউন্টারে টিকিট কাটার জন্য পড়েছিল দীর্ঘ লাইন। বনগাঁ থেকেও যে কোনওদিন এসি লোকাল ট্রেন চলবে, এটা ভাবতেই পারছেন না নিত্য রেলযাত্রীরা। শিয়ালদহের সব শাখার চাইতে যেখানে অপেক্ষাকৃত বেশি ভিড় হয় বনগাঁ লোকালে, সেখানে এত আরামে ট্রেনে চড়া নেহাতই স্বপ্ন বলে মনে করছেন যাত্রীরা।